Al-A'raaf • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ وَلَمَّا جَآءَ مُوسَىٰ لِمِيقَٰتِنَا وَكَلَّمَهُۥ رَبُّهُۥ قَالَ رَبِّ أَرِنِىٓ أَنظُرْ إِلَيْكَ ۚ قَالَ لَن تَرَىٰنِى وَلَٰكِنِ ٱنظُرْ إِلَى ٱلْجَبَلِ فَإِنِ ٱسْتَقَرَّ مَكَانَهُۥ فَسَوْفَ تَرَىٰنِى ۚ فَلَمَّا تَجَلَّىٰ رَبُّهُۥ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُۥ دَكًّۭا وَخَرَّ مُوسَىٰ صَعِقًۭا ۚ فَلَمَّآ أَفَاقَ قَالَ سُبْحَٰنَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴾
“And when Moses came [to Mount Sinai] at the time set by Us, and his Sustainer spoke unto him, he said: "O my Sustainer! Show [Thyself] unto me, so that I might behold Thee!" Said [God]: "Never canst thou see Me. However, behold this mountain: if it remains firm in its place, then - only then - wilt thou see Me. And as soon as his Sustainer revealed His glory to the mountain, He caused it to crumble to dust; and Moses fell down in a swoon. And when he came to himself, he said: "Limitless art Thou in Thy glory! Unto Thee do I turn in repentance; and I shall [always] be the first to believe in Thee!"”
মূসা যখন আমার নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হল এবং তার প্রতিপালক তার সঙ্গে কথা বললেন, তখন সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দর্শন দাও, আমি তোমাকে দেখব।’ তিনি বললেন, ‘তুমি আমাকে কখনই দেখবে না।[১] তুমি বরং পাহাড়ের প্রতি লক্ষ্য কর, যদি তা স্ব-স্থানে স্থির থাকে, তাহলে তুমি আমাকে দেখবে।’ সুতরাং যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ে জ্যোতিষ্মান হলেন, তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করল আর মূসা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে গেল।[২] অতঃপর যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল, তখন বলল, ‘মহিমময় তুমি! আমি অনুতপ্ত হয়ে তোমাতেই প্রত্যাবর্তন করলাম এবং বিশ্বাসীদের মধ্যে আমিই প্রথম।’[৩] [১] যখন মূসা (আঃ) ত্বূর পাহাড়ে গেলেন। সেখানে মহান আল্লাহ তাঁর সাথে সরাসরি কথা বললেন। মূসা (আঃ)-এর অন্তরে আল্লাহকে দেখার আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হল এবং নিজের মনের কথা رَبِّ أرِني (হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দর্শন দাও) বলে প্রকাশ করলেন। যার উত্তরে মহান আল্লাহ বললেন, لَن تَراني (তুমি আমাকে কখনই দেখবে না)। মু'তাযিলা ফির্কা এখান থেকে প্রমাণ করতে চায় যে, لن শব্দটি নাবাচক অর্থে সর্বকালের জন্য ব্যবহার হয়। সেই জন্য মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ না পৃথিবীতে সম্ভব, আর না পরকালে। কিন্তু মু'তাযিলাদের এই মত সহীহ হাদীসসমূহের বিপরীত। বলা বাহুল্য, সহীহ ও শক্তিশালী হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, কিয়ামত দিবসে মু'মিনরা আল্লাহ তাআলাকে দেখবেন এবং জান্নাতেও আল্লাহর মুখমন্ডল দর্শন লাভে ধন্য হবেন। সকল আহলে সুন্নাহর এই আকীদাহ বা বিশ্বাস। এখানে যে ('তুমি আমাকে কখনই দেখবে না' বলে) দর্শনের কথা খন্ডন করা হয়েছে, তা শুধুমাত্র পৃথিবীর ক্ষেত্রে। পৃথিবীর মানুষের কোন চোখ মহান আল্লাহকে দেখতে সক্ষম নয়। কিন্তু পরকালে মহান আল্লাহ এই চোখে এমন দৃষ্টিশক্তি দান করবেন, যা আল্লাহর নূরকে সহ্য করতে পারবে। [২] অর্থাৎ, ঐ পাহাড়ও মহান আল্লাহর প্রকাশ হওয়াকে সহ্য করতে পারল না এবং মূসা (আঃ)ও সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে গেলেন। হাদীসে বর্ণিত যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, "কিয়ামত দিবসে সবাই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়বে। (এই জ্ঞানশূন্যতা ইবনে কাসীরের মতে ঐ সময় হবে যখন হাশরের ময়দানে মহান আল্লাহ বিচারের জন্য আবির্ভূত হবেন।) অতঃপর যখন সবাই জ্ঞান ফিরে পাবে, তখন আমিই সর্বপ্রথম জ্ঞানপ্রাপ্ত হব এবং দেখব যে, মূসা (আঃ) আরশের পায়া ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু আমি জানি না যে, তিনি আমার আগেই জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন, নাকি ত্বূর পাহাড়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁকে হাশরের ময়দানে সংজ্ঞাহীন হওয়া থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়েছে।" (বুখারীঃ তাফসীর সূরাতুল আরাফ, মুসলিমঃ মূসা (আঃ)-এর ফযীলত) [৩] 'বিশ্বাসীদের মধ্যে আমিই প্রথম' তোমার মর্যাদা ও মাহাত্ম্যে এবং সেই সাথে এ কথায় যে, আমি তোমার অসহায় ও দুর্বল বান্দা; পৃথিবীতে তোমার দর্শনলাভে অক্ষম।