Al-Anfaal • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَآءُ بَعْضٍ ۚ إِلَّا تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌۭ فِى ٱلْأَرْضِ وَفَسَادٌۭ كَبِيرٌۭ ﴾
“With all this, [remember that] those who are bent on denying the truth are allies of one another; and unless you act likewise [among yourselves], oppression will reign on earth, and great corruption.”
উপরে আল্লাহ তা'আলা বর্ণনা করলেন যে, মুমিনরা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু । আর এখানে তিনি বর্ণনা করছেন যে, কাফিররা একে অপরের বন্ধু এবং তিনি মুসলমান ও কাফিরের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলেন। যেমন মুসতাদরিকে হাকিমে উসামা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ ‘দু’টি ভিন্ন মাযহাবের লোক একে অপরের উত্তরাধিকারী হতে পারে না। না পারে মুসলিম কাফিরের উত্তরাধিকারী হতে এবং না পারে কাফির মুসলিমের ওয়ারিস হতে।” অতঃপর এ আয়াতটিই পাঠ করেন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “মুসলিম কাফিরের এবং কাফির মুসলিমের ওয়ারিস হতে পারে না।” মুসনদি ও সুনান গ্রন্থে রয়েছে যে, দুটি ভিন্ন মাযহাবের লোক একে অপরের ওয়ারিস হয় না। (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) ও আসহাবুস সুনান তাখরীজ করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান সহীহ বলেছেন) আবু জাফর ইবনে জারীর (রঃ) যুহরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, একজন নবদীক্ষিত মুসলমানের নিকট অঙ্গীকার গ্রহণ করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “তুমি নামায কায়েম করবে, যাকাত দিবে, বায়তুল্লাহ শরীফে হজ্ব করবে, রমযানুল মুবারাকের রোযা রাখবে এবং যেখানে শিরকের আগুন জ্বলে উঠবে সেখানে তুমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে।" এ হাদীসটি মুরসাল। বিস্তারিত বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি এমন মুসলমান হতে দায়িত্বমুক্ত যে মুশরিকদের মধ্যে অবস্থান করে। দু'ধারে প্রজ্বলিত আগুন কি সে দেখতে পায় না?” (এ হাদীসটিকে ইবনে জারীর (রঃ) মুরসাল ও মুত্তাসিলরূপে তাখরীজ করেছেন) সুনানে আবি দাউদে সামুরা ইবনে জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি মুশরিকদের সাথে মেলামেশা করে এবং তাদের মধ্যে অবস্থান করে সে তারই মত।” হাফিয আবু বকর ইবনে মিরদুওয়াই (রঃ) আবূ হাতিম আল মুযানী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “যখন এমন ব্যক্তি তোমাদের কাছে আগমন করে যার দ্বীন ও চরিত্রে তোমরা সন্তুষ্ট, তোমরা তার বিয়ে দিয়ে দাও। যদি তোমরা এ কাজ না কর তবে ভূ-পৃষ্ঠে ফিত্না ও মহাবিপর্যয় দেখা দেবে।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “তার মধ্যে যদি কিছু থাকে?” তিনি পুনরায় বললেনঃ “যদি তোমাদের কাছে এমন ব্যক্তির বাগদান আসে যার দ্বীন ও চরিত্রে তোমরা সন্তুষ্ট, তবে তার বিয়ে দিয়ে দাও।” এ কথা তিনি তিনবার বললেন। আয়াতের এই শব্দগুলোর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা যদি মুশরিকদের থেকে দূরে না থাকো এবং মুমিনদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন না কর তবে ভীষণ ফিত্না সৃষ্টি হয়ে যাবে। কাফিরদের সাথে মুসলমানদের এই মেলামেশা খারাপ পরিণতি টেনে আনবে এবং ভূ-পৃষ্ঠে মহা বিপর্যয় দেখা দেবে।