Al-A'raaf • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ نَزْغٌۭ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ ۚ إِنَّهُۥ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ﴾
“And if it should happen that a prompting from Satan stirs thee up [to blind anger], seek refuge with God: behold, He is all-hearing, all-knowing.”
আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা আপনাকে প্ররোচিত করে, তবে আল্লাহর আশ্রয় চাইবেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ [১]। [১] এ আয়াতটি পূর্ববর্তী আয়াতের উপসংহার। কারণ, এতে হেদায়াত দেয়া হয়েছে যে, যারা অত্যাচার-উৎপীড়ন করে এবং মূর্খজনোচিত ব্যবহার করে, তাদের ভুলক্রটি ক্ষমা করে দেবেন। তাদের মন্দের উত্তর মন্দের দ্বারা দেবেন না। এ বিষয়টি মানব প্রকৃতির পক্ষে একান্তই কঠিন। বিশেষতঃ এমন পরিস্থিতিতে সৎ এবং ভাল মানুষদেরকেও শয়তান রাগাম্বিত করে লড়াই-ঝগড়ায় প্রবৃত্ত করেই ছাড়ে। সে জন্যই পরবর্তী আয়াতে উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, যদি এহেন মুহুর্তে রোষানল জ্বলে উঠতে দেখা যায়, তবে বুঝবেন শয়তানের পক্ষ থেকেই এমনটি হচ্ছে এবং তাঁর প্রতিকার হল আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া, তার সাহায্য প্রার্থনা করা। হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, দু'জন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লামের সামনে ঝগড়া-বিবাদ করছিল। এদের একজন রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারাবার উপক্রম হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি একটি বাক্য জানি, যদি এ লোকটি সে বাক্য উচ্চারণ করে, তাহলে তার এই উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে যাবে। তারপর বললেনঃ বাক্যটি হল এই (اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرّجِيْمِ) সে লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুনে সঙ্গে সঙ্গে বাক্যটি উচ্চারণ করল। তাতে সাথে সাথে তার রোষানল প্রশমিত হয়ে গেল। [ বুখারীঃ ৩২৮২, ৬০৪৮, ৬১১৫, মুসলিমঃ ২৬১০, ইবন হিববানঃ ৫৬৯২, আবু দাউদঃ ৪৭৮০, তিরমিযীঃ ৩৪৫২, মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২৪৪,নাসায়ী, আমলুল ইয়াওমে ওয়াল্লাইলাঃ ৩৯৩] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তাহাৰ্জ্জুদের জন্য দাঁড়ালে তিনবার তাকবীর বলতেন, তিনবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতেন, সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহী তিনবার বলতেন, তারপর বলতেনঃ (اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْم مِنْ هَمْزِه وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ) অর্থাৎ আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, তার কুমন্ত্রণা হতে, অহংকার হতে, তার হাতে মৃত্যু হওয়া থেকে। [আবু দাউদঃ ৭৬৪, ইবন মাজাহঃ ৮০৭, মুসনাদে আহমাদঃ ৪/৮৫]