An-Nisaa • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ ٱلَّذِينَ يَبْخَلُونَ وَيَأْمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلْبُخْلِ وَيَكْتُمُونَ مَآ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضْلِهِۦ ۗ وَأَعْتَدْنَا لِلْكَٰفِرِينَ عَذَابًۭا مُّهِينًۭا ﴾
“[nor] those who are niggardly, and bid others to be niggardly, and conceal whatever God has bestowed upon them out of His bounty; and so We have readied shameful suffering for all who thus deny the truth.”
যারা কৃপণতা করে [১] এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তা গোপন করে। আর আমরা কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি [২]। [১] এ বাক্যে বলা হয়েছে যে, যে সমস্ত লোক দাম্ভিক তারা ওয়াজিব হকের ক্ষেত্রেও কার্পণ্য করে। নিজের দায়িত্ব উপলব্ধি করে না এবং অন্যান্য লোককেও নিজের অশোভন কথা এবং কার্যকলাপের মাধ্যমে এ ধরনের মন্দ অভ্যাস অবলম্বন করার প্রতি উৎসাহিত করে। আয়াতে যে (بخل) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, প্রচলিত অর্থে এর প্রয়োগ হয়ে থাকে সাধারণতঃ অর্থ সম্পদ সংক্রান্ত অধিকার বা হক আদায়ে শৈথিল্য প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে। কিন্তু আয়াতের শানে-নুযুল পর্যালোচনা করতে গেলে বোঝা যায়, এখানে (بخل) কার্পণ্য শব্দটি সাধারণ ও ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যাতে অর্থ-সম্পদ, জ্ঞান ও অধিকার সংক্রান্ত সমস্ত কার্পণ্যই অন্তর্ভুক্ত। দান-খয়রাতের ফযীলত এবং কার্পণ্যে ক্ষতি সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘প্রতিদিন ভোর বেলায় দু’জন ফিরিশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! সৎপথে ব্যয়কারীদেরকে শুভ প্রতিদান দান করুন। আর অন্যজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধন-সম্পদের দিক দিয়ে ধ্বংসের সম্মুখীন করে দিন’। [বুখারীঃ ১৪৪২] অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা কৃপণতা থেকে বেঁচে থাক, কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে এ কৃপণতাই ধ্বংস করেছে। তাদেরকে তাদের কার্পণ্য নির্দেশ দিয়েছে কৃপণতা করার, ফলে তারা কৃপণতা করেছে, অনুরূপভাবে তাদেরকে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে ফলে তারা তা ছিন্ন করেছে এবং তাদেরকে অশ্লীলতার নির্দেশ দিয়েছে ফলে তারা অশ্লীল কাজ করেছে। [আবু দাউদঃ ১৬৯৮] [২] অর্থাৎ তারা কাফির। আর আল্লাহ তা'আলা কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। তাদের শাস্তি অবধারিত। মুজাহিদ বলেন, এ আয়াত এবং এর পরবর্তী আয়াতগুলোয় ইয়াহুদীদের উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। কারণ তারা এ কাজগুলো করত। [তাবারী] এরপর যাদের মধ্যেই উপর্যুক্ত খারাপ গুণাগুণ পাওয়া যাবে, তারাও আল্লাহর কাছে মন্দ বলে বিবেচিত হবে।