Al-A'raaf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَلِقَآءِ ٱلْءَاخِرَةِ حَبِطَتْ أَعْمَٰلُهُمْ ۚ هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ ﴾
“Hence, all who give the lie to Our messages, and [thus] to the truth of the life to come -in vain shall be all their doings: [for] are they to be rewarded for aught but what they were wont to do?”
১৪৬-১৪৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ পাক বলেনঃ যারা আমার আনুগত্য অস্বীকার করে এবং বিনা কারণে মানুষের কাছে অহংকার প্রকাশ করে, তাদেরকে আমি শরীয়ত ও আহকাম অনুধাবন করা থেকে বঞ্চিত করে দেবো যা আমার শ্রেষ্ঠত্ব ও একত্বের উপর অকাট্য প্রমাণ। অজ্ঞতা ও মূখর্তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “আমি তাদের অন্তর ও চক্ষুকে পরিবর্তন করে দিয়েছি, কেননা তাদেরকে বুঝানো সত্ত্বেও তারা প্রথমবারই ঈমান আনয়ন করেনি। অন্য এক জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “যখন তারা বেঁকে গেল তখন আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরকেও বাঁকা করে দিলেন, যেন যেমন তারা বুঝছে না তেমন কখনই না বুঝে।” কোন কোন পূর্ববর্তী গুরুজন বলেন যে, অহংকারী বিদ্যা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করতেই পারে না। সে তো গৌররেই ফেটে পড়ে। যে ব্যক্তি অল্প কিছুদিনের তরে জ্ঞান ও বিদ্যা শিক্ষার কষ্ট সহ্য করতে পারলো না, তাকে চিরদিনের জন্যে বিদ্যা থেকে বঞ্চিত থাকার লাঞ্ছনা সহ্য করতেই হবে।এ জন্যেই আল্লাহ পাক তাদের থেকে কুরআন বুঝবার মূল পদার্থ ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং স্বীয় নিদর্শনাবলী থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করেছেন। এই আয়াতের ইঙ্গিত এই উম্মতের দিকেও রয়েছে। এটা হচ্ছে ইবনে উয়াইনার চিন্তাধারা। কিন্তু এটা অবশ্যম্ভাবী নয়। ইবনে উয়াইনা তো এটাকে প্রত্যেক উম্মতের ব্যাপারেই প্রযোজ্য বলে থাকেন এবং উম্মতদের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখান না। আল্লাহ তা'আলা সর্বাপেক্ষা অধিক জ্ঞানের অধিকারী।ইরশাদ হচ্ছে- তারা যতই আয়াত শ্রবণ করুক না কেন, ঈমান আনবে না। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “যে লোকদের ব্যাপারে আল্লাহর কথা পূর্ণ হয়ে গেছে। যে, তারা সঠিক পথের উপর আসবে না, তাদের কাছে যতই আয়াত আসুক না কেন তারা কখনও ঈমান আনবে না, যে পর্যন্ত না তারা বেদনাদায়ক শাস্তি অবলোকন করে।” আল্লাহ পাক বলেনঃ “যদি তারা সৎ পথ দেখতেও পায় তবুও সেই পথ গ্রহণ করবে না, কিন্তু তারা যদি ভ্রান্ত ও গুমরাহীর পথ দেখতে পায় তবে ওকেই জীবন পথরূপে গ্রহণ করবে। এর কারণ এই যে, আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তা থেকে সম্পূর্ণরূপে অমনোযোগী থেকেছে।আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “আমার আয়াতসমূহকে যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং পরকালের সাক্ষাৎকে অবিশ্বাস করেছে, আর মৃত্যু পর্যন্ত ঐ ধারণার উপরই প্রতিষ্ঠিত থেকেছে, তাদের নেক আমলের সাথে ঈমান না থাকার কারণে তাদের সমস্ত নেক আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং এ সবগুলো ছিনিয়ে নেয়া হবে।” ইরশাদ হচ্ছে-“তাদের আমল অনুযায়ী আমি তাদেরকে প্রতিফল প্রদান করবো।” অর্থাৎ ঈমানের সাথে ভাল আমল করলে ভাল প্রতিফল দেয়া হবে এবং মন্দ আমল করলে মন্দ প্রতিফলই দেয়া হবে। যেমন কর্ম তেমনই ফল।