Al-Anfaal • BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
﴿ ۞ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّمَا غَنِمْتُم مِّن شَىْءٍۢ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُۥ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْيَتَٰمَىٰ وَٱلْمَسَٰكِينِ وَٱبْنِ ٱلسَّبِيلِ إِن كُنتُمْ ءَامَنتُم بِٱللَّهِ وَمَآ أَنزَلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا يَوْمَ ٱلْفُرْقَانِ يَوْمَ ٱلْتَقَى ٱلْجَمْعَانِ ۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ ﴾
“AND KNOW that whatever booty you acquire [in war], one-fifth thereof belongs to God and the Apostle, and the near of kin, and the orphans, and the needy, and the wayfarer. [This you must observe] if you believe in God and in what We bestowed from on high upon Our servant on the day when the true was distinguished from the false - the day when the two hosts met in battle. And God has the power to will anything.”
আরো জেনে রাখ যে, যুদ্ধে যা কিছু তোমরা (গনীমত) লাভ কর[১] তার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহ, তাঁর রসূলের, রসূলের নিকটাত্মীয়, পিতৃহীন এতীম, দরিদ্র এবং পথচারীদের জন্য;[২] যদি তোমরা আল্লাহতে ও সেই জিনিসে বিশ্বাসী হও যা ফায়সালার দিন[৩] (বদরে) আমি আমার দাসের প্রতি অবতীর্ণ করেছিলাম;[৪] যেদিন দুই দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল[৫] এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। [১] 'গনীমতের মাল' থেকে সেই মাল উদ্দেশ্য যা কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর লাভ হয়। পূর্বের উম্মতে এই মাল বিতরণের পদ্ধতি এই ছিল যে, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কাফেরদের নিকট হতে লাভ করা সমস্ত মাল-সম্পদকে এক জায়গায় জমা করা হত, আর আসমান হতে আগুন এসে তাকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিত। কিন্তু মুসলিম উম্মতের জন্য এই গনীমতের মাল আল্লাহ হালাল করে দিয়েছেন। আর যে মাল দুই দলের সন্ধি চুক্তির ভিত্তিতে বিনা যুদ্ধে অথবা জিযিয়া কর ও খাজনা আদায়ের মাধ্যমে লাভ হয় তাকে 'ফাই-এর মাল' বলা হয়। কখনো কখনো গনীমতের মালকেও ফাই-এর মাল বলা হয়ে থাকে। من شيءٍ অর্থঃ যা কিছু। অর্থাৎ, কম হোক অথবা বেশী, মূল্যবান হোক অথবা সামান্য মূল্যের, সমস্তকে জমা করে তা যথারীতি বণ্টন করা হবে। কোন সৈন্যের জন্য তা হতে বণ্টনের পূর্বে কোন বস্তু রেখে নেওয়ার অনুমতি নেই। [২] এখানে 'আল্লাহ' শব্দটি বরকতস্বরূপ। পরন্তু এই জন্যও যে, প্রত্যেক জিনিসের প্রকৃত পক্ষে মালিক হলেন তিনিই। আর আদেশও তাঁরই চলে। আল্লাহ ও তদীয় রসূলের ভাগ থেকে উদ্দেশ্য একটাই। অর্থাৎ, সমস্ত গনীমতের মালকে পাঁচ ভাগ করে চার ভাগ সেই মুজাহিদদের মধ্যে বণ্টন করা হবে, যাঁরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যেও পদাতিক (পায়ে হাঁটা ব্যক্তিদের)-কে এক ভাগ এবং অশ্বারোহীকে তিন ভাগ দেওয়া হবে। আর পঞ্চম ভাগটাকে পুনরায় পাঁচ ভাগ করা হবে, তার মধ্যে রসূল (সাঃ)-এর জন্য এক ভাগ। অতঃপর বাকী ভাগগুলি মুসলিমদের সাধারণ কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। যেমন, নবী (সাঃ) নিজেও এই ভাগগুলি মুসলিমদের উপরেই খরচ করতেন। বরং তিনি বলেছেনও, الخمسُ مَردودٌ عليكم (সুনানে নাসাঈ, সহীহ নাসাঈ ৩৮৫৮নং, আহমাদ ৫/৩১৯) অর্থাৎ, আমার ভাগে যে পঞ্চম অংশ রয়েছে সেটাও মুসলিমদের উপকারে ব্যয় করা হবে। দ্বিতীয় ভাগ রসূল (সাঃ)-এর আত্মীয়-স্বজনের জন্য। অতঃপর এতীম ও মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। আরো বলা হয় যে, এই পঞ্চম ভাগটি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় করা হবে। [৩] 'ফায়সালার দিন' বলতে হক ও বাতিলের মাঝে চূড়ান্ত ফায়সালার দিন, বদর যুদ্ধের দিন। এ যুদ্ধ সন ২ হিজরী, রমযানের ১৭ তারীখে ঘটেছিল। সেই দিনটিকে 'ফায়সালার দিন' এই জন্য বলা হয় যে, এটা ছিল কাফের ও মুসলিমদের মাঝে প্রথম যুদ্ধ এবং তাতে মুসলিমদেরকে বিজয়ী করে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, ইসলাম ধর্মই হল সত্য ধর্ম আর কুফর ও শিরক হল বাতিল ধর্ম। [৪] এখানে 'যা অবতীর্ণ' বলতে ফিরিশতা এবং অলৌকিক কিছু বিষয় ইত্যাদি অবতীর্ণ করাকে বুঝানো হয়েছে, যা বদর যুদ্ধের দিন ঘটেছিল। [৫]অর্থাৎ, মুসলিম ও কাফিরদের সৈনদল।