At-Tur • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَٰنٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَآ أَلَتْنَٰهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَىْءٍۢ ۚ كُلُّ ٱمْرِئٍۭ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌۭ ﴾
“And as for those who have attained to faith and whose offspring will have followed them in faith, We shall unite them with their offspring; and We shall not let aught of their deeds go to waste: [but] every human being will be held in pledge for whatever he has earned.”
যারা বিশ্বাস করে আর তাদের সন্তুান-সন্ততি বিশ্বাসে তাদের অনুগামী হয়, তাদের সাথে মিলিত করব তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল আমি কিছুমাত্র হ্রাস করব না।[১] প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়বদ্ধ। [২] [১] অর্থাৎ, যাদের পিতারা নিজেদের আন্তরিকতা, আল্লাহভীরুতা, সৎকর্ম ও সচ্চরিত্রের ভিত্তিতে জান্নাতের সুউচ্চ মর্যাদা লাভে ধন্য হবে, মহান আল্লাহ তাদের ঈমানদার সন্তান-সন্ততিদের মর্যাদাও বাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে তাদের পিতাদের সাথে মিলিত করবেন। এ রকম করবেন না যে, তাদের পিতাদের মর্যাদা কম করে তাদেরকে তাদের সন্তানদের নিম্নমানের মর্যাদায় তাদেরকে নিয়ে আসবেন। অর্থাৎ, মু ' মিনদের প্রতি তিনি দ্বিগুণ অনুগ্রহ করবেন। প্রথমতঃ বাপ ও বেটাদেরকে পরস্পর মিলিত করবেন। যাতে তাদের চক্ষু শীতল হয়। তবে শর্ত হল যে, উভয়েই যেন ঈমানদার হয়। দ্বিতীয়তঃ এই যে, নিম্ন মর্যাদার অধিকারীদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন। তাছাড়া উভয়কে মিলিত করার পদ্ধতি এটাও হতে পারত যে, প্রথম শ্রেণীর লোকদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণী দেবেন। কিন্তু যেহেতু এটা তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ থেকে অনেক হীন ও নীচ ব্যাপার তাই তিনি এ রকম করবেন না। বরং তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীর অধিকারীদেরকে প্রথম শ্রেণী দান করবেন। এটা হল আল্লাহর সেই অনুগ্রহ, যা তিনি পিতাদের নেক আমলের বর্কতে সন্তানদের প্রতি করবেন। আর হাদীসে এসেছে যে, সন্তানদের দু'আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে পিতাদের মর্যাদা বর্ধিত হয়। জান্নাতে এক ব্যক্তির মর্যাদা উচ্চ করা হলে, সে আল্লাহকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে, মহান আল্লাহ বলবেন যে, তোমার সন্তানের তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৫০৯) এর সমর্থন ঐ হাদীস দ্বারাও হয়, যাতে এসেছে যে, "মানুষ মারা গেলে তার আমলের ধারাবাহিকতা ছিন্ন হয়ে যায়। তবে তিনটি জিনিসের সওয়াব মৃত্যুর পরও জারী থাকে। সাদকায়ে জারিয়াহ, এমন জ্ঞান যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হতে থাকে, আর এমন সুসন্তান, যে তার জন্য দু'আ করে।" (মুসলিম অসিয়ত অধ্যায়) [২] رَهِيْنٌ এর অর্থ, مَرْهُوْنٍ (বন্ধক রাখা বস্তু)। প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের দায়ে দায়বদ্ধ। আর এ কথাটি ব্যাপক; যাতে মু'মিন ও কাফের উভয়ই শামিল। অর্থ হল, যে ব্যক্তিই (ভাল-মন্দ) যেমন আমল করবে, সেই অনুযায়ী সে (ভাল-অথবা মন্দ) ফল পাবে। অথবা এ থেকে কাফেদেরকে বুঝানো হয়েছে। তারা নিজেদের কর্মের জন্য বন্দী থাকবে। যেমন অন্যত্র বলেন, {إِلَّكُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ، اأَصْحَابَ الْيَمِين}) অর্থাৎ, প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের জন্য দায়ী। তবে ডানহাত-ওয়ালারা নয়। (সূরা মুদ্দাসসির ৭৪:৩৮-৩৯ আয়াত)