An-Nahl • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ ۞ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا عَبْدًۭا مَّمْلُوكًۭا لَّا يَقْدِرُ عَلَىٰ شَىْءٍۢ وَمَن رَّزَقْنَٰهُ مِنَّا رِزْقًا حَسَنًۭا فَهُوَ يُنفِقُ مِنْهُ سِرًّۭا وَجَهْرًا ۖ هَلْ يَسْتَوُۥنَ ۚ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ﴾
“God propounds [to you] the parable of [two men-] a man enslaved, unable to do anything of his own accord, and a [free] man upon whom We have bestowed goodly sustenance [as a gift] from Ourselves, so that he can spend thereof [at will, both] secretly and openly. Can these [two] be deemed equal? All praise is due to God [alone]: but most of them do not understand it.”
আল্লাহ্ উপমা দিচ্ছেন [১] অন্যের অধিকারভুক্ত এক দাসের, যে কোন কিছুর উপর শক্তি রাখে না এবং এমন এক ব্যক্তির যাকে আমরা আমার পক্ষ থেকে উত্তম রিযক দান করেছি এবং সে তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; তারা কি একে অন্যের সমান [২]? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই প্রাপ্য [৩]; বরং তাদের অধিকাংশই জানে না [৪]। [১] অর্থাৎ যদি উপমার সাহায্যে কথা বুঝতে হয় তাহলে আল্লাহ সঠিক উপমা দিয়ে তোমাদের সত্য বুঝিয়ে দেন। তোমরা যেসব উপমা দিচ্ছে সেগুলো ভুল। তাই তোমরা সেগুলো থেকে ভুল ফলাফল গ্রহণ করে থাকো। তোমরা সঠিক উপমা দিতে জান না। আল্লাহ নিজেই তোমাদেরকে উপমা শিখিয়ে দিচ্ছেন। ফাতহুল কাদীর] [২] ইবনে আব্বাস বলেন, এ উদাহরণটি আল্লাহ্ তা'আলা কাফের ও মুমিনের জন্য প্রদান করেছেন। ইবনে জরীর তাবারীও তা পছন্দ করেছেন। যে দাস কিছুরই ক্ষমতা রাখে না সে হচ্ছে কাফের। আর যাকে উত্তম রিফিক দেয়া হয়েছে আর সে তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে সে হচ্ছে মুমিন। মুজাহিদ বলেন, এ উপমাটি মূর্তিপ্রতিমা ও আল্লাহ্ তা'আলার জন্য পেশ করা হয়েছে। এ দু'টি কি সমান? যখন তাদের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট, বোকা ছাড়া সবাই তা বুঝতে সক্ষম, তখন বলা হল যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। [ইবন কাসীর] কিন্তু তারা অধিকাংশই জানে না। যদি তারা জানত তবে যার জন্য ইবাদাত করা হক ও যথাযথ তাঁরই ইবাদাত করত, আর যিনি তাদেরকে এত এত নেয়ামত দ্বারা ধন্য করেছেন তাঁর নেয়ামতের স্বীকৃতি তারা দিত। [ফাতহুল কাদীর] [৩] আলহামদুলিল্লাহ বা সমস্ত প্রশংসা তাঁরই প্রাপ্য। এটা বলার কারণ সম্পর্কে কয়েকটি মত রয়েছে। এক. কারণ, তিনিই তো সব নেয়ামত প্রদান করেছেন, তার বান্দাদের কেউই তা দেয় নি। সুতরাং যারা মৌলিকভাবে অথবা মাধ্যম হয়ে কোনভাবেই কোন নেয়ামত দেয়নি তারা কিভাবে প্রশংসা পেতে পারে? দুই. সমস্ত প্রশংসা তাঁর জন্যে এ কারণে যে, তিনিই তাঁর বন্ধুদেরকে তাওহীদের মত নেয়ামত প্রদান করেছেন। তিন. অথবা এখানে নির্দেশ দিয়ে বলা হচ্ছে যে, আপনি বলুন, আল-হামদুলিল্লাহ। তখন নির্দেশটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং যারাই এ নেয়ামত উপলব্ধি করতে পারবে তাদের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চার, অথবা যে উদাহরণ পেশ করা হলো তা যে কত জোরালো, তার মোকাবিলায় যে তারা কোন কিছুই দাড় করাতে পারবে না, দলীল-প্রমাণের সে শক্তি অনুভব করে আল-হামদুলিল্লাহ বলা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] [৪] এখানে তাদেরকে জানে না’ বলার কারণ হয়ত এই যে, তারা তাদের উপর যা কর্তব্য তা না জানার কারণে সত্যিকারেই জাহেল বা মূর্খে পরিণত হয়েছে। অথবা তারা হক জেনেও ইচ্ছাকৃত বিরোধিতা করার জন্য তা মেনে নিচ্ছে না। এতে করে তারা যাদের জ্ঞান নেই, তাদের কাতারে নেমে গেছে। [ফাতহুল কাদীর]