Al-Baqara • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ ۞ وَإِذِ ٱبْتَلَىٰٓ إِبْرَٰهِۦمَ رَبُّهُۥ بِكَلِمَٰتٍۢ فَأَتَمَّهُنَّ ۖ قَالَ إِنِّى جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًۭا ۖ قَالَ وَمِن ذُرِّيَّتِى ۖ قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِى ٱلظَّٰلِمِينَ ﴾
“And [remember this:] when his Sustainer tried Abraham by [His] commandments and the latter fulfilled them, He said: "Behold, I shall make thee a leader of men. "Abraham asked: "And [wilt Thou make leaders] of my offspring as well? "[God] answered: "My covenant does not embrace the evildoers."”
যখন ইব্রাহীমকে তার প্রতিপালক কয়েকটি (নির্দেশ) বাক্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, [১] সুতরাং সে তা পূর্ণ (রূপে পালন) করেছিল। তিনি বললেন, ‘আমি তোমাকে মানব-জাতির নেতা করব।’ সে বলল, ‘আমার বংশধরগণের মধ্য হতেও?’ [২] তিনি বললেন, ‘আমার প্রতিশ্রুতি সীমালংঘনকারীদের প্রতি প্রযোজ্য নয়?’ [১] كَلِمَات (কয়েকটি বাক্য) বলতে শরীয়তের বিধি-বিধান, হজ্জের নিয়ম-পদ্ধতি, পুত্র যবেহ, হিজরত এবং নমরূদের আগুন ইত্যাদি সহ সেই সমস্ত পরীক্ষা, যার সম্মুখীন ইবরাহীম (আঃ) হয়েছিলেন এবং তিনি তাতে সফলকামও হয়েছিলেন। আর এরই বিনিময়ে তাঁকে 'ইমামুন্নাস' (জননেতা) সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। তাই কেবল মুসলিমই নয়, বরং ইয়াহুদী, খ্রিষ্টান এমনকি আরবের মুশরকিরদের মাঝেও তাঁর ব্যক্তিত্ব বড়ই মর্যাদাপূর্ণ এবং তাঁকে সকলের নেতা মানা ও জানা হয়।[২] মহান আল্লাহ ইবরাহীম (আঃ)-এর উক্ত আশা পূর্ণ করেন, যার উল্লেখ কুরআন মাজীদেই রয়েছে। {وَجَعَلْنَا فِي ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتَابَ} অর্থাৎ, "আমি তাঁর বংশধরদের মধ্যে নবুঅত ও কিতাব রাখলাম।" (সূরা আনকাবূত ২৯:২৭ আয়াত) কাজেই যে নবীই আল্লাহ প্রেরণ করেছেন, ইবরাহীম (আঃ)-এর সন্তানদের মধ্য থেকেই করেছেন এবং তাঁর পর যে কিতাবই তিনি নাযিল করেছেন, তাও তাঁর সন্তানের মধ্য থেকেই কারো উপর নাযিল করেছেন। (ইবনে কাসীর) তারপর 'আমার প্রতিশ্রুতি সীমালংঘনকারীদের প্রতি প্রযোজ্য নয়' বলে যে বিষয়টি পরিষ্কার করে দেন তা হল এই যে, ইবরাহীম (আঃ)-এর ব্যক্তিত্ব এত উচ্চ এবং আল্লাহর নিকট তাঁর এত বড় মর্যাদা থাকা সত্ত্বেও তাঁর সন্তানাদির মধ্যে যারা অযোগ্য, যালিম ও মুশরিক হবে, তাদেরকে হতভাগ্য ও বঞ্চিত হওয়া থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। কেউ নবী বংশে জন্মগ্রহণ করলেই যে তার কোন গুরুত্ব থাকবে এখানে সে ধারণার মূল আল্লাহ কেটে দিয়েছেন। যদি ঈমান ও নেক আমল না থাকে, তাহলে পীরের বেটা ও রাজার বেটা হলেও আল্লাহর নিকট তার কি কোন মূল্য থাকবে? নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, " ((وَمَنْ بَطَّأَ بِهِ عَمَلُهُ لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ )) "যার আমল তাকে পিছিয়ে দেয়, তার বংশমর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না।" (মুসলিম, অধ্যায়ঃ যিকর ও দু ' আ, পরিচ্ছেদঃ তেলাওয়াতে কুরআনের জন্য একত্রিত হওয়ার ফযীলত)