Al-Baqara • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ ۞ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَسْتَحْىِۦٓ أَن يَضْرِبَ مَثَلًۭا مَّا بَعُوضَةًۭ فَمَا فَوْقَهَا ۚ فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ فَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۖ وَأَمَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَيَقُولُونَ مَاذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِهَٰذَا مَثَلًۭا ۘ يُضِلُّ بِهِۦ كَثِيرًۭا وَيَهْدِى بِهِۦ كَثِيرًۭا ۚ وَمَا يُضِلُّ بِهِۦٓ إِلَّا ٱلْفَٰسِقِينَ ﴾
“Behold, God does not disdain to propound a parable of a gnat, or of something [even] less than that. Now, as for those who have attained to faith, they know that it is the truth from their Sustainer - whereas those who are bent on denying the truth say, "What could God mean by this parable?" In this way does He cause many a one to go astray, just as He guides many a one aright: but none does He cause thereby to go astray save the iniquitous,”
আল্লাহ মশা কিংবা তার থেকে উচ্চ (অথবা ক্ষুদ্র) পর্যায়ের কোন বস্তুর উদাহরণ দিতে লজ্জাবোধ করেন না, (১) সুতরাং যারা মুমিন (বিশ্বাসী) তারা জানে যে, এ উদাহরণ তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে সত্য; কিন্তু যারা (কাফের) অবিশ্বাস করে তারা বলে যে, আল্লাহ কি অভিপ্রায়ে এমন একটি উদাহরণ দিয়েছেন? এতদ্বারা তিনি অনেককেই বিভ্রান্ত করেন আবার বহু জনকে সৎপথে পরিচালিত করেন। (২)বস্তুতঃ তিনি সৎপথ পরিত্যাগীদের(৩) ছাড়া আর কাউকেও বিভ্রান্ত করেন না। (১) যখন মহান আল্লাহ অকাট্য দলীল দ্বারা সাব্যস্ত করে দিলেন যে, ক্বুরআন এক মু'জিযা (অলৌকিক নিদর্শন), তখন কাফেররা অন্যভাবে অভিযোগ উত্থাপন ক'রে বলল যে, যদি এটা আল্লাহর বাণী হত, তাহলে এমন মহান সত্তার অবতীর্ণ করা বাণীতে এত ছোট ছোট জিনিসের দৃষ্টান্ত থাকত না। আল্লাহ তাআলা তাদের কথার উত্তর দিয়ে বলেন যে, কথার পরিষ্কার ব্যাখ্যা দানের উদ্দেশ্যে এবং কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে দৃষ্টান্তসমূহ পেশ করাতে কোন দোষ নেই। আর এ জন্য এতে কোন লজ্জা-সংকোচও নেই। فَوقَها মশার উপরে; অর্থাৎ, তার ডানা বরাবর। অর্থ হল, এই মশার থেকেও ছোট জিনিস। কিংবা فَوق এর অর্থ হল, এই মশার চেয়েও উচ্চ। অর্থ দাঁড়াবে, মশা বা তার থেকে উচ্চ কোন কিছু। فَوقَهَا শব্দের মধ্যে উভয় অর্থেরই প্রশস্ততা রয়েছে। (২) আল্লাহর উপস্থাপিত দৃষ্টান্তসমূহ দ্বারা ঈমানদারদের ঈমান বর্ধিত হয় এবং কাফেরদের কুফরী বৃদ্ধি পায়। আর এ সব কিছু আল্লাহর কুদরতী নিয়ম এবং তাঁর ইচ্ছার ভিত্তিতেই হয়। যেটাকে ক্বুরআনে (نُوَلِّهِ مَا تَوَلّى) "আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে।" (সূরা নিসা ৪:১১৫ আয়াত) এবং হাদীসে كُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ অর্থাৎ, প্রত্যেকের জন্য সে জিনিস সহজ করা হয় যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।" (সহীহ বুখারী, তাফসীর সূরাতুল লাইল ) বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। (৩) فِسق আল্লাহর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়াকে বলে। আর এটা (আল্লাহর আনুগত্য থেকে বের হওয়া) সাময়িকভাবে একজন মু'মিনের দ্বারাও হতে পারে। তবে এখানে 'ফিসক্ব'-এর অর্থ হল, আল্লাহর আনুগত্য থেকে সম্পূর্ণরূপে বেরিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ, কুফরী করা ও সৎপথ পরিত্যাগ করা। আর এ কথা পরবর্তী আয়াত দ্বারা আরো পরিষ্কার হয়ে যায়, যাতে মু'মিনদের মোকাবেলায় কাফেরদের গুণাবলীর উল্লেখ হয়েছে।