At-Tawba • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تُتْرَكُوا۟ وَلَمَّا يَعْلَمِ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ جَٰهَدُوا۟ مِنكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَا رَسُولِهِۦ وَلَا ٱلْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةًۭ ۚ وَٱللَّهُ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ ﴾
“Do you [O believers] think that you will be spared unless God takes cognizance of your having striven hard [in His cause] without seeking help from any but God and His Apostle and those who believe in Him? For, God is aware of all that you do.”
তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে অথচ এখনও আল্লাহ্ প্রকাশ করেননি যে, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ও মুমিনগণ ছাড়া অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহন করেনি [১]? আর তোমরা যা কর, সে সম্মন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষে অবহিত। [১] এখানে জিহাদের তাৎপর্য বর্ণনা করা হয়েছে। আর তা হল, জিহাদের দ্বারা মুসলিমদের পরীক্ষা করা। তাবারী এ পরীক্ষায় নিষ্ঠাবান মুসলিম এবং মুনাফিক ও দুর্বল ঈমান সম্পন্নদের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। অতএব, এ পরীক্ষা জরুরী। তাই বলা হয়েছেঃ তোমরা কি মনে কর যে, শুধু কলেমার মৌখিক উচ্চারণ ও ইসলামের দাবী শুনে তোমাদের এমনিতে ছেড়ে দেয়া হবে। অথচ আল্লাহ্ প্রকাশ্য দেখতে চান কারা আল্লাহর রাহে জিহাদকারী এবং কারা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের ব্যতীত আর কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করছে না। এ আয়াতে সম্বোধন রয়েছে মুসলিমদের প্রতি। এদের মধ্যে কিছু মুনাফিক প্রকৃতির, আর কিছু দুর্বল ঈমানসম্পন্ন ইতস্ততঃকারী, যারা মুসলিমদের গোপন বিষয়গুলো নিজেদের অ-মুসলিম বন্ধুদের বলে দিত। সেজন্য এ আয়াতে নিষ্ঠাবান মুসলিমদের দুটি আলামতের উল্লেখ করা হয়। এক. শুধু আল্লাহর জন্যে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করে। দুই. কোন অমুসলিমকে নিজের অন্তরঙ্গ বন্ধু সাব্যস্ত করে না। আয়াতে উল্লেখিত শব্দ (وليجة) এর অর্থ, অন্তরঙ্গ বন্ধু, যে গোপন কথা জানে। অন্য এক আয়াতে এ অর্থে (بطانة) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। [তাবারী]। এর আভিধানিক অর্থ কাপড়ের ঐ স্তর যা অন্যান্য কাপড়ের ভেতর পেট বা শরীরের স্পর্শে থাকে। বলা হয়েছেঃ “হে ঈমানদারগণ, মুমিনদের ব্যতীত আর কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধু সাব্যস্ত করো না, তারা তোমাদের ধ্বংস সাধনে কোন ক্রটি বাকী রাখবে না " [সূরা আলে ইমরান ১১৮] মোটকথাঃ আল্লাহ্ তা'আলার ইচ্ছা জিহাদের মাধ্যমে তিনি ঈমানদারদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিবেন। এ ধরনের কথা সূরা আল-আনকাবৃত এর ১-৩, সূরা আলে ইমরানের ১৪২, ১৭৯ আয়াতেও আলোচনা করা হয়েছে। [তাবারী]