Al-Furqaan • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ ۞ وَهُوَ ٱلَّذِى مَرَجَ ٱلْبَحْرَيْنِ هَٰذَا عَذْبٌۭ فُرَاتٌۭ وَهَٰذَا مِلْحٌ أُجَاجٌۭ وَجَعَلَ بَيْنَهُمَا بَرْزَخًۭا وَحِجْرًۭا مَّحْجُورًۭا ﴾
“AND HE it is who has given freedom of movement to the two great bodies of water – the one sweet and thirst-allaying, and the other salty and bitter - and yet has wrought between them a barrier and a forbidding ban.”
আর তিনিই দুই সাগরকে সমান্তরালে প্রবাহিত করেছেন, একটি মিষ্ট, সুপেয় এবং অন্যটি লোনা, খর; আর তিনি উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান [১]। [১] مرج শব্দের অর্থ স্বাধীন ছেড়ে দেয়া। عذب মিঠা পানিকে বলা হয়। فُرَاتٌ -এর অর্থ সুপেয়, مِلْحٌ -এর অর্থ লোনা এবং أجاجٌ এর অর্থ তিক্ত বিস্বাদ। আল্লাহ্ তা‘আলা স্বীয় কৃপা ও অপার রহস্য দ্বারা পৃথিবীতে দুই প্রকার সাগর সৃষ্টি করেছেন। (এক) সর্ববৃহৎ যাকে মহাসাগর বলা হয়। গোটা পৃথিবী এর দ্বারা পরিবেষ্টিত। এর প্রায় এক-চতুর্থাংশ এ জলধির বাইরে উন্মুক্ত, যাতে সারা বিশ্বের মানব সমাজ বসবাস করে। এই সর্ববৃহৎ সাগরের পানি রহস্যবশতঃ তীব্ৰ লোনা ও বিস্বাদ। পৃথিবীর স্থলভাগে আকাশ থেকে বর্ষিত পানির ঝর্ণা, নদনদী, নহর ও বড় বড় সাগর আছে। এগুলোর পানি মিষ্ট ও সুপেয়। মানুষের নিজেদের তৃষ্ণা নিবারণে এবং দৈনন্দিন ব্যবহারে এরূপ পানিরই প্রয়োজন, যা আল্লাহ্ তা‘আলা স্থলভাগে বিভিন্ন প্রকারে সরবরাহ করেছেন। সমুদ্রে স্থলভাগের চাইতে অনেক বেশী সামুদ্রিক জন্তুজানোয়ার বসবাস করে। এগুলো সেখানেই মরে, সেখানেই পচে এবং সেখানেই মাটি হয়ে যায়। সমগ্ৰ পৃথিবীর পানি ও আবর্জনা অবশেষে সমুদ্রে পতিত হয়। যদি সমুদ্রের পানি মিষ্ট হত, তবে মিষ্ট পানি দ্রুত পচনশীল বিধায় দু’চার দিনেই পচে যেত। এই পানি পচে গেলে তার দুর্গন্ধে ভূপৃষ্ঠের অধিবাসীদের জীবনধারন দুরূহ হয়ে যেত। তাই আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে এত তীব্ৰ লোনা, তিক্ত ও তেজস্ক্রিয় করে দিয়েছেন যেন সারা বিশ্বের আবর্জনা তাতে পতিত হয়ে বিলীন হয়ে যায় এবং সেখানে বসবাসকারী যে সকল সৃষ্টজীব সেখানে মরে, তাও পচতে পারে। [দেখুন-আদওয়াউল-বায়ান]