An-Naml • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ مَن جَآءَ بِٱلْحَسَنَةِ فَلَهُۥ خَيْرٌۭ مِّنْهَا وَهُم مِّن فَزَعٍۢ يَوْمَئِذٍ ءَامِنُونَ ﴾
“Whoever shall come [before Him] with a good deed will gain [further] good there from; and they will be secure from the terror of that Day.”
যে কেউ সৎকাজ নিয়ে আসবে, সে তা থেকে উৎকৃষ্ট প্রতিফল [১] পাবে এবং সেদিন তারা শংকা থেকে নিরাপদ থাকবে [২]। [১] এটা হাশর-নাশর ও হিসাব-নিকাশের পরবর্তী পরিণতির বর্ণনা, حسنة বলে কোন কোন মুফাসসিরের মতে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বুঝানো হয়েছে। [তাবারী; কুরতুবী] কারও কারও নিকটঃ ইখলাস ও তাওহীদ [বাগভী] কেউ কেউ সাধারণ ‘ইবাদত ও আনুগত্য তথা ফরয কাজসমূহ অৰ্থ নিয়েছেন। তবে বস্তুত এখানে সব ধরনের ভাল কাজ বোঝানো হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ যে ব্যাক্তি সৎকর্ম করবে, সে তার কর্মের কল্যাণ লাভ করবে বা কর্মের চাইতে উৎকৃষ্টতর প্রতিদান পাবে। বলাবাহুল্য, সৎকর্ম তখন সৎকর্ম হয়, যখন তার মধ্যে প্রথম শর্ত ঈমান বিদ্যমান থাকে। ‘উৎকৃষ্টতর প্রতিদান’ বলে এক নেকীর প্রতিদান দশ গুণ থেকে নিয়ে সাত‘শ গুণ পর্যন্ত পাওয়া যাবে। [আদওয়াউল বায়ান] [২] فزع বলে প্রত্যেক বড় বিপদ ও পেরেশানী বোঝানো হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, দুনিয়াতে প্রত্যেক আল্লাহ্ভীরু পরহেযগারও পরিণামের ভয় থেকে মুক্ত থাকতে পারে না এবং থাকা উচিতও নয়। যেমন, কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে, اِنَّ عَذَابَ رَبِّهِمْ غَيْرُمَاْمُوْنٍ অর্থাৎ অবশ্যই আপনার রবের আযাব থেকে কেউ নিশ্চিন্ত ও ভাবনামুক্ত হয়ে বসে থাকতে পারে না। এ কারণে নবী-রাসূলগণ, সাহাবায়ে কেরাম ও আল্লাহ্র সৎ বান্দাগণ সদাসর্বদা ভীত ও কম্পিত থাকতেন। কিন্তু সে দিন হিসাব-নিকাশ সমাপ্ত হলে যারা সৎকর্ম নিয়ে আগমনকারী হবে, তারা সর্বপ্রকার ভয় ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত ও প্রশান্ত হবে। যেমন অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “মহাভীতি তাদেরকে চিন্তান্বিত করবে না” [সূরা আল-আম্বিয়াঃ ১০৩] [ইবন কাসীর] তাছাড়া পূর্বে ৮৭ নং আয়াতে যাদেরকে ভয়ভীতি থেকে ব্যতিক্রম থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে তারা যদি এ আয়াতে বর্ণিত সৎকর্মশীল লোকগণ হয়ে থাকেন তবে এ আয়াতকে পূর্বোক্ত আয়াতের তাফসীর হিসেবে ধরা যাবে। [ফাতহুল কাদীর]