At-Tawba • BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ يُحْىِۦ وَيُمِيتُ ۚ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِىٍّۢ وَلَا نَصِيرٍۢ ﴾
“Verily, God's alone is the dominion over the heavens and the earth; He [alone] grants life and deals death; and there is none besides God who could protect you or bring you succour.”
১১৫-১১৬ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় মহান সত্তা ও ন্যায়নীতিপূর্ণ হিকমত সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি যেই পর্যন্ত না কোন কওমের নিকট রাসূল পাঠিয়ে ফিতনা খতম করেন সেই পর্যন্ত তাদেরকে পথভ্রষ্টতার জন্যে ছেড়ে দেন। যেমন তিনি অন্য এক জায়গায় বলেনঃ “সামূদ সম্প্রদায়কে আমি পথ প্রদর্শন করেছিলাম।” মুজাহিদ (রঃ) আল্লাহ তাআলার (আরবী) -এই উক্তি সম্পর্কে বলেন যে, মৃত মুশরিকদের জন্যে মুমিনদের ক্ষমা প্রার্থনা করা। ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে মহিমান্বিত আল্লাহর বর্ণনাটি হচ্ছে বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। আর তাদের তাঁর আনুগত্য এবং অবাধ্যতার কাজটি হচ্ছে সাধারণ । অর্থাৎ হে মুমিনগণ! তোমাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা রয়েছে। ইচ্ছানুযায়ী হয় তোমরা আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার কর, না হয় তার নাফরমানী কর। তোমরা এটা কর বা ছেড়ে দাও। কিন্তু ক্ষমা প্রার্থনা পরিত্যাগ করার বর্ণনাটি সাধারণ নয়, বরং বিশিষ্ট।ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, আল্লাহ পাক বলেন, যদি তোমরা তোমাদের মধ্যস্থিত মৃত মুশরিকদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা কর তবে কেন তিনি। তোমাদের উপর পথভ্রষ্টতার ফায়সালা দিবেন না? কেননা তিনি আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর উপর ঈমান আনয়নের তাওফীক দিয়েছেন। আর তোমাদেরকে নিষিদ্ধ বিষয় হতে দূরে রেখেছেন এবং তোমরা তা থেকে বিরত থেকেছে। কিন্তু এর পূর্বে নয় যে, তিনি। ঐ নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর নিকৃষ্টতা বর্ণনা করে দিয়েছেন এবং তোমরা ঐগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে। ঐ অবস্থায় কি করে তিনি তোমাদের উপর পথভ্রষ্টতার হুকুম লাগাতে পারেন? কেননা, আনুগত্য ও অবাধ্যতা তো আদেশ ও নিষেধের সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু যে ঈমানই আনেনি এবং বিরতও থাকেনি, তাকে অনুগত বলা যাবে না এবং অবাধ্যও বলা চলবে না।আল্লাহ তা'আলার উক্তি-“আল্লাহরই রাজত্ব রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে এবং তিনিই জীবন দান করেন ও তিনিই মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন।” এটা দ্বারা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে কাফির ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রতি উৎসাহ ও উদ্দীপনা প্রদান করা হয়েছে এবং এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, তাদের আল্লাহ তা'আলার সাহায্যের উপর ভরসা করা উচিত এবং তার শত্রুদেরকে ভয় করা মোটেই উচিত নয়। কেননা তারা আল্লাহকে ছেড়ে দিয়েছে। সুতরাং তাদের না কোন বন্ধু আছে, না আছে কোন সাহায্যকারী ।হাকীম ইবনে হিযাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে বসেছিলাম। এমন সময় তিনি বললেনঃ “আমি যা শুনতে পাচ্ছি তা তোমরা শুনতে পাচ্ছ কি?” তাঁরা (সাহাবীগণ) বললেনঃ “আমরা তো কিছুই শুনতে পাচ্ছিনে।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “আমি আকাশের চড় চড় শব্দ শুনতে পাচ্ছি। আর আকাশ চড় চড় কেন করবে না? তাতে আধহাত পরিমাণও জায়গা এমন নেই যেখানে কোন না কোন ফেরেশতা সিজদা বা দাঁড়ানো অবস্থায় বিদ্যমান না রয়েছেন।” (এই হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)কা’বুল আহবার (রঃ) বলেন যে, যমীনের মধ্যে সূঁচের ছিদ্র পরিমাণও এমন জায়গা নেই যেখানে কোন ফেরেশতা আল্লাহর তাসবীহ্ পাঠে রত না আছেন। আর আকাশের ফেরেশতাদের সংখ্যা মাটির অণু-পরমাণুর সংখ্যা অপেক্ষাও বেশী। আরশ বহনকারী ফেরেশতাদের পায়ের গিট হতে পদনালি পর্যন্ত জায়গার ব্যবধান একশ বছরের দূরত্ব।