Al-Baqara • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَٰقَكُمْ لَا تَسْفِكُونَ دِمَآءَكُمْ وَلَا تُخْرِجُونَ أَنفُسَكُم مِّن دِيَٰرِكُمْ ثُمَّ أَقْرَرْتُمْ وَأَنتُمْ تَشْهَدُونَ ﴾
“And lo! We accepted your solemn pledge that you would not shed one another's blood, and would not drive one another from your homelands - whereupon you acknowledged it; and thereto you bear witness [even now].”
(হে ইয়াহুদী সমাজ! তোমরা নিজেদের অবস্থা স্মরণ করে দেখ,) যখন আমি তোমাদের নিকট থেকে (এই মর্মে) অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা পরস্পর রক্তপাত ঘটাবে না ও নিজেদের লোকজনকে স্বদেশ হতে বহিষ্কার করবে না। অতঃপর তোমরা তা স্বীকার করেছিলে, আর এ বিষয়ে তোমরাই তার সাক্ষী। [১] [১] এই আয়াতগুলোতে পুনরায় বানী-ইস্রাঈলদের নিকট হতে নেওয়া অঙ্গীকারের কথা আলোচনা হচ্ছে। তবে এ থেকেও তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এই অঙ্গীকারে প্রথমতঃ তাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের তাকীদ করা হয়েছে যা প্রত্যেক নবীর মৌলিক ও প্রাথমিক দাওয়াত ছিল। (যেমন, সূরা আম্বিয়ার ২১:২৫ নং আয়াতে এবং অন্যান্য আয়াতেও এ কথা পরিষ্কার করে বলা হয়েছে।) অতঃপর পিতা-মাতার সাথে ভাল ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর ইবাদতের পর দ্বিতীয় নম্বরে পিতা-মাতার আনুগত্য এবং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার তাকীদ ক'রে এ কথা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে, যেমন আল্লাহর ইবাদত করা জরুরী, তেমনি পিতা-মাতার আনুগত্য করাও অত্যাবশ্যক এবং এ ব্যাপারে গড়িমসি করার কোন অবকাশ নেই। ক্বুরআনের বিভিন্ন স্থানে মহান আল্লাহ তাঁর ইবাদতের পর দ্বিতীয় নম্বরে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার কথা বলে এর গুরুত্ব যে অনেক, সেটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এরপর আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম ও দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করার ও সুন্দর আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইসলামেও এই বিষয়গুলোর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। অনুরূপ রসূল (সাঃ)-এর বহু সংখ্যক হাদীসে এগুলোর গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। এই অঙ্গীকারে নামায পড়া ও যাকাত দেওয়ারও নির্দেশ রয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই দুই ইবাদত পূর্বের শরীয়তেও বিদ্যমান ছিল এবং এই ইবাদতদ্বয়ের গুরুত্বও এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। ইসলামেও এই ইবাদত দু'টির অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এমন কি এই ইবাদতদ্বয়ের কোন একটির অস্বীকার করলে বা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে, তা কুফরী বিবেচিত হবে। যেমন আবূ বাকার সিদ্দীক্ব (রাঃ)-এর খেলাফত কালে যাকাত দিতে অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করার মাধ্যমে এ কথা পরিষ্কার হয়ে যায়।