Al-A'raaf • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًۭا يُوَٰرِى سَوْءَٰتِكُمْ وَرِيشًۭا ۖ وَلِبَاسُ ٱلتَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌۭ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ ﴾
“O CHILDREN of Adam! Indeed, We have bestowed upon you from on high [the knowledge of making] garments to cover your nakedness, and as a thing of beauty: but the garment of God-consciousness is the best of all. Herein lies a message from God, so that man” might take it to heart.”
আল্লাহ পাক বান্দাদের উপর স্বীয় অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলেনঃ আমি তোমাদেরকে পোশাকে ভূষিত করেছি। পোশাক পরিচ্ছদ তো দেহ ও গুপ্তস্থান আবত করার কাজে লেগে থাকে। আর (আরবী) হচ্ছে ঐ পোশাক যা সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে পরিধান করা হয়। প্রথমটা প্রয়োজনীয়তার অন্তর্ভুক্ত এবং দ্বিতীয়টা পরিপূর্ণতা ও অতিরিক্ততার অন্তর্ভুক্ত। ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, আরবী ভাষায় বাড়ীর আসবাবপত্র ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত পোশাককে (আরবী) বলা হয়ে থাকে। ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর অর্থ নিয়েছেন মালধন ও বিলাসিতা। আবু উমামা (রঃ) যখন কোন নতুন কাপড় কষ্ঠ পর্যন্ত পরিধান করতেন তখন তিনি বলতেন- “আমি ঐ আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি যিনি আমাকে পোশাক পরিয়েছেন, যার দ্বারা আমি জরুরী ভিত্তিতে স্বীয় দেহ আবৃত করছি এবং সাথে সাথে নিজের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করছি।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন নতুন কাপড় পরিধান করে তা গলা পর্যন্ত জড়িয়ে নেয়ার পর বলে- “সেই আল্লাহর সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাকে পোশাক পরালেন, যা দ্বারা আমি আমার অনাবৃত দেহ আবৃত করলাম এবং যা আমার জীবদ্দশায় আমার সৌন্দর্য বৃদ্ধির কারণ।” অতঃপর সে তার খুলে ফেলা কাপড় কোন গরীব দুঃখীকে দান করে দেয়, সে আল্লাহর দায়িত্বে এসে যায়, এটা জীবদ্দশাতেও এবং মৃত্যুর পরেও। হযরত আলী (রাঃ) একটি ছেলের কাছ থেকে তিন দিরহামের বিনিময়ে একটি জামা খরিদ করেছিলেন এবং হাতের কজি হতে পায়ের গিঁঠ পর্যন্ত ওটা পরিধান করে বলেছিলেনঃ “ সেই আল্লাহর সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাকে (আরবী) সৌন্দর্য মণ্ডিত করলেন এবং তা দ্বারা আমি আমার দেহের গুপ্তাংশকে আবৃত করলাম।” তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ “এটা আপনি নিজের পক্ষ থেকেই বললেন, না রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মুখ থেকে শুনেছেন?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মুখে আমি এটা শুনেছি।” ইরশাদ হচ্ছে- তাকওয়ার পোশাকই হচ্ছে সর্বোত্তম পোশাক। কেউ কেউ (আরবী) শব্দটিকে (আরবী) দিয়ে পড়েছেন। আবার কেউ কেউ একে (আরবী) হিসেবে (আরবী) দিয়ে পড়েছেন। (আরবী) হচ্ছে এর (আরবী) বা বিধেয়। মুফাসসিরদের মধ্যে (আরবী) শব্দের অর্থ নিয়েও মতানৈক্য রয়েছে। ইকরামা (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা ঐ পোশাক বুঝানো হয়েছে যা কিয়ামতের দিন মুত্তাকীদেরকে পরানো হবে। ইবনে জুরাইজ (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে ‘ঈমান'। উরওরা (রঃ) (আরবী) দ্বারা ‘আল্লাহর ভয়’ অর্থ নিয়েছেন। এসবের অর্থ প্রায় কাছাকাছিই। এটা নিম্নের হাদীসের সহায়কঃহযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মিম্বরের উপর উঠলেন। সেই সময় তিনি এমন একটি জামা পরিহিত ছিলেন যার বুতামগুলো খোলা ছিল। তিনি কুকুরগুলোকে মেরে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছিলেন এবং কবুতরবাজি থেকে বিরত রাখছিলেন। তিনি বলছিলেনঃ হে লোক সকল! গোপনে গোপনে কাজ করা থেকে বেঁচে থাক। কেননা রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “আল্লাহর শপথ! কেউ যদি লুকিয়ে চুকিয়ে কোন কাজ করে তবে আল্লাহ সেই কাজকে প্রকাশ করে দেবেন। সেই কাজ যদি ভাল হয় তবে তো সুনাম হবে, আর মন্দ হলে দুর্ণাম হবে।” অতঃপর তিনি উপরে বর্ণিত আয়াতটিই পাঠ করেন।