slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris slot qris bokep indo xhamster/a> jalalive/a>
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير الآية 31 من سورة سُورَةُ النُّورِ

An-Noor • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA

﴿ وَقُل لِّلْمُؤْمِنَٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَٰرِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ ءَابَآئِهِنَّ أَوْ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَآئِهِنَّ أَوْ أَبْنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ أَخَوَٰتِهِنَّ أَوْ نِسَآئِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّٰبِعِينَ غَيْرِ أُو۟لِى ٱلْإِرْبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفْلِ ٱلَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا۟ عَلَىٰ عَوْرَٰتِ ٱلنِّسَآءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴾

“And tell the believing women to lower their gaze and to be mindful of their chastity, and not to display their charms [in public] beyond what may [decently] be apparent thereof; hence, let them draw their head-coverings over their bosoms. And let them not display [more of] their charms to any but their husbands, or their fathers, or their husbands’ fathers, or their sons, or their husbands’ Sons, or their brothers, or their brothers’ sons, or their sisters’ sons, or their womenfolk, or those whom they rightfully possess, or such male attendants as are beyond all sexual desire, or children that are as yet unaware of women’s nakedness; and let them not swing their legs [in walking] so as to draw attention to their hidden charms And [always], O you believers - all of you - turn unto God in repentance, so that you might attain to a happy state!”

📝 التفسير:

আর মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে [১] এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে [২]; আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য [৩] প্রদর্শন না করে তবে যা সাধারণত প্রকাশ হয়ে থাকে [৪]। আর তারা তাদের গলা ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে [৫]। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীরা [৬], তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা- রহিত পুরুষ [৭] এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক [৮] ছাড়া কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা না করে [৯]। হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহ্‌র দিকে ফিরে আস [১০], যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ [১] এ দীর্ঘ আয়াতের সূচনাভাগে সেই বিধানই বর্ণিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী আয়াতে পুরুষদের জন্য ব্যক্ত হয়েছে। অর্থাৎ তারা যেন দৃষ্টি নত রাখে তথা দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। পুরুষদের বিধানে নারীরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল, কিন্তু জোর দেয়ার জন্য তাদের কথা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। [কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর] অনেক আলেমের মতেঃ নারীদের জন্য মাহরাম নয়, এমন পুরুষের প্রতি দেখা সর্বাবস্থায় হারাম; কামভাব সহকারে বদ নিয়তে দেখুক অথবা এ ছাড়াই দেখুক। [ইবন কাসীর] তার প্রমাণ উম্মে সালমা বর্ণিত হাদীস যাতে বলা হয়েছেঃ ‘একদিন উম্মে-সালমা ও মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা উভয়েই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। হঠাৎ অন্ধ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম তথায় আগমন করলেন। এই ঘটনার সময়-কাল ছিল পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়কে পর্দা করতে আদেশ করলেন। উম্মে-সালমা বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রাসূল, সে তো অন্ধ, সে আমাদেরকে দেখতে পাবে না এবং আমাদেরকে চেনেও না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তো অন্ধ নও, তোমরা তাকে দেখছ। [তিরমিযীঃ ২৭৭৮, আবু দাউদঃ ৪১১২] তবে হাদীসটির সনদ দূর্বল। অপর কয়েকজন ফেকাহবিদ বলেনঃ কামভাব ব্যতীত বেগানা পুরুষকে দেখা নারীর জন্য দোষনীয় নয়। তাদের প্রমাণ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার হাদীস, যাতে বলা হয়েছেঃ একবার ঈদের দিন মসজিদে নববীর আঙ্গিনায় কিছু সংখ্যক হাবশী যুবক সামরিক কুচকাওয়াজ করছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই কুচকাওয়াজ নিরিক্ষণ করতে থাকেন এবং তার আড়ালে দাঁড়িয়ে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাও এই কুচকাওয়াজ উপভোগ করতে থাকেন এবং নিজে অতিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত দেখে যান। [বুখারীঃ ৪৫৫, মুসলিমঃ ৭৯২] [২] অর্থাৎ তারা যেন অবৈধ যৌন উপভোগ থেকে দূরে থাকে এবং নিজের সতর অন্যের সামনে উন্মুক্ত করাও পরিহার করে। [তাবারী, ইবন কাসীর] হাদীসে এসেছে, “মহিলা হলো আওরত তথা গোপণীয় বিষয়” [তিরমিযীঃ ১১৭৩, সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ৫৫৯৯, সহীহ ইবনে খুযাইমাহঃ ১৬৮৫] পুরুষদের জন্য মেয়েদের সতর তার সারা শরীর। স্বামী ছাড়া অন্য কোন-পুরুষ এমন কি বাপ ও ভাইয়ের সামনেও তা খোলা উচিত নয়। মেয়েদের এমন পাতলা বা চোস্ত পোশাক পরা উচিত নয় যার মধ্য দিয়ে শরীর দেখা যায় বা শরীরের গঠন কাঠামো ভেতর থেকে ফুটে উঠতে থাকে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বৰ্ণনা করেন, তার বোন আসমা বিনতে আবু বকর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে আসেন। তখন তিনি পাতলা কাপড় পরে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংগে সংগেই মুখ ফিরিয়ে নেন এবং বলেনঃ ‘‘হে আসমা! কোন মেয়ে যখন বালেগ হয়ে যায় তখন তার এটা ও ওটা ছাড়া শরীরের কোন অংশ দেখা যাওয়া জায়েয নয়।” বর্ণনাকারী বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাতের কব্জি ও চেহারার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। [আবু দাউদঃ ৪১০৪] [৩] আয়াতের অর্থ এই যে, মুহরিম ব্যতিত সাজ-সজ্জার স্থানসমূহ প্রকাশ না করা মহিলাদের উপর ওয়াজিব। [তাবারী, বাগভী] [৪] আয়াতে পর্দার বিধানের কয়েকটি ব্যতিক্রম আলোচনা করা হচ্ছে। প্রথম ব্যতিক্রম হচ্ছে مَاظَهَرَمِنْهَا অর্থাৎ নারীর কোন সাজ-সজ্জার অঙ্গ পুরুষের সামনে প্রকাশ করা বৈধ নয়, অবশ্য সেসব অঙ্গ ব্যতীত, যেগুলো আপনা-আপনি প্ৰকাশ হয়ে পড়ে অর্থাৎ কাজকর্ম ও চলাফেরার সময় সেসব অঙ্গ স্বভাবতঃ খুলেই যায়। এগুলো ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো প্ৰকাশ করার মধ্যে কোন গোনাহ নেই। এ সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমের তাফসীর দু’ধরনের। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ مَاظَهَرَمِنْهَا বাক্যে উপরের কাপড়; যেমন বোরকা, লম্বা চাদর ইত্যাদিকে ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো সাজ-সজ্জার পোশাককে আবৃত রাখার জন্য পরিধান করা হয়। আয়াতের অর্থ এই যে, প্রয়োজনবশতঃ বাইরে যাওয়ার সময় যেসব উপরের কাপড় আবৃত করা সম্ভবপর নয়, সেগুলো ব্যতীত সাজ-সজ্জার কোন বস্তু প্ৰকাশ করা জায়েয নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাও বলেনঃ এখানে প্রকাশ্য সৌন্দর্য বলতে চেহারা, চোখের সুরমা, হাতের মেহেদী বা রঙ এবং আংটি। সুতরাং এগুলো সে তার ঘরে যে সমস্ত মানুষ তার কাছে প্ৰবেশ করার অনুমতি আছে, তাদের সামনে প্ৰকাশ করবে। কোন কোন মুফাসসির এ আয়াতের তাফসীরে বলেনঃ নারীর আসল বিধান এই যে, সে তার সাজ-সজ্জার কোন কিছুই প্ৰকাশ করবে না। আয়াতের উদ্দেশ্যও তাই। তবে চলাফেরা ও কাজকর্মে স্বভাবতঃ যেগুলো খুলে যায়, সেগুলো অপারগতার কারণে গোনাহ থেকে মুক্ত। নারী কোন প্রয়োজনে বাইরে বের হলে বোরকা, চাদর ইত্যাদি প্রকাশ হয়ে পড়া সুনির্দিষ্ট। লেন-দেনের প্রয়োজনে কোন সময় মুখমণ্ডল ও হাতের তালুও প্রকাশ হয়ে পড়ে। এটাও ক্ষমার্হ- গোনাহ নয়। পক্ষান্তরে কোন কোন মুফাসসির اِلَّامَاظَهَرَمِنْهَا এর অর্থ নিয়েছেনঃ “মানুষ স্বাভাবিকভাবে যা প্ৰকাশ করে দেয়” এবং তারপর তারা এর মধ্যে শামিল করে দিয়েছেন মুখ ও হাতকে তাদের সমস্ত সাজসজ্জাসহ। [দেখুন-তাবারী, ইবন কাসীর, ফাতহুল কাদীর, সহীহ আল-মাসবুর] [৫] অর্থাৎ তারা যেন বক্ষদেশে ওড়না ফেলে রাখে। خُمُر শব্দটি خمار এর বহুবচন। অর্থ ঐ কাপড়, যা নারী মাথায় ব্যবহার করে এবং তা দ্বারা গলা ও বক্ষ আবৃত হয়ে যায়। خيوب শব্দটি خيب এর বহুবচন- এর অর্থ জামার কলার। [কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর] জাহেলী যুগে মহিলারা মাথায় এক ধরনের আঁটসাঁট বাঁধন দিতো। মাথার পেছনে চুলের খোঁপার সাথে এর গিরো বাঁধা থাকতো। সামনের দিকে বুকের একটি অংশ খোলা থাকতো। সেখানে গলা ও বুকের উপরের দিকের অংশটি পরিষ্কার দেখা যেতো। বুকে জামা ছাড়া আর কিছুই থাকতো না। পেছনের দিকে দুটো তিনটে খোঁপা দেখা যেতো। তাই মুসলিম নারীদেরকে আদেশ করা হয়েছে তারা যেন এরূপ না করে; বরং ওড়নার উভয় প্রান্ত পরস্পর উল্টিয়ে রাখে, এতে করে যেন সকল অঙ্গ আবৃত হয়ে পড়ে। [ইবন কাসীর] আয়াত নাযিল হবার পর মুসলিম মহিলাদের মধ্যে ওড়নার প্রচলন করা হয়। মু’মিন মহিলারা কুরআনের এ হুকুমটি শোনার সাথে সাথে যেভাবে একে কার্যকর করে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তার প্রশংসা করে বলেনঃ সূরা নূর নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ থেকে وَلْيَضْرِبْنَ جِخُمُرِهِنَّ عَلىٰ جُيُوْبِهِنَّ বাক্যাংশ শোনার পর তারা নিজের কোমরে বাঁধা কাপড় খুলে নিয়ে আবার অনেকে চাদর তুলে নিয়ে সংগে সংগেই ওড়না বানিয়ে ফেলল এবং তা দিয়ে শরীর ঢেকে ফেললো। [বুখারীঃ ৪৭৫৯] অন্য বর্ণনায় এসেছে, উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, যখন وَلْيَضْرِبْنَ جِخُمُرِهِنَّ عَلىٰ جُيُوْبِهِنَّ এ আয়াত নাযিল হলো, তখন তাদের মাথা এমনভাবে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেলল মনে হয় যেন তাদের মাথার উপর কাক রয়েছে। [আবু দাউদঃ ৪১০১] এ সম্পর্কিত অন্য একটি হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা আরো বিস্তারিত বর্ণনা করে বলেনঃ আল্লাহ্‌ প্রথম যুগের মুহাজির মহিলাদের উপর রহমত নাযিল করুন তারা وَلْيَضْرِبْنَ جِخُمُرِهِنَّ عَلىٰ جُيُوْبِهِنَّ নাযিল হওয়ার পরে পাতলা কাপড় পরিত্যাগ করে নিজেদের মোটা কাপড় বাছাই করে তা দিয়ে ওড়না তৈরী করে। [আবু দাউদঃ ৪১০২] [৬] পর্দার বিধান থেকে পরবর্তী ব্যতিক্রম হলো আল্লাহ্‌র বাণীঃ اَوْنِسَآىِٕهِنَّ অর্থাৎ নিজেদের স্ত্রীলোক; এর উদ্দেশ্য মুসলিম স্ত্রীলোক। তাদের সামনেও এমনসব অঙ্গ খোলা যায়, যেগুলো নিজ পিতা ও পুত্রের সামনে খোলা যায়। [ইবন কাসীর] তবে আয়াতে ‘তাদের নিজেদের স্ত্রীলোক’ বলা থেকে জানা গেল যে, কাফের মুশরিক স্ত্রীলোকরা পর্দার হুকুমের ব্যতিক্রম নয়। তাদের সাথে পর্দা করা প্রয়োজন। তারা বেগানা পুরুষদের বিধানের অন্তর্ভুক্ত। এই আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেনঃ এ থেকে জানা গেল যে, কাফের নারীদের সামনে অঙ্গ প্রকাশ করা কোন মুসলিম নারীর জন্য জায়েয নয়। কিন্তু সহীহ হাদীসসমূহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের সামনে কাফের নারীদের যাতায়াত প্রমাণিত আছে। তাই এ প্রশ্নে মুজতাহিদ ইমামগণের মধ্যে মতভেদ বিদ্যমান। কারো মতে কাফের নারী বেগানা পুরুষদের মত। কেউ কেউ এ ব্যাপারে মুসলিম ও কাফের উভয় প্রকার নারীর একই বিধান রেখেছেন; অর্থাৎ তাদের কাছে পর্দা করতে হবে না । [দেখুন-বাগভী, ফাতহুল কাদীর] (৭) একাদশ প্রকার اَوِالتّٰبِعِيْنَ عَيْرِاوُلىِ الْاِرْبَةِمِنَ الرِّجِالِ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ এখানে এমন নির্বোধ ও ইন্দ্রিয়বিকল ধরনের লোকদের বুঝানো হয়েছে, যাদের নারী জাতির প্রতি কোন আগ্রহ ও ঔৎসুক্যই নেই। ইবনে জরীর তাবারী একই বিষয়বস্তুই আবু আব্দুল্লাহ, ইবনে জুবায়র, ইবনে আতিয়্যা প্রমুখ থেকে বর্ণনা করেছেন। কাজেই আয়াতে এমনসব পুরুষকে বুঝানো হয়েছে, যাদের মধ্যে নারীদের প্রতি কোন আগ্রহ ও কামভাব নেই এবং নারীদের রূপ-গুণের প্রতিও তাদের কোন ঔৎসুক্য নেই যে, অপরের কাছে গিয়ে বর্ণনা করবে। তবে নপুংসক ধরনের লোক যারা নারীদের বিশেষ গুণাবলীর সাথে সম্পর্ক রাখে, তাদের কাছেও পর্দা করা ওয়াজিব। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণিত হাদীসে আছে, জনৈক খুনসা বা হিজড়া ব্যাক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের কাছে আসা-যাওয়া করত। রাসূলের স্ত্রীগণ তাকে আয়াতে বর্ণিত عَيْرِاوُلىِ الْاِرْبَةِمِنَ الرِّجِالِ এর অন্তর্ভুক্ত মনে করে তার সামনে আগমন করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে গৃহে প্রবেশ করতে নিষেধ করে দিলেন। [দেখুন, মুসলিমঃ ২১৮০] এ কারণেই কোন কোন আলেম বলেনঃ পুরুষ যদিও পুরুষত্বহীন, লিঙ্গকর্তিত অথবা খুব বেশী বৃদ্ধ হয়, তবুও সে عَيْرِاوُلىِ الْاِرْبَةِ শব্দের অন্তর্ভুক্ত নয়। তার কাছে পর্দা করা ওয়াজিব। এখানে عَيْرِاوُلىِ الْاِرْبَةِ শব্দের সাথে اَوِالتّٰبِعِيْنَ শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, নির্বোধ ইন্দ্রিয়বিকল লোক, যারা অনাহূত গৃহে ঢুকে পড়ে, তারা ব্যতিক্রমভুক্ত। [দেখুন-তাবারী, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর] (৮) দ্বাদশ প্রকার اَوِلطِّفْلِ এখানে এমন অপ্রাপ্তবয়স্ক বালককে বুঝানো হয়েছে, যে এখনো সাবালকত্বের নিকটবর্তীও হয়নি এবং নারীদের বিশেষ আকর্ষণ, কমনীয়তা ও গতিবিধি সম্পর্কে সম্পূর্ণ বেখবর। যে বালক এসব অবস্থা সম্পর্কে সচেতন, সে ‘মোরাহিক' অর্থাৎ সাবালকত্বের নিকটবর্তী। তার কাছে পর্দা করা ওয়াজিব। [ইবন কাসীর] (৯) অর্থাৎ নারীরা যেন সজোরে পদক্ষেপ না করে, যার দরুন অলঙ্কারাদির আওয়াজ ভেসে উঠে এবং তাদের বিশেষ সাজ-সজ্জা পুরুষদের কাছে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে। [ফাতহুল কাদীর]। এখানে মূল উদ্দেশ্য নিজেদের অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গাদি ও সেগুলোর সৌন্দর্য প্রকাশ হয়ে পড়ার যাবতীয় বস্তুই নিষেধ করা। অনুরূপভাবে দৃষ্টি ছাড়া অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলোকে উত্তেজিতকারী জিনিসগুলোও আল্লাহ্‌ তা‘আলা মহিলাদেরকে যে উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যের প্রকাশনী করতে নিষেধ করেছেন তার বিরোধী। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে খোশবু লাগিয়ে বাইরে বের না হবার হুকুম দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “আল্লাহ্‌র দাসীদেরকে আল্লাহ্‌র মসজিদে আসতে নিষেধ করো না। কিন্তু তারা যেন খোশবু লাগিয়ে না আসে।” [আবু দাউদঃ ৫৬৫, মুসনাদে আহমাদঃ ২/৪৩৮] অন্য একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “যে মেয়ে মসজিদে খোশবু মেখে আসে তার সালাত ততক্ষণ কবুল হয় না যতক্ষণ না সে বাড়ি ফিরে ফরয গোসলের মত গোসল করে।” [আবু দাউদঃ ৪১৭৪, ইবনে মাজাহঃ ৪০০২, মুসনাদে আহমাদঃ ২/২৪৬] আবু মূসা আশআরী বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে নারী আন্তর মেখে পথ দিয়ে যায়, যাতে লোকেরা তার সুবাসে বিমোহিত হয়, সে এমন ও এমন। তিনি তার জন্য খুবই কঠিন শব্দ ব্যবহার করেছেন।” [আবু দাউদঃ ৪১৭৩, মুসনাদে আহমাদঃ ৪/৪০০]। তদ্রুপ নারীরা প্রয়োজন ছাড়া নিজেদের আওয়াজ পুরুষদেরকে শোনাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাও অপছন্দ করতেন। প্রয়োজনে কথা বলার অনুমতি কুরআনেই দেয়া হয়েছে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্ৰ স্ত্রীগণ নিজেরাই লোকদেরকে দ্বীনী মাসায়েল বর্ণনা করতেন। কিন্তু যেখানে এর কোন প্রয়োজন নেই এবং কোন দ্বীনী বা নৈতিক লাভও নেই সেখানে মহিলারা নিজেদের আওয়াজ ভিন্‌ পুরুষদেরকে শুনাবে এটা পছন্দ করা হয়নি। কাজেই সালাতে যদি ইমাম ভুলে যান তাহলে পুরুষদেরকে সুবহানাল্লাহ বলার হুকুম দেয়া হয়েছে কিন্তু মেয়েদেরকে এক হাতের উপর অন্য হাত মেরে ইমামকে সতর্ক করে দেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। [দেখুন, বুখারীঃ ১২০৩, মুসলিমঃ ৪২১, ৪২২]। (১০) অর্থাৎ মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহ্‌র কাছে তাওবাহ কর। [কুরতুবী] হাদীসে এসেছে, তাওবাহ হলো, অনুতপ্ত হওয়া, অনুশোচনা করা, [ইবনে মাজাহঃ ৪২৫২] এ বিধানগুলো নাযিল হবার পর কুরআনের মর্মবাণী অনুযায়ী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামী সমাজে অন্য যেসব সংস্কারমূলক বিধানের প্রচলন করেন তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হচ্ছেঃ একঃ মাহরাম আত্মীয়ের অনুপস্থিতিতে অন্য লোকেরা (আত্মীয় হলেও) কোন মেয়ের সাথে একাকী সাক্ষাত করতে ও তার কাছে নির্জনে বসতে পারে না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যেসব নারীর স্বামী বাইরে গেছে তাদের কাছে যেয়ো না। কারণ শয়তান তোমাদের মধ্য থেকে প্রত্যেকের রক্ত ধারায় আবর্তন করছে।” [তিরমিযীঃ ১১৭২] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ ও আখেরাতের দিনের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন কখনো কোন মেয়ের সাথে নির্জনে সাক্ষাৎ না করে যতক্ষণ না ঐ মেয়ের কোন মাহরাম তার সাথে থাকে। কারণ সে সময় তৃতীয়জন থাকে শয়তান।” [মুসনাদে আহমাদঃ ১/১৮] দুইঃ কোন পুরুষের হাত কোন গায়ের মাহরাম মেয়ের গায়ে লাগুক এটাও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৈধ করেননি। তাই তিনি পুরুষদের হাতে হাত রেখে বাই‘আত করতেন। কিন্তু মেয়েদের বাই‘আত নেবার সময় কখনো এ পদ্ধতি অবলম্বন করতেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাত কখনো কোন ভিন মেয়ের শরীরে লাগেনি। তিনি মেয়েদের থেকে শুধুমাত্ৰ মৌখিক শপথ নিতেন এবং শপথ নেয়া শেষ হলে বলতেন, যাও তোমাদের বাই‘আত হয়ে গেছে।” [বুখারীঃ ৫২৮৮, মুসলিমঃ ১৮৬৬] তিনঃ মেয়েদের মাহরাম ছাড়া একাকী অথবা গায়ের মাহরামের সাথে সফর করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোরভাবে নিষেধ করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “কোন পুরুষ যেন মহিলার সাথে একান্তে সাক্ষাৎ না করে যতক্ষণ তার সাথে তার মাহরাম না থাকে এবং কোন মহিলা যেন সফর না করে যতক্ষণ না তার কোন মাহরাম তার সাথে থাকে।” [বুখারীঃ ১৮৬২, ৩০০৬, ৩০৬১, ৫২৩৩, মুসলিমঃ ১৩৪১]