An-Nahl • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ وَٱللَّهُ جَعَلَ لَكُم مِّنۢ بُيُوتِكُمْ سَكَنًۭا وَجَعَلَ لَكُم مِّن جُلُودِ ٱلْأَنْعَٰمِ بُيُوتًۭا تَسْتَخِفُّونَهَا يَوْمَ ظَعْنِكُمْ وَيَوْمَ إِقَامَتِكُمْ ۙ وَمِنْ أَصْوَافِهَا وَأَوْبَارِهَا وَأَشْعَارِهَآ أَثَٰثًۭا وَمَتَٰعًا إِلَىٰ حِينٍۢ ﴾
“And God has given you [the ability to build] your houses as places of rest, and has endowed you with [the skill to make] dwellings out of the skins of animals - easy for you to handle when you travel and when you camp -and [to make] furnishings and goods for temporary use of their [rough] wool and their soft, furry wool and their hair.”
আর আল্লাহ্ তোমাদের ঘরসমূহকে করেছেন তোমাদের জন্য আবাসস্থল [১] এবং তিনি তোমাদের জন্য পশুর চামড়ার ঘর তাঁবুর ব্যবস্থা করেছেন, তোমরা সেটাকে সহজ মনে করে থাক তোমাদের ভ্রমণকালে এবং অবস্থানকালে [২]। আর (ব্যবস্থা করেছেন) তাদের পশম, লোম ও চুল থেকে কিছু কালের গৃহ-সামগ্রী ও ব্যবহার-উপকরণ [৩]। [১] এখানেও আল্লাহ তা'আলা তার নেয়ামতের কিছু বর্ণনা দিচ্ছেন। [ফাতহুল কাদীর] তিনি তার বান্দাদের উপর যে নেয়ামত দান করেছেন, তন্মধ্যে একটি হচ্ছে, তিনি তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করেছেন, যেখানে তারা বসবাস করে, আশ্রয় গ্রহণ করে, নিজেদেরকে অপরের কাছ থেকে গোপন রাখতে সমর্থ হয়, যত প্রকারের উপকার লাভ করা যায় এর মাধ্যমেই তাই তারা গ্রহণ করে। এ ঘর ছাড়াও তিনি তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুর মধ্য থেকে চামড়ার ঘরেরও ব্যবস্থা করেছেন। (অর্থাৎ পশুচর্মের তাঁবু। আরবে এর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।) এগুলোকে তোমরা সফর অবস্থায় বহন করা তোমাদের জন্য হাল্কা বোধ করে থাক। এগুলোকে তোমরা তোমাদের সফরে ও স্থায়ী অবস্থানস্থলে ব্যবহার করতে পার। [ইবন কাসীর] তাছাড়া তিনি তোমাদের জন্য ভেড়ার পশম, উটের লোম ও ছাগলের চুলেরও ব্যবস্থা করেছেন। যা তোমাদের সম্পদ ও উপভোগ্য বিষয় হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে। ঘরের আসবাব ও কাপড় হয়েছে। ব্যবসায়ী সম্পদ হয়েছে। সুনির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত তোমরা এগুলো ভোগ করতে পার [ইবন কাসীর] অর্থাৎ তোমাদের প্রয়োজন পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত, অথবা পুরনো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অথবা আমৃত্যু বা কিয়ামত পর্যন্ত তোমরা এগুলো ভোগ করতে পার। [ফাতহুল কাদীর] [২] অর্থাৎ যখন কোথাও রওয়ানা হয়ে যেতে চাও তখন তাকে সহজে গুটিয়ে ভাঁজ করে নিয়ে বহন করতে পারে। আবার যখন কোথাও অবস্থান করতে চাও তখন অতি সহজেই ভাঁজ খুলে খাটিয়ে ঘর বানিয়ে ফেলতে পারো। [ফাতহুল কাদীর] [৩] এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হলো যে, জীব-জন্তুর চামড়া, লোম ও পশম ব্যবহার করা মানুষের জন্য হালাল। এতে জন্তুটি যবেহকৃত হওয়া অথবা মৃত হওয়ারও কোন শর্ত নেই। এমনিভাবে যে জন্তুর পশম বা চামড়া আহরণ করা হবে, সেটির গোশত হালাল কি হারাম সেটা বিচার করারও কোন শর্ত নেই। সব রকম জন্তুর চামড়াই লবণ দিয়ে শুকানোর পর ব্যবহার করা হালাল। লোম ও পশমের উপর জন্তুর মৃত্যুর কোন প্রভাবই পড়ে না। তাই সেটি যথারীতি শুকিয়ে ব্যবহারোপযোগী করে নিলেই তা পাক হয়ে যায় এবং সেটি ব্যবহার করা হালাল ও জায়েয হয়ে যায়। তবে শূকরের চামড়া ও যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও লোম-পশম অপবিত্র ও ব্যবহারের অযোগ্য। [কুরতুবী]