Al-Anfaal • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّٰمٍۢ لِّلْعَبِيدِ ﴾
“in return for what your own hands have wrought - for, never does God do the least wrong to His creatures!"”
৫০-৫১ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে মুহাম্মাদ (সঃ)! ফেরেশতারা কত জঘন্যভাবে কাফিরদের রূহ কবয করে থাকে তা যদি তুমি দেখতে! তারা ঐ সময় কাফিরদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে মারতে থাকে এবং বলে-“নিজেদের দুষ্কার্যের প্রতিফল হিসেবে শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর।” এর এক ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এটাও বদরের দিনেরই ঘটনা। সামনের দিক থেকেই সেইদিন ঐ কাফিরদের চেহারায় তরবারীর আঘাত লাগছিল এবং যখন তারা পলায়ন করছিল তখন তাদের পিঠের উপর তলোয়ার পড়ছিল।হাসান বসরী (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল! আমি আবু জেহেলের পিঠে কাঁটাসমূহের চিহ্ন দেখেছি।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “এটা ফেরেশতাদের মারের চিহ্ন।” আসল কথা এই যে, এই আয়াতটি বদরের সাথে নির্দিষ্ট নয়। শব্দগুলো সাধারণ। প্রত্যেক কাফিরেরই অবস্থা এরূপ হয়ে থাকে। সূরায়ে কিতালের মধ্যেও এ ঘটনা বর্ণিত হয়েছে এবং সূরায়ে আনআমের .... (আরবী) (৬:৯৩)-এই আয়াতের মধ্যেও এর বর্ণনা তাফসীরসহ বর্ণিত হয়েছে। যেহেতু তারা ছিল নাফরমান লোক, সেহেতু তাদের মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের দ্বারা তাদেরকে খুবই কষ্ট দেয়া হয়। তাদের দুঙ্কার্যের কারণে তাদের রূহসমূহ তাদের দেহের মধ্যে লুকিয়ে যায়। সুতরাং ফেরেশতাগণ ওগুলো জোরপূর্বক বের করেন এবং বলেনঃ “তোমার জন্যে আল্লাহর গজব রয়েছে। যেমন বারা’ (রাঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, মৃত্যুর যাতনার সময় ঐ অশুভ অবস্থায় মৃত্যুর ফেরেশতা কাফিরের কাছে এসে বলেনঃ “হে কলুষিত আত্মা! গরম বাতাস, গরম পানি এবং গরম ছায়ার দিকে চল।” তখন ঐ আত্মা দেহের মধ্যে লুকাতে থাকে। অবশেষে ফেরেশতা কোন জীবিত মানুষের গায়ের চামড়া খুলে নেয়ার মত ঐ আত্মাকে জোরপূর্বক টেনে বের করেন এবং সাথে সাথে শিরা উপশিরাও বেরিয়ে আসে। ফেরেশতা তাকে বলেনঃ “এখন দহনের স্বাদ গ্রহণ কর। এটা তোমার পার্থিব দুষ্ককার্যাবলীর শাস্তি। আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর মোটেই অত্যাচার করেন না। তিনি তো ন্যায়পরায়ণ হাকিম। তিনি কল্যাণময়, সর্বোচ্চ, অমুখাপেক্ষী, পবিত্র, মহামর্যাদা সম্পন্ন এবং প্রশংসিত। এজন্যেই সহীহ মুসলিমে আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “হে আমার বান্দাগণ! আমি নিজের উপর অত্যাচার হারাম করে দিয়েছি এবং তোমাদের উপরও তা হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা পরস্পর একে অপরের উপর অত্যাচার করো না। হে আমার বান্দারা! আমি তো শুধু তোমাদের কত আমলগুলোকে পরিবেষ্টন করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি কল্যাণ প্রাপ্ত হবে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি অন্য কিছু প্রাপ্ত হবে সে যেন নিজেকেই ভৎসনা করে।”