Qaaf • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِۦ نَفْسُهُۥ ۖ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ ٱلْوَرِيدِ ﴾
“NOW, VERILY, it is We who have created man, and We know what his innermost self whispers within him: for We are closer to him than his neck-vein.”
অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার মন তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয়, তা আমি জানি।[১] আমি তার ঘাড়ে অবস্থিত ধমনী অপেক্ষাও নিকটতর। [২] [১] অর্থাৎ, মানুষ যা কিছু গোপন করে এবং অন্তরে লুকিয়ে রাখে, তা সব কিছুই আমি জানি। 'অসঅসাহ' (কুমন্ত্রণা) অন্তরে উদীয়মান সেই কল্পনাগুলোকে বলা হয়, যার জ্ঞান ঐ মানুষটি ছাড়া আর কারো থাকে না। কিন্তু আল্লাহ সেই কল্পনাগুলোও জানেন। এই জন্য হাদীসে এসেছে যে, "মহান আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদীয়মান কুখেয়ালগুলোকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। অর্থাৎ, সেগুলোর উপর কোন ধরপাকড় হবে না, যতক্ষণ না সেগুলো মুখে প্রকাশ অথবা কাজে পরিণত করবে।" (বুখারীঃ কিতাবুল ঈমান, মুসলিম) [২] وَرِيْدٌ (শাহরগ) বলা হয় প্রধান অথবা এমন প্রাণধারক ধমনীকে যা কেটে গেলে মৃত্যু ঘটে যায়। এই ধমনী (কণ্ঠনালীর দুই পাশে দু'টি মোটা আকারের শিরা) মানুষের কাঁধ পর্যন্ত থাকে। আর এই নৈকট্যের অর্থ জ্ঞানের নৈকট্য। অর্থাৎ, জ্ঞানের দিক দিয়ে আমি মানুষের এত নিকটে যে, তার অন্তরের কথাগুলোও জানতে পারি। ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন, نَحْنُ থেকে ফিরিশতাদের বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, আমার ফিরিশতাগণ মানুষের নিজের শাহরগের চেয়েও নিকটে। কারণ, মানুষের ডানে ও বামে দু'জন ফিরিশতা সব সময় বিদ্যমান থাকেন। তাঁরা মানুষের প্রতিটি কথা ও কাজ লিপিবদ্ধ করেন। {يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ} অর্থ হল, يَأْخُذَانِ وَيُثَبِّتَانِ ইমান শাওকানী (রঃ) এর অর্থ করেছেন, আমি মানুষের সমস্ত অবস্থা সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। আর এতে সেই ফিরিশতাদের আমি মুখাপেক্ষী নই, যাদেরকে আমি মানুষদের আমল ও কথাগুলো লিপিবদ্ধ করার জন্য নিযুক্ত করেছি। এই ফিরিশতাদেরকে তো আমি কেবল হুজ্জত প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিযুক্ত করেছি। দু'জন ফিরিশতা বলতে, কারো কারো নিকট একজন পুণ্য লিপিবদ্ধকারী এবং অপরজন পাপ লিপিবদ্ধকারী। আবার কারো নিকট রাত ও দিনের ফিরিশতা। রাত ও দিনের জন্য দু'জন করে পৃথক পৃথক ফিরিশতা।