Al-A'raaf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ ۖ قَالَ أَنَا۠ خَيْرٌۭ مِّنْهُ خَلَقْتَنِى مِن نَّارٍۢ وَخَلَقْتَهُۥ مِن طِينٍۢ ﴾
“[And God] said: "What has kept thee from prostrating thyself when I commanded thee?" Answered [Iblis]: "I am better than he: Thou hast created me out of fire, whereas him Thou hast created out of clay."”
কোন কোন আরবী ব্যাকরণবিদের উক্তি অনুসারে (আরবী)-এই স্থানে (আরবী) শব্দটি অতিরিক্ত এবং একে ইনকার বা অস্বীকৃতির প্রতি গুরুত্ব আরোপের জন্যে আনা হয়েছে। যেমন কোন কবি বলেছেন(আরবী) এখানে (আরবী) -শব্দটি (আরবী)-এর জন্যে এসেছে এবং একে (আরবী)-এর উপর গুরুত্ব বুঝাবার জন্যে আনা হয়েছে। এখানে যেন (আরবী) শব্দটি অতিরিক্ত। (আরবী) আল্লাহ পাকের এই উক্তিটি এর পূর্বেই এসেছে। ইবনে জারীর (রঃ)-এর উক্তি এই যে, (আরবী) অন্য একটি (আরবী) -এর অন্তর্ভুক্ত। যার অর্থ হবে“কোন জিনিসটি তোমাকে বাধ্য করেছিল যে, তুমি সিজদা করবে না, অথচ আমার নির্দেশ বিদ্যমান ছিল?” এ উক্তিটি সবল ও উত্তম। আল্লাহ তাআলাই এসব বিষয়ে সবচেয়ে ভাল জানেন। ইবলীস উত্তরে বলেছিল-“আমি আদম (আঃ)-এর চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ। আর যে শ্রেষ্ঠ সে এমন কাউকে সিজদা করতে পারে না যার উপর তার শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। সুতরাং আমার প্রতি আদম (আঃ)-এর সিজদা করার হুকুম হল কেন?” সে দলীল পেশ করেছিল যে, তাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে। আর আগুন হচ্ছে মাটি হতে বেশী মর্যাদা সম্পন্ন যা দ্বারা আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। সে লক্ষ্য করেছে উপাদানের প্রতি, কিন্তু ঐ শরীফ আদম (আঃ)-এর প্রতি লক্ষ্য করেনি যাকে মহান আল্লাহ নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার মধ্যে স্বীয় রূহ ভরে দিয়েছেন! সে একটা বিকৃত অনুমান কায়েম করেছে যা মহান আল্লাহর প্রকাশ্য হুকুমের বিরোধী।মোটকথা, সমস্ত ফেরেস্তা সিজদায় পড়ে গেলেন। ইবলীস সিজদা না করার কারণে ফেরেশতাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লো এবং আল্লাহ তা'আলার অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ে গেল। এই নৈরাশ্য প্রকৃতপক্ষে হচ্ছে তার নিজের ভুলেরই প্রতিফল এবং সে কিয়াস বা অনুমানেও ভুল করেছিল। তার দাবী ছিল এই যে, আগুন মাটি হতে শ্রেষ্ঠ। কিন্তু মাটির শান হচ্ছে ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, নম্রতা এবং কাজে স্থিরতা। তা ছাড়া মাটি হচ্ছে উদ্ভিদ ও লতাপাতা জন্মিবার স্থান। আগুনের শান হচ্ছে পুড়িয়ে দেয়া, ইন্দ্রিয়াবেগ এবং দ্রুততা। ইবলীসের উপাদান তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আর আদম (আঃ)-এর উপাদান রুজু, অপারগতা এবং আনুগত্য স্বীকার করে তার উপকার সাধন করেছিল । হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ফেরেশতাদেরকে নূর দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে, ইবলীসকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অগ্নিশিখা দ্বারা, আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি দ্বারা এবং হ্রদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে যাফরান দ্বারা।” ইবলীস কিয়াস বা অনুমান কায়েমকারী। আর সূর্য ও চন্দ্রের ইবাদতও কিয়াসের উপর ভিত্তি করেই শুরু হয়।