Taa-Haa • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ قَالُوا۟ لَن نُّؤْثِرَكَ عَلَىٰ مَا جَآءَنَا مِنَ ٱلْبَيِّنَٰتِ وَٱلَّذِى فَطَرَنَا ۖ فَٱقْضِ مَآ أَنتَ قَاضٍ ۖ إِنَّمَا تَقْضِى هَٰذِهِ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَآ ﴾
“They answered: "Never shall we prefer thee to all the evidence of the truth that has come unto us, nor to Him who has brought us into being! Decree, then, whatever thou art going to decree: thou canst decree only [something that pertains to] this worldly life!”
তারা বলল, ‘আমাদের নিকট যে স্পষ্ট নিদর্শন এসে গেছে তার উপর এবং যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন[১] তাঁর উপর তোমাকে আমরা কিছুতেই প্রাধান্য দেব না। সুতরাং তুমি যা করতে চাও তাই কর। তুমি তো কেবল এই পার্থিব জীবন সম্বন্ধে যা করবার করতে পারো। [২] [১] এই অনুবাদ ঐ সময় সঠিক হবে যখন وَالَّذِي فَطَرَنِي বাক্যের সংযোগ مَا جَاءنَا বাক্যের সাথে ধরা হবে। পক্ষান্তরে কিছু ব্যাখ্যাতা وَالَّذِي فَطَرَنِي বাক্যটিকে শপথ বাক্য বলেছেন। অর্থাৎ, সেই সত্তার শপথ যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন! আমাদের নিকট যে স্পষ্ট নিদর্শন এসে গেছে, তার উপর তোমাকে আমরা কিছুতেই প্রাধান্য দেব না। [২] অর্থাৎ, তোমার যা করার ক্ষমতা আছে, তাই কর। আমরা জানি, তোমার ক্ষমতা শুধু এই পার্থিব জীবনেই চলতে পারে। পক্ষান্তরে আমরা ঈমান এনেছি সেই পালনকর্তার উপর যাঁর ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব দুনিয়া ও আখেরাতে সমানভাবে চলে। মৃত্যুর পর আমরা তোমার শাসন ও অত্যাচার থেকে তো বেঁচে যাব। কারণ দেহ হতে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার পর আমাদের প্রতি তোমার এখতিয়ার শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর অবাধ্য হয়ে থাকি, তাহলে মৃত্যুর পরও আল্লাহর এখতিয়ারের বাইরে বের হওয়া সম্ভব নয়। তিনি আমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিতে সক্ষম। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার পর এক মু'মিনের জীবনে যে মহা পরিবর্তন আসা আবশ্যক, পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী ও আখেরাতের চিরস্থায়ী জীবনের প্রতি যে দৃঢ়-বিশ্বাস হওয়া দরকার, অতঃপর এই আকীদা ও বিশ্বাসের উপর যে দুঃখ-কষ্ট আসে তা যে উদ্যম, ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার সাথে বরণ করার প্রয়োজন, জাদুকররা তার একটি প্রকৃষ্ট নমুনা পেশ করেছে। ঈমান আনার পূর্বে কেমন তারা ফিরআউনের নিকট থেকে পুরস্কার ও পার্থিব পদ-মর্যাদার আকাঙ্ক্ষী ছিল, কিন্তু ঈমান আনার পরে কোন প্রলোভন ও প্ররোচনা তাদেরকে বিচলিত করতে পারেনি এবং দন্ড ও শাস্তির হুমকিও তাদেরকে ঈমান হতে বিমুখ করতে সফল হয়নি।