An-Naml • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ فَتَبَسَّمَ ضَاحِكًۭا مِّن قَوْلِهَا وَقَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِىٓ أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ ٱلَّتِىٓ أَنْعَمْتَ عَلَىَّ وَعَلَىٰ وَٰلِدَىَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَٰلِحًۭا تَرْضَىٰهُ وَأَدْخِلْنِى بِرَحْمَتِكَ فِى عِبَادِكَ ٱلصَّٰلِحِينَ ﴾
“Thereupon [Solomon] smiled joyously at her words, and said: “O my Sustainer! Inspire me so that I may forever be grateful for those blessings of Thine with which Thou hast graced me and my parents, and that I may do what is right [in a manner] that will please Thee; and include me, by Thy grace, among Thy righteous servants!””
অতঃপর সুলাইমান তার এ কথাতে মৃদু হাসলেন এবং বললেন, ‘হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন [১] যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি এমন সৎকাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন [২]। আর আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শামিল করুন [৩]।’ [১] এখানে উদ্দেশ্য এই যে, আমাকে সামর্থ্য দিন। আমাকে ইলহাম করুন। [মুয়াসসার] যাতে আমি নেয়ামতের কৃতজ্ঞতাকে সর্বদা সাথে রাখি, তা থেকে কোন সময় পৃথক না হই। মোটকথা এই যে, সৰ্বক্ষণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। কারণ, আপনি আমাকে পাখি ও জীবজন্তুর কথা বুঝতে শিখিয়েছেন। আর আমার পিতার উপর নেয়ামত দিয়েছেন যে, তিনি আপনার কাছে আত্মসমৰ্পন করেছেন এবং ঈমান এনেছেন। [ইবন কাসীর] [২] এখানে সৎকাজ করার সাথে একটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে যে, ‘যা আপনি পছন্দ করেন’ অর্থাৎ যাতে আপনার সস্তুষ্টি বিধান হয়। এর দ্বারা মূলতঃ কবুল হওয়াই উদ্দেশ্য। তখন আয়াতের অর্থ হবে, হে আল্লাহ্! আমাকে এমন সৎকর্মের তাওফীক দিন, যা আপনার কাছে মকবুল হয়। নবী-রাসূলগণ তাদের সৎকর্মসমূহ মাকবুল হওয়ার জন্যেও দো‘আ করতেন; যেমন ইবরাহীম ও ইসমাঈল আলাইহিমাসসালাম কাবা গৃহ নির্মাণের সময় দো‘আ করেছিলেনঃ رَنَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا “হে আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে তা কবুল করুন”। [সূরা আল-বাকারাহঃ ১২৭] এর দ্বারা বুঝা গেল যে, কোন সৎকর্ম সম্পাদন করেই নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়া ঠিক নয়; বরং তা কবুল হওয়ার জন্যে আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে কাকুতি-মিনতির মাধ্যমে দো‘আ করা উচিত। [৩] সুলাইমান আলাইহিসসালাম এসব বাক্যে জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আল্লাহ্র রহমত ও দয়ার দরখাস্ত করেছেন। এর দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, জান্নাতে যাওয়া আল্লাহ্র রহমতের উপর নির্ভরশীল। শুধুমাত্ৰ সৎকাজের বিনিময়ে জান্নাত পাওয়া যাবে না। হাদীসেও এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “কোন ব্যাক্তি তার কর্মের উপর ভরসা করে জান্নাতে যাবে না। সাহাবায়ে কেরাম বললেনঃ আপনিও কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আমিও না, তবে যদি আমাকে আল্লাহ্র অনুগ্রহ পরিবেষ্টন করে” [বুখারীঃ ৫৩৪৯, ৬৮০৮, ৬০৯৮, মুসলিমঃ ২৮১৬]