Aal-i-Imraan • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهُۥ ۖ قَالَ رَبِّ هَبْ لِى مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةًۭ طَيِّبَةً ۖ إِنَّكَ سَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ ﴾
“In that self-same place, Zachariah prayed unto his Sustainer, saying: "O my Sustainer! Bestow upon me [too], out of Thy grace, the gift of goodly offspring; for Thou, indeed, hearest all prayer."”
সেখানেই যাকারিয়্যা তার রবের নিকট প্রার্থনা করে বললেন, ‘হে আমার রব! আমাকে আপনি আপনার নিকট থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী [১]’ [১] যাকারিয়্যা ‘আলাইহিস সালাম তখনো পর্যন্ত নিঃসন্তান ছিলেন। সময়ও ছিল বার্ধক্যের- যে বয়সে স্বাভাবিকভাবে সন্তান হয় না। তবে আল্লাহ্র শক্তি-সামর্থের প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস ছিল যে, অলৌকিকভাবে এহেন বার্ধক্যের মধ্যেও তিনি সন্তান দিতে পারেন। তবে অসময়ে ও অস্থানে দান করার আল্লাহ্র মহিমা ইতিপূর্বে তিনি কখনো প্রত্যক্ষ করেননি। কিন্তু এসময় যখন তিনি দেখতে পেলেন যে, আল্লাহ্ তা'আলা ফলের মওসুম ছাড়াই মার্ইয়ামকে ফল দান করেছেন, তখনই তার মনের সুপ্ত আকাঙ্খা জেগে উঠল এবং তার মনে হলো যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ মওসুম ছাড়াই যদি ফল দিতে পারেন, তবে বৃদ্ধ দম্পতিকে হয়ত সন্তানও দেবেন। বললেনঃ 'হে আমার রব! আমাকে আপনি আপনার নিকট থেকে সৎ সন্তান দান করুন', এতে বুঝা যায় যে, সন্তান হওয়ার জন্য দো'আ করা রাসূলগণের ও নেককারদের সুন্নাত। অপর এক আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ “আপনার আগে তো আমি অনেক রাসূল পাঠিয়েছিলাম এবং তাঁদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম’ অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যেরূপ স্ত্রী ও সন্তান দান করা হয়েছে, তদ্রুপ এই নেয়ামত পূর্ববর্তী রাসূলগণকেও দেয়া হয়েছিল। এখন কেউ যদি কোন পন্থায় সন্তান জন্মগ্রহণের পথে বাধা সৃষ্টি করে, তবে সে শুধু স্বভাবধর্মের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহের পতাকা উত্তোলন করে না; বরং রাসূলদের একটি সার্বজনীন ও সর্বসম্মত সুন্নাহ থেকেও বঞ্চিত হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাহ ও সন্তানের প্রশ্নটিকে অত্যাধিক গুরুত্ব দান করেছেন। তাই যে ব্যক্তি সামর্থ থাকা সত্বেও বিবাহ কিংবা সন্তান গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করে, তাকে তিনি স্বীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অনুমতি দেননি। তিনি বলেনঃ ‘বিবাহ আমার সুন্নাহ। যে ব্যক্তি এ সুন্নাহ থেকে বিমুখ হয়, সে আমার দলভুক্ত নয়। তোমরা বিবাহ কর। কেননা, তোমাদের আধিক্যের কারণে আমি অন্যান্য উম্মতের উপর গর্ব করব’। [ইবনে মাজাহঃ ১৮৪৬]