An-Nahl • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ ٱلَّذِينَ تَتَوَفَّىٰهُمُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ طَيِّبِينَ ۙ يَقُولُونَ سَلَٰمٌ عَلَيْكُمُ ٱدْخُلُوا۟ ٱلْجَنَّةَ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴾
“those whom the angels gather in death while they are in a state of inner purity, greeting them thus: "Peace be upon you! Enter paradise by virtue of what you were doing [in life]!"”
ফিরিশতাগণ [১] যাদের মৃত্যু ঘটায় উত্তমভাবে। ফিরিশতাগণ বলবেন, তোমাদের উপর সালাম! তোমরা যা করতে তার ফলে জান্নাতে প্রবেশ কর [২]। [১] এ আয়াত এবং এর পরবর্তী যে আয়াতে মৃত্যুর পর মুত্তাকী ও ফেরেশতাদের আলাপ আলোচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলো কুরআন মজীদের এমন ধরনের আয়াতের অন্যতম যেগুলো সুস্পষ্ট ভাবে কবরের আযাব ও সওয়াবের প্রমাণ পেশ করে। সূরা আল-মুমিনের ৪৫-৪৬ আয়াতে এসবের চাইতে বেশী সুস্পষ্ট ভাষায় বর্যখের আযাবের কথা বলা হয়েছে। সেখানে আল্লাহ ফিরআউন ও ফিরআউনের পরিবারবর্গ সম্পর্কে বলেছেন, একটি কঠিন আযাব তাদেরকে ঘিরে রেখেছে। সকালসাঁঝে তাদেরকে আগুনের সামনে নিয়ে আসা হয়। তারপর যখন কিয়ামতের সময় এসে যাবে তখন হুকুম দেয়া হবে- ফিরআউনের পরিবারবর্গকে কঠিনতম আযাবের মধ্যে ফেলে দাও।" এখানে এটা বিশ্বাস করা জরুরী যে, কবরের শাস্তি শুধু রূহের উপর হবে না। বরং রূহ এবং দেহ উভয়টির উপরই হবে। কিয়ামতের মাঠে এবং এর পরবর্তী জীবন হবে সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের যার সাথে দুনিয়ার জীবনের কোন তুলনাই চলে না। সেখানে সবকিছুর গতি প্রকৃতি ভিন্ন হবে। [২] এখানে আল্লাহ্ তা'আলা মৃত্যুর সময় ঈমানদারগণের যে অবস্থা হয় এবং ফিরিশতাগণ তাদেরকে কিভাবে সাদর সম্ভাষণ জানায় তা বর্ণনা করছেন। অনুরূপ আয়াত কুরআনের অন্যান্য স্থানেও এসেছে। [দেখুনঃ সূরা ফুসসিলাতঃ ৩০-৩২] তবে একথা জানা আবশ্যক যে, সৎকাজ করা জান্নাতে যাওয়ার কারণ। কিন্তু শুধুমাত্র সৎকাজই মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে না, যতক্ষন তার সাথে আল্লাহর রহমত না থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে কেউ তার কাজের বিনিময়ে নাজাত পাবে না। লোকেরা বললঃ আপনিও পাবেন না? তিনি বললেনঃ না, আমিও না। তবে আল্লাহ যদি তার রহমত দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখেন। সুতরাং সঠিক এবং কর্তব্যনিষ্ঠভাবে কাজ করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করো, সকাল বিকাল এবং রাতের শেষাংশে আল্লাহর ইবাদত করো। এসব কাজে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করো। মধ্যম পন্থাই তোমাদেরকে লক্ষ্যে পৌঁছাবে। [বুখারীঃ ৬৪৬৩]