Al-A'raaf • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ وَلَمَّا سُقِطَ فِىٓ أَيْدِيهِمْ وَرَأَوْا۟ أَنَّهُمْ قَدْ ضَلُّوا۟ قَالُوا۟ لَئِن لَّمْ يَرْحَمْنَا رَبُّنَا وَيَغْفِرْ لَنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ ﴾
“although [later,] when they would smite their hands in remorse, having perceived that they had gone astray, they would say, "Indeed, unless our Sustainer have mercy on us and grant us forgiveness, we shall most certainly be among the lost!"”
আর তারা যখন অনুতপ্ত হল এবং দেখল যে, তারা বিপথগামী হয়ে গেছে, তখন তারা বলল, ‘আমাদের রব যদি আমাদের প্রতি দয়া না করেন ও আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে আমরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হবই [১]।’ [১] মূসা 'আলাইহিস সালাম যখন তাওরাত গ্রহণ করার জন্য তুর পাহাড়ে ইবাদাত করতে গেলেন এবং ইতোপূর্বে ত্রিশ দিন ও ত্রিশ রাত ইবাদাতের যে নির্দেশ হয়েছিল; সে মতে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলে গিয়েছিলেন যে, ত্রিশ দিন পরে আমি ফিরে আসব, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলা যখন আরো দশ দিন মেয়াদ বাড়িয়ে দিলেন, তখন ইসরাঈলী সম্প্রদায় তাদের চিরাচরিত তাড়াহুড়া ও ভ্রষ্টতার দরুন নানা রকম মন্তব্য করতে আরম্ভ করল। তার সম্পপ্রদায়ে "সামেরী' নামে একটি লোক ছিল। সে ছিল একান্তই দুর্বল বিশ্বাসের লোক। কাজেই সে সুযোগ বুঝে বনী-ইসরাঈলের লোকদের বললঃ তোমাদের কাছে ফিরআউন সম্প্রদায়ের যেসব অলংকারপত্র রয়েছে, সেগুলো তো তোমরা কিবতীদের কাছ থেকে ধার করে এনেছিলে, এখন তারা সবাই ডুবে মরেছে, আর অলংকারগুলো তোমাদের কাছেই রয়ে গেছে, কাজেই এগুলো আমাকে দাও। বনী-ইসরাঈলরা তার কথামত সমস্ত অলংকারাদি তার (সামেরীর) কাছে এনে জমা দিল। সে এই সোনা-রুপা দিয়ে একটি বাছুরের প্রতিমূর্তি তৈরী করল এবং জিবরল 'আলাইহিস সালামএর ঘোড়ার খুরের তলার মাটি যা পূর্ব থেকেই তার কাছে রাখা ছিল, সোনারুপাগুলো আগুনে গলাবার সময় সে তাতে ঐ মাটি মিশিয়ে দিল। ফলে বাছুরের প্রতিমূর্তিটিতে জীবনী শক্তির নিদর্শন সৃষ্টি হল এবং তার ভিতর থেকে গাভীর মত হাম্বা রব বেরুতে লাগল। এ ক্ষেত্রে (عِجْلًا) শব্দের ব্যাখ্যায় (جَسَدًا لَّهٗ خُوَارٌ) বলে এদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। [ইবন কাসীর] সামেরীর এ আবিস্কার যখন সামনে উপস্থিত হল, তখন সে বনী-ইসরাঈলদেরকে কুফরীর প্রতি আমন্ত্রণ জানিয়ে বলল, “এটাই হল ইলাহ। মূসা আলাইহিস সালাম তো আল্লাহর সাথে কথা বলার জন্য গেছেন তুর পাহাড়ে। মূসা আলাইহিস সালামের সত্যিই ভুলই হয়ে গেল " বনী-ইসরাঈলদের সবাই পূর্ব থেকেই সামেরীর কথা শুনত। আর এখন তার এই অদ্ভুত ম্যাজিক দেখার পর তো আর কথাই নেই; সবাই একেবারে তার ভক্তে পরিণত হয়ে গেল এবং সে বাছুরকে ইলাহ মনে করে তারই ইবাদাতে প্রবৃত্ত হল।