At-Tawba • BN-TAFSIR-ABU-BAKR-ZAKARIA
﴿ وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ جَنَّٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا وَمَسَٰكِنَ طَيِّبَةًۭ فِى جَنَّٰتِ عَدْنٍۢ ۚ وَرِضْوَٰنٌۭ مِّنَ ٱللَّهِ أَكْبَرُ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ ﴾
“God has promised the believers, both men and women, gardens through which running waters flow, therein to abide, and goodly dwellings in gardens of perpetual bliss: but God's goodly acceptance is the greatest [bliss of all] -for this, this is the triumph supreme!”
আল্লাহ্ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জান্নাতের---যার নিচে নদীসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আরও (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে উত্তম বাসস্থানের [১]। আর আল্লাহ্র সন্তুষ্টিই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই মহাসাফল্য। [১] জান্নাতের বর্ণনা বিভিন্ন হাদীসেও এসেছে। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতীরা জান্নাতের কামরাগুলোকে এমনভাবে দেখবে যেমন তোমরা আকাশে তারকা দেখতে পাও”। [বিখারী: ৬৫৫৫]। অনা হাদীসে এসেছে, ‘জান্নাতে এমন কিছু কক্ষ আছে যে কক্ষের ভেতর থেকে বাইরের অংশ দেখা যায় আর বাইরে থেকে ভেতরের অংশ দেখা যায়। আল্লাহ তা'আলা এগুলো তো তাদের জন্য তৈরী করেছেন, যারা অপরকে খাদ্য খাওয়ায়, নম্রভাবে কথা বলে, নিয়মিত সাওম পালন করে এবং যখন মানুষ ঘুমন্ত, তখন সালাত আদায় করে। [মুসনাদ আহমাদ: ৫/৩৪৩] অন্য হাদীসে এসেছে, “জান্নাতের প্রাসাদের এক ইট হবে রৌপ্যের, আরেক ইট হবে স্বর্ণের। ...”। [মুসনাদ আহমাদ: ২/৩০৪] অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "মুমিন ব্যক্তির জন্য জান্নাতে একটি তাবু থাকবে, যা হবে মাত্র একটি ফাঁপা মুক্তা, আর যার উচ্চতা হবে ষাট মাইল। মুমিন ব্যক্তির জন্য তাতে পরিবার-পরিজন থাকবে, সে তাদের কাছে ঘুরে বেড়াবে, কিন্তু তাদের একজন আরেকজনকে দেখতে পাবে না।" [বুখারী: ৪৮৭৯, মুসলিম: ২৮৩৪] আর আরশের অধিক নিকটবর্তী, জান্নাতের সবচেয়ে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন স্থানের নাম ওয়াসীলা। এটাই জান্নাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাসস্থান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যদি তোমরা মুয়াৰ্যযিনের আযান শোন, তবে সে আযানের জবাব দাও। অতঃপর আমার উপর সালাত পাঠ কর। কেননা, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার সালাত পাঠ করে, আল্লাহ তা'আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার সালাত পাঠ করেন। তারপর আমার জন্য তোমরা ‘ওয়াসীলা'র প্রার্থনা কর। আর ওয়াসীলা হল জান্নাতের এমন এক মর্যাদাসম্পন্ন স্থান, যা কেবলমাত্র একজন বান্দা ছাড়া আর কারও উপযুক্ত নয়। আর আমি আশা করি, আমি-ই সে বান্দা। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার জন্য ওয়াসীলার প্রার্থনা করবে, সে কেয়ামতের দিন আমার শাফাআত পাবে।" [মুসলিম: ১৩৮৪] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আল্লাহ্ তা'আলা জান্নাতবাসীদেরকে বলবে, 'হে জান্নাতবাসীরা!' তখন তারা বলবে, হে রব আমরা হাজির, আমরা হাজির, আর সমস্ত কল্যাণ আপনারই হাতে। তখন তিনি বলবেন, ‘তোমরা কি সন্তুষ্ট? তখন তারা বলবে, আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না, অথচ আপনি আমাদেরকে এমন কিছু দিয়েছেন, যা আপনার কোন সৃষ্টিকেই দেন নি? তখন তিনি বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম কিছু দেব না? তারা বলবে, এর চেয়েও উত্তম কী হতে পারে? তখন তিনি বলবেন, আমি আমার সন্তুষ্টি তোমাদের উপর অবতরণ করাব; এরপর আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হব না।" [বুখারী: ৬৫৪৯, মুসলিম: ২৮২৯]