slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris slot qris bokep indo xhamster/a> jalalive/a>
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير سورة الجمعة

(Al-Jumuah) • المصدر: BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ

📘 Please check ayah 62:4 for complete tafsir.

فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

📘 ৯-১০ নং আয়াতের তাফসীর: (আরবী) শব্দটি (আরবী) শব্দ হতে বের করা হয়েছে, কারণ এই যে, এই দিনে মুসলমানরা বড় বড় মসজিদে ইবাদতের জন্যে জমা বা একত্রিত হয়ে থাকে। আর এটিও একটি কারণ যে, এই দিনে সমস্ত মাখলুকের সৃষ্টি-কার্য পূর্ণ হয়েছিল। ছয় দিনে সারা জগত বানানো হয়। ষষ্ঠ দিন ছিল জুমআর দিন। এই দিনেই হযরত আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়। এই দিনেই জান্নাতে তাঁর অবস্থান ঘটে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত হতে বের করে দেয়া হয়। এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। এই দিনের মধ্যে এমন একটি সময় রয়েছে যে, ঐ সময়ে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট যা যা করা হয় তা-ই তিনি দান করে থাকেন।হযরত সালমান (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁকে বলেনঃ “হে সালমান (রাঃ)! জুমআর দিন কি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই (সঃ) ভাল জানেন।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “জমুআহর দিন এমন এক দিন যে, এ দিনে তোমাদের পিতা-মাতাকে (হযরত আদম আঃ ও হযরত হাওয়া আঃ কে) আল্লাহ একত্রিত করেন। অথবা বলেনঃ “তোমাদের পিতাকে (হযরত আদমকে আঃ) জমা করেন।” (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে (মাওকুফরূপেও) অনুরূপ বর্ণিত আছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। প্রাচীন অভিধানে এটাকে ইয়াওমুল আরূবাহ বলা হতো। পূর্ববর্তী উম্মতদেরকেও প্রতি সাতদিনে একটি দিন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু জুমআর দিনের হিদায়াত তারা লাভ করেনি। ইয়াহূদীরা শনিবারকে পছন্দ করে যেদিন মাখলুকের সৃষ্টি কার্য শুরুই হয়নি। নাসারাগণ রবিবারকে পছন্দ করে যেই দিন মাখলুক সৃষ্টির সূচনা হয়। আর এই উম্মতের জন্যে আল্লাহ তা'আলা জুমআ'হূকে পছন্দ করেছেন যেই দিন তিনি মাখলুকের সৃষ্টিকার্য পরিপূর্ণ করেছেন। যেমন সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমরা (দুনিয়ায়) সর্বশেষে আগমনকারী, আর কিয়ামতের দিন আমরা সর্বাগ্রে হবো। যাদেরকে আমাদের পূর্বে (আসমানী) কিতাব দেয়া হয় তারা এ দিনের ব্যাপারে মতভেদ করে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারেও তারা আমাদের পিছনে রয়েছে। ইয়াহূদীরা আগামী কাল এবং খৃষ্টানরা আগামী কালের পরের দিন।” এটা সহীহ বুখারীর শব্দ আর সহীহ মুসলিমের শব্দ হলোঃ আল্লাহ তা'আলা জুমআহ্ হতে ভ্রষ্ট করেছেন আমাদের পূর্ববর্তীদেরকে। ইয়াহুদীদের জন্যে ছিল শনিবার এবং খৃষ্টানদের জন্যে ছিল রবিবার। অতঃপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা আমাদেরকে আনয়ন করেন এবং জুমআ’হর জন্যে আমাদেরকে হিদায়াত দান করেন। সুতরাং তিনি রেখেছেন শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার। এভাবে ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা কিয়ামতের দিন আমাদের পিছনে থাকবে। দুনিয়াবাসীর হিসেবে আমরা শেষে রয়েছি। কিন্তু কিয়ামতের দিন সমস্ত মাখলুকের মধ্যে সর্বপ্রথম আমাদের ব্যাপারে ফায়সালা করা হবে।”এখানে আল্লাহ তা'আলা জুমআর দিন স্বীয় মুসলিম বান্দাদেরকে তাঁর ইবাদতের জন্যে একত্রিত হওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। (আরবী) দ্বারা এখানে দৌড়ানো উদ্দেশ্য নয়, বরং ভাবার্থ হচ্ছেঃ তোমরা আল্লাহর যিকর অর্থাৎ নামাযের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়, কাজ-কর্ম ছেড়ে দিয়ে মসজিদ পানে অগ্রসর হও। যেমন মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “মুমিন অবস্থায় যে আখিরাতের কামনা করে এবং ওর জন্যে চেষ্টা সাধনা করে।” (১৭:১৯)হযরত উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর কিরআত (আরবী) এর স্থলে (আরবী) রয়েছে। এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, নামাযের জন্যে দৌড়িয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা ইকামত শুনলে নামাযের জন্যে ধীরে সুস্থে যাবে, দৌড়াবে না। নামাযের যে অংশ (জামাআতের সাথে) পাবে তা পড়ে নিবে এবং যা ছুটে যাবে তা পুরো করবে।” অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) নামাযে ছিলেন এমতাবস্থায় তিনি দরযার কাছে জনগণের পায়ের জোর শব্দ শুনতে পান। নামায শেষে তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ “ব্যাপার কি?” সাহাবীগণ উত্তরে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা তাড়াতাড়ি করে নামাযে শরীক হয়েছি।” তখন তিনি বললেনঃ “না, না, এরূপ করো না। ধীরে সুস্থে নামাযে আসবে। যা পাবে পড়বে এবং যা ছুটে যাবে তা পুরো করে নিবে।" হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেনঃ “আল্লাহর শপথ! এখানে এ হুকুম কখনো নয় যে, মানুষ নামাযের জন্যে দৌড়িয়ে আসবে। এটা তো নিষেধ। বরং এখানে উদ্দেশ্য হলো অত্যন্ত আগ্রহ, মনোযোগ ও বিনয়ের সাথে নামায পড়া। হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ স্বীয় মন ও আমল দ্বারা চেষ্টা কর। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “যখন তিনি (হযরত ইসমাঈল আঃ) এমন বয়সে পদার্পণ করলেন যে, তাঁর সাথে (হযরত ইবরাহীম আঃ এর সাথে) চলাফেরা করতে সক্ষম হলেন।” (৩৭:১০২) জুমআর নামাযের জন্যে আগমনকারীর জুমআ’হর পূর্বে গোসল করা উচিত। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যখন জুমআ’হর জন্যে আসবে তখন যেন সে গোসল করে নেয়। এ দু' গ্রন্থেই হযরত আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “জুমআর দিন প্রত্যেক মুসলমানের উপর গোসল ওয়াজিব।হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলমানের উপর আল্লাহর হক এই যে, সে প্রতি সাত দিনে এক দিন গোসল করবে, যাতে সে তার মাথা ও শরীর ধৌত করবে।” (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক মুসলিমের জন্যে প্রতি সাত দিনে একদিন গোসল রয়েছে এবং তা হলো জুমআর দিন।” (ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম নাসাঈ (রঃ) এবং ইমাম হিব্বান (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)হযরত আউস ইবনে আউস সাকাফী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “যে ব্যক্তি জুমআ'র দিন ভালভাবে গোসল করে এবং সকালেই মসজিদ পানে রওয়ানা হয়ে যায়, পায়ে হেঁটে যায়, সওয়ার হয় না, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসে মনোযোগের সাথে খুৎবাহ শুনে এবং বাজে কথা বলে না, সে প্রতি পদক্ষেপের বিনিময়ে সারা বছরের রোযা ও সারা বছরের কিয়ামের (রাত্রে দাঁড়িয়ে ইবাদত করার) পুণ্য লাভ করে।” (এ হাদীসটি আহলে সুনানে আরবাআহ ও ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে খুবই উত্তম বলেছেন) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “জুমআর দিন যে ব্যক্তি নাপাক অবস্থার গোসলের ন্যায় গোসল করে আওয়াল বা প্রথম সময়ে মসজিদে গেল সে যেন একটা উট কুরবানী করলো, যে দ্বিতীয় সময়ে হাযির হলো সে যেন একটা গরু কুরবানী করলো, যে তৃতীয় সময়ে পৌঁছলো সে একটা মেষ কুরবানী করার সওয়াব পেলো, যে হাযির হলো চতুর্থ ওয়াক্তে সে যেন সাদকাহ করলো একটা মোরগ এবং যে হাযির হলো পঞ্চম ওয়াক্তে, একটা ডিম আল্লাহর পথে সাদকাহ করার মত পুণ্য সে লাভ করলো। অতঃপর যখন ইমাম (খুত্বাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে) বের হয় তখন ফেরেশতামণ্ডলী। হাযির হয়ে যিক্র শুনতে থাকেন।" (এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন) জুমআ'র দিন স্বীয় সাধ্য অনুযায়ী ভাল পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, মিসওয়াক করা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পাক-পবিত্র হয়ে জুমআর নামাযের জন্যে আসা উচিত। একটি হাদীসে গোসলের বর্ণনার সাথে সাথেই মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি ব্যবহারের বর্ণনাও রয়েছে। হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করে ও স্বীয় পরিবারের লোকদেরকে সুগন্ধি মাখায় যদি থাকে, অতঃপর ভাল কাপড় পরিধান করে মসজিদে আসে ও ইচ্ছা হলে কিছু নফল নামায পড়ে নেয় এবং কাউকেও কষ্ট দেয় না (অর্থাৎ কারো ঘাড়ের উপর দিয়ে যায় না ও কোন উপবিষ্ট লোককে উঠায় না), অতঃপর ইমাম এসে খুৎবাহ শুরু করলে নীরবে তা শুনতে থাকে, তার এই জুমআহ্ হতে পরবর্তী জুমআ’হ্ পর্যন্ত যত পাপ হয় সবই কাফফারা বা মাফ হয়ে যায়।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)সুনানে আবু দাউদে ও সুনানে ইবনে মাজা হতে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে। সালাম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি মিম্বরে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি দৈনন্দিনের পরিশ্রমের কাপড় ছাড়া দু'টি কাপড় ক্রয় করে নিয়ে জুমআর নামাযের জন্যে খাস বা নির্দিষ্টি করে রাখে তবে ক্ষতি কি?” একথা তিনি ঐ সময় বলেন যখন দেখেন যে, জনগণ সাধারণ কাপড় পরিধান করে রয়েছে। তাই তিনি বলেন যে, শক্তি থাকলে কেন এরূপ করবে না? এ আয়াতে যে আযানের বর্ণনা রয়েছে ওর দ্বারা ঐ আযান উদ্দেশ্য যা ইমামের মিম্বরের উপর বসার পর দেয়া হয়। নবী (সঃ)-এর যুগে এ আযান ছিল। যখন নবী (সঃ) বাড়ী হতে বেরিয়ে এসে মিম্বরে উপবেশন করতেন তখন তাঁর সামনে এই আযান দেয়া হতো। এর পূর্ববর্তী আযান নবী (সঃ)-এর যুগে ছিল না। আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান (রাঃ) শুধু জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এই আযান চালু করেন। সহীহ বুখারী শরীফে রয়েছে যে, নবী (সঃ), হযরত আবু বকর (রাঃ) এবং হযরত উমার (রাঃ)-এর যুগে জুমুআহর আযান শুধু ঐ সময় হতো যখন ইমাম খুৎবাহ দেয়ার জন্যে মিম্বরে বসতেন। হযরত উসমান। (রাঃ)-এর যুগে যখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলো তখন তিনি এই দ্বিতীয় আযান একটি পৃথক স্থানের উপর বলিয়ে নেন। ঐ স্থানটির নাম ছিল যাওরা, মসজিদের নিকটবর্তী সর্বাপেক্ষা উঁচু জায়গা এটাই ছিল। হযরত মাকল (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন ইমাম জুমআর খুত্বার জন্যে বেরিয়ে আসতেন তখনই শুধু মুআযযিন আযান দিতেন। এর পর শুধু তাকবীর দেয়া হতো এবং মুসল্লীগণ নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন। এই সময়েই ক্রয়-বিক্রয় হারাম হয়ে যায়। হযরত উসমান (রাঃ) শুধু লোক জমা করবার জন্যেই প্রথম আযান চালু করেন।জুমআ'হয় হাযির হওয়ার হুকুম শুধু আযাদ-পুরুষদের উপর রয়েছে। নারী, গোলাম ও শিশুদের উপর এ হুকুম নেই। রুগ্ন, মুসাফির এবং অন্যান্য মাযুর ব্যক্তিদের উপরও এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। যেমন ফুরূর কিতাব সমূহের মধ্যে এর প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। অর্থাৎ বেচা-কেনা ত্যাগ করে তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও।উলামায়ে কিরাম এই ব্যাপারে একমত যে, জুমআর দিন যখন আযান হয়ে যাবে তখন এর পরে বেচা-কেনা সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যাবে। তবে দাতা যখন দিবে তখন সেটাও শুদ্ধ হবে কি-না এই ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। প্রকাশ্য আয়াত দ্বারা তো এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, ওটাও শুদ্ধ হবে না। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।এরপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ বেচা-কেনা ছেড়ে আল্লাহর যিকর ও নামাযের দিকে তোমাদের গমন তোমাদের জন্যে শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। হ্যাঁ, তবে যখন তোমাদের নামায পড়া হয়ে যাবে তখন সেখান হতে চলে যাওয়া এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধানে লেগে পড়া তোমাদের জন্যে বৈধ।আরাক ইবনে মালিক (রাঃ) জুমআর নামায হতে ফারেগ হয়ে মসজিদের দরযার উপর দাঁড়িয়ে যেতেন এবং নিম্নের দু'আটি পাঠ করতেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমি আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছি ও আপনার হুকুম অনুযায়ী এই সমাবেশ হতে উঠে এসেছি (ও পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে যাচ্ছি), সুতরাং আপনি আমাকে আপনার অনুগ্রহ দান করুন, আপনি তো সর্বোত্তম রিযকদাতা।” (এটা ইমাম ইবনু আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)এই আয়াতকে সামনে রেখে পূর্বযুগীয় কয়েকজন মনীষী বলেছেন যে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন নামাযের পরে ক্রয়-বিক্রয় করে আল্লাহ তা'আলা তাকে সত্তর গুণ বেশী বরকত দান করবেন।মহান আল্লাহর উক্তিঃ নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে, আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে। অর্থাৎ ক্রয়-বিক্রয়ের অবস্থাতে আল্লাহকে স্মরণ করবে। দুনিয়ার লাভের মধ্যে এমনভাবে নিমগ্ন হয়ে পড়বে না যে, পরকালের লাভের কথা একেবারে ভুলে যাবে। এজন্যেই হাদীসে এসেছেঃ “যে ব্যক্তি কোন বাজারে গিয়ে পাঠ করেঃ (আরবি)অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি প্রত্যেক জিনিসের উপর ক্ষমতাবান।” আল্লাহ তা'আলা তার জন্যে এক লক্ষ পুণ্য লিখে নেন এবং এক লক্ষ পাপ ক্ষমা করে থাকেন। হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, বান্দা তখনই আল্লাহর অধিক যিকরকারী হতে পারে যখন সে দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে সর্বাবস্থাতেই আল্লাহর যিকর করে।

وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا ۚ قُلْ مَا عِنْدَ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التِّجَارَةِ ۚ وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ

📘 জুমআ’হ্‌র দিন মদীনায় ব্যবসার মাল আসার কারণে যেসব সাহাবী খুৎবাহ ছেড়ে দিয়ে উঠে গিয়েছিলেন তাঁদেরকে এখানে আল্লাহ তা'আলা ধমক দিচ্ছেন যে, এই সব লোক যখন কোন ব্যবসা ও খেল-তামাশা দেখে তখন ওদিকে ছুটে যায় এবং নবী (সঃ)-কে দণ্ডায়মান অবস্থায় ছেড়ে দেয়। হযরত মুকাতিল ইবনে হিব্বান (রঃ) বলেন যে, ওটা ছিল দাহইয়া ইবনে খালফিয়্যাহ (রাঃ)-এর ব্যবসার মাল। তিনি জুমআ’রহ দিন ব্যবসার মালসহ মদীনায় আগমন করেন এবং খবর প্রচারের উদ্দেশ্যে ঢোল বাজাতে শুরু করেন। তিনি তখন পর্যন্ত মুসলমান হননি।ঢোলের শব্দ শুনে মাত্র কয়েকজন ছাড়া সবাই মসজিদ হতে বেরিয়ে পড়েন। মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, মাত্র বারো জন লোক বসে থাকেন এবং বাকী সবাই ঐ বাণিজ্যিক কাফেলার দিকে ছুটে যান। ঐ সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। মুসনাদে আবূ ইয়ালায় হযরত জাবির ইবনে আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে যে হাদীসটি বর্ণিত আছে তাতে এও রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “যদি তোমরা সবাই চলে যেতে এবং তোমাদের একজনও বাকী না থাকতো তবে যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! এই উপত্যকা আগুন হয়ে তোমাদের উপর পতিত হতো। “যাঁরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট রয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে হযরত আবূ বকর (রাঃ) এবং হযরত উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। এই আয়াত দ্বারা এটাও জানা গেল যে, জুমআ’র খুৎবা দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। সহীহ মুসলিমে হযরত জাবির ইবনে সামরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) জুমআ’'র দিন দু’টি খুৎবাহ পাঠ করতেন, মাঝে বসতেন, কুরআন কারীম তিলাওয়াত করতেন এবং জনগণকে উপদেশ দিতেন। এখানে একথাটিও স্মরণ রাখার বিষয় যে, কারো কারো মতে এটা হলো ঐ সময়ের ঘটনা যখন নবী (সঃ) জুমআ’হর নামাযের পরে খুৎবাহ পাঠ করতেন। মারাসীলে আবি দাউদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) খুৎবাহর পূর্বে জুমআ’হর নামায পড়তেন, যেমন ঈদের নামায পড়া হয়। একদা তিনি খুৎবাহ দিচ্ছিলেন। এমন সময় একটি লোক এসে বললোঃ “দাহিয়্যাহ্ খালফিয়্যাহ (রাঃ) ব্যবসার মাল নিয়ে এসেছে।” একথা শোনামাত্রই কয়েকজন ছাড়া সবাই উঠে যান। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি জনগণকে জানিয়ে দাও যে, আখিরাতের সাওয়াব, যা আল্লাহর নিকট রয়েছে তা ক্রয়-বিক্রয় ও খেল-তামাশা হতে বহুগুণে উত্তম। আল্লাহর উপর ভরসা করে অনুমতিযুক্ত সময়ে যে ব্যক্তি রিযক তলব করবে, আল্লাহ তাকে উত্তমরূপে রিযক দান করবেন।

هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ

📘 Please check ayah 62:4 for complete tafsir.

وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

📘 Please check ayah 62:4 for complete tafsir.

ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ

📘 সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) জুমআর নামাযে সূরায়ে জুমআহ ও সূরায়ে মুনাফিকূন পাঠ করতেন। ১-৪ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ্ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, সৃষ্ট সব কিছু বাকশক্তি সম্পন্ন হোক বা নির্বাক হোক, সদা-সর্বদা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণায় মগ্ন রয়েছে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “এমন কোন জিনিস নেই যে তাঁর প্রশংসা কীর্তন করে না।” (১৭:৪৪) সমস্ত মাখলুক, আসমানেরই হোক বা যমীনেরই হোক, তাঁর প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনায় মশগুল রয়েছে। তিনি আকাশ ও পৃথিবীর বাদশাহ্ এবং এ দু’টির মধ্যে তিনি পূর্ণভাবে স্বীয় ব্যবস্থাপনা ও হুকুম জারীকারী। তিনি সর্ব প্রকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি হতে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ও পবিত্র। তিনি দোষ মুক্ত এবং সমস্ত উত্তম গুণাবলী ও বিশেষণের সাথে বিশেষিত। তিনি মহাপরাক্রমশালী ও বিজ্ঞানময়। এর তাফসীর কয়েক জায়গায় গত হয়েছে।উম্মী দ্বারা আরবদেরকে বুঝানো হয়েছে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে ও নিরক্ষরদেরকে বলঃ তোমরাও কি আত্মসমর্পণ করেছো? যদি তারা আত্মসমর্পণ করে তবে নিশ্চয়ই তারা পথ পাবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তোমার কর্তব্য শুধু প্রচার করা। আল্লাহ্ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।” (৩:২০) এখানে আরবের উল্লেখ করার উদ্দেশ্য এটা নয় যে, অনারব এর অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং কারণ শুধু এটাই যে, তাদের উপর অন্যদের তুলনায় ইহ্সান ও ইকরাম বহুগুণে বেশী রয়েছে। যেমন আল্লাহ্ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অথাৎ “নিশ্চয়ই এটা তোমার জন্যে ও তোমার সম্প্রদায়ের জন্যে উপদেশ।” (৪৩:৪৪) এখানেও কওমকে খাস করা উদ্দেশ্য নয়। কেননা, কুরআন সারা দুনিয়াবাসীর জন্যে উপদেশ। অনুরূপভাবে আর এক জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তুমি তোমার নিকটতম আত্মীয়দেরকে ভীতি প্রদর্শন কর।" (২৬:২১৪) এখানেও উদ্দেশ্য এটা কখনই নয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর ভীতি প্রদর্শন শুধুমাত্র তাঁর আত্মীয়-স্বজনের জন্যেই খাস, বরং তাঁর সতর্ককরণ তো সাধারণভাবে সবারই জন্যে। মহান আল্লাহ্ ঘোষণা করেনঃ (আরবী)অর্থাৎ “ (হে নবী সঃ!) তুমি বলঃ হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদের সবারই নিকট আল্লাহর রাসূল (রূপে এসেছি)।” (৭:১৫৮) আর এক জায়গায় আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “এর মাধ্যমে আমি তোমাদেরকে ভয় প্রদর্শন করবে এবং তাদেরকেও, যাদের কাছে পৌঁছবে।” (৬:১৯) অনুরূপভাবে কুরআন সম্পর্কে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ (আরবী)অর্থাৎ “সমস্ত দলের মধ্যে যে কেউই এটাকে অস্বীকার করবে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।” (১১:১৭) এই ধরনের আরো বহু আয়াত রয়েছে যেগুলো দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সারা বিশ্ববাসীর জন্যে রাসূল। সমস্ত মাখলুকের তিনি নবী, তারা লাল হোক না কালোই হোক। সূরায়ে আনআমের তাফসীরে আমরা এটা পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছি এবং বহু আয়াত ও হাদীসও আনয়ন করেছি। সুতরাং সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আল্লাহরই জন্যে।এখানে আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, ঐ নিরক্ষর অর্থাৎ আরবদের মধ্যে তিনি স্বীয় রাসূল (সাঃ)-কে প্রেরণ করেন। এটা এই জন্যে যে, যেন হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর দু'আ কবূল হওয়া জানা যায়। তিনি মক্কাবাসীর জন্যে আল্লাহ্ তাআলার নিকট প্রার্থনা করেছিলেন যে, তিনি যেন তাদের মধ্যে তাদেরই মধ্য হতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন, যিনি তাদেরকে আল্লাহর আয়াত পাঠ করে শুনাবেন, তাদেরকে পাপ হতে পবিত্র করবেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবেন। আল্লাহ্ তা'আলা হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর এ দু'আ কবূল করেন।ঐ সময় সমস্ত মাখলুকের জন্যে আল্লাহর নবীর কঠিন প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। আহলে কিতাবের শুধুমাত্র কতক লোক হযরত ঈসা (আঃ)-এর সত্য দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁরা ইফরাত ও তাফরীত হতে বেঁচে ছিলেন। তাঁরা ছাড়া দুনিয়ার সমস্ত মানুষ সত্য দ্বীনকে ভুলে বসেছিল এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টির কাজে জড়িয়ে পড়েছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলা স্বীয় রাসূল (সাঃ)-কে প্রেরণ করলেন। তিনি ঐ নিরক্ষরদেরকে আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনালেন, তাদেরকে পাপ হতে পবিত্র করলেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিলেন। অথচ ইতিপূর্বে তারা ঘোর বিভ্রান্তিতে ছিল।আরবরা হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর দ্বীনের দাবীদার ছিল বটে, কিন্তু অবস্থা এই ছিল যে, তারা ঐ দ্বীনকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও বদল করে ফেলেছিল। তারা ঐ দ্বীনের মধ্যে এতো বেশী পরিবর্তন আনয়ন করেছিল যে, তাওহীদ শিরকে এবং বিশ্বাস সন্দেহে পরিবর্তিত হয়েছিল। তারা নিজেরাই বহু কিছু বিদআত আবিষ্কার করে নিয়ে আল্লাহর দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছিল। অনুরূপভাবে আহলে কিতাবও তাদের কিতাবগুলো বদলিয়ে দিয়েছিল, সাথে সাথে অর্থেরও পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। সুতরাং আল্লাহ তা'আলা হয়রত মুহাম্মাদ (সঃ)-কে আযীমুশ শান শরীয়ত এবং পরিপূর্ণ দ্বীনসহ দুনিয়াবাসীর নিকট প্রেরণ করেন, যেন তিনি এই গোলযোগ মিটিয়ে দিতে পারেন। যেন তিনি আহলে কিতাবের নিকট মহান আল্লাহর আসল আহকাম পৌঁছিয়ে দেন, তাঁর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির আহকাম জনগণকে জানিয়ে দেন, এমন আমল তাদেরকে বাতলিয়ে দেন যা তাদেরকে জানাতের নিকটবর্তী করবে এবং জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ লাভ করাবে, তিনি সমস্ত মাখলুকের জন্যে পথ প্রদর্শক হন, শরীয়তের মূল ও শাখা সবই শিক্ষা দেন, ছোট বড় কোন কথা ও কাজ না ছাড়েন, সবারই সমস্ত শক-সন্দেহ দূর করে দেন এবং জনগণকে এমন দ্বীনের উপর আনয়ন করেন যার মধ্যে সর্বপ্রকারের মঙ্গল বিদ্যমান রয়েছে। এসব মহান দায়িত্ব পালনের জন্যে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর মধ্যে এমন শ্রেষ্ঠত্ব ও বুযুর্গী একত্রিত করেন যা না তার পূর্বে কারো মধ্যে ছিল এবং না তার পরে কারো মধ্যে থাকতে পারে। মহান আল্লাহ সদা-সর্বদা তার উপর দুরূদ ও সালাম বর্ষণ করতে থাকুন!(আরবী)-এ আয়াতের তাফসীরে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর পার্শ্বে বসেছিলাম এমন সময় তার উপর সূরায়ে জুমআহ অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! (আরবী)দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে?” কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিনবার এই প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে হযরত সালমান ফারসীও (রঃ) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর হাতখানা হযরত সালমান ফারসীর (রাঃ) উপর রেখে বললেনঃ “ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট হতো তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক বা কয়েক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেতো।” (এ হাদীসটি ইমাম আবু আবদিল্লাহ বুখারী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)এ রিওয়াইয়াত দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, এটা মাদানী সূরা এবং এটাও প্রমাণিত হচ্ছে যে, হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) সারা দুনিয়াবাসীর জন্যে নবী, শুধু আরববাসীদের জন্যে নয়। কেননা, তিনি এই আয়াতের তাফসীরে পারস্যবাসীদের সম্পর্কে উপরোক্তে মন্তব্য করেন। এ জন্যেই তো রাসূলুল্লাহ (সঃ) পারস্য ও রোমের সম্রাটদের নিকট ইসলামের দাওয়াতনামা প্রেরণ করেছিলেন। হযরত মুজাহিদ (রঃ) প্রমুখ গুরুজনও বলেন যে, এর দ্বারা অনারবদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর ঈমান এনেছে এবং তাঁর অহীর সত্যতা স্বীকার করেছে।হযরত সাহল ইবনে সা'দ সায়েদী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ “এখন হতে নিয়ে বংশানুক্রমে তিন পুরুষ (পিড়ী) পর্যন্ত আগমনকারী আমার উম্মতের নারী ও পুরুষরা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” অতঃপর তিনি ....(আরবী) এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেন। (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)‘তিনি (আল্লাহ) পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।' অর্থাৎ তিনি স্বীয় শরীয়ত ও তকদীর নির্ধারণে প্রবল পরাক্রম ও মহাবিজ্ঞানময়।মহান আল্লাহর উক্তিঃ এটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা এটা তিনি দান করেন। আল্লাহ তো বড় অনুগ্রহশীল।' অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-কে এরূপ আযীমুশ শান নবুওয়াত দান করা এবং এই মহান অনুগ্রহে অনুগৃহীত করা আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ অনুগ্রহ। তিনি তাঁর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা দান করে থাকেন। তিনি বড়ই অনুগ্রহশীল।

مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرَاةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًا ۚ بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

📘 Please check ayah 62:8 for complete tafsir.

قُلْ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ هَادُوا إِنْ زَعَمْتُمْ أَنَّكُمْ أَوْلِيَاءُ لِلَّهِ مِنْ دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ

📘 Please check ayah 62:8 for complete tafsir.

وَلَا يَتَمَنَّوْنَهُ أَبَدًا بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ ۚ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ

📘 Please check ayah 62:8 for complete tafsir.

قُلْ إِنَّ الْمَوْتَ الَّذِي تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُ مُلَاقِيكُمْ ۖ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ

📘 ৫-৮ নং আয়াতের তাফসীর: এই আয়াতগুলোতে ইয়াহূদীদেরকে নিন্দে করা হচ্ছে যে, তাদেরকে তাওরাত। প্রদান করা হয় এবং আমল করার জন্যে তারা তা গ্রহণ করে, কিন্তু আমল করেনি। ঘোষিত হচ্ছে যে, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে পুস্তক বহনকারী গর্দভ। যদি গর্দভের উপর কিতাবের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয় তবে সে তো এটা বুঝতে পারবে যে, তার উপর বোঝা রয়েছে, কিন্তু কি বোঝা রয়েছে তা সে মোটেই বুঝতে পারবে না। অনুরূপভাবে এই ইয়াহূদীরা বাহ্যিকভাবে তো তাওরাতের শব্দগুলো মুখে উচ্চারণ করছে, কিন্তু মতলব কিছুই বুঝে না। এর উপর তারা আমল তো করেই না, এমন কি একে পরিবর্তন পরিবর্ধন করে ফেলছে। সুতরাং প্রকতপক্ষে তারা এ নির্বোধ ও অবুঝ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট। কেননা, মহান আল্লাহ এদেরকে বোধশক্তিই দান করেননি। কিন্তু এ লোকগুলোকে তো তিনি বোধশক্তি দিয়েছেন, অথচ তারা তা ব্যবহার করে না ও কাজে লাগায় না। এ জন্যেই অন্য আয়াতে বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত, বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্ট! তারাই গাফিল।” (৭:১৭৯)এখানে বলা হচ্ছে যে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করে ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের দৃষ্টান্ত কতই না নিকৃষ্ট। তারা অত্যাচারী এবং আল্লাহ তা'আলা অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি জুমআর দিন ইমামের খুৎবাহ দান অবস্থায় কথা বলে সে পুস্তক বহনকারী গর্দভের মত এবং যে ব্যক্তি তাকে বলেঃ চুপ কর তার জুমআ'হ্ হয় না।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ “হে ইয়াহুদীগণ! যদি তোমরা মনে কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু, অন্য কোন মানব গোষ্ঠী নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।' অর্থাৎ হে ইয়াহূদীদের দল! যদি তোমাদের দাবী এই হয় যে, তোমরা সত্যের উপর রয়েছে আর হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এবং তাঁর সহচরবৃন্দ অসত্যের উপর রয়েছেন তবে তোমর প্রার্থনা করঃ আমাদের দুই দলের মধ্যে যারা অসত্যের উপর রয়েছে তাকে যেন আল্লাহ মৃত্যু দান করেন।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “কিন্তু তাদের হস্ত যা অগ্রে প্রেরণ করেছে তার কারণে কখনো মত্য কামনা করবে না। অর্থাৎ যারা যে কুফরী, যুলম ও পাপের কাজ করেছে সেই কারণে তারা কখনো মৃত্যু কামনা করবে না।আল্লাহ তা'আলা যালিমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত।সূরায়ে বাকারার নিম্নের আয়াতগুলোর তাফসীরে ইয়াহুদীদের সাথে। মুবাহালার পূর্ণ বর্ণনা গত হয়েছেঃ “বলঃ যদি আল্লাহর নিকট পরকালের বাসস্থান অন্য লোকে ব্যতীত বিশেষভাবে শুধু তোমাদের জন্যেই হয় তবে তোমরা মুত্যু কামনা কর- যদি সত্যবাদী হও। কিন্তু তাদের কৃতকর্মের জন্যে তারা কখনো ওটা কামনা করবে না এবং আল্লাহ যালিমদের সম্বন্ধে অবহিত। তুমি অবশ্যই তাদেরকে জীবনের প্রতি সমস্ত মানুষ, এমনকি মুশরিকদের অপেক্ষা অধিক লোভী দেখতে পাবে। তাদের প্রত্যেকে সহস্র বছর বাঁচার আকাঙ্ক্ষা করে। কিন্তু দীর্ঘায়ু তাদেরকে শাস্তি হতে দূরে রাখতে পারবে না। তারা যা করে আল্লাহ ওর দ্রষ্টা।” সূরায়ে আলে ইমরানের নিম্নের আয়াতে খৃষ্টানদের সাথে মুবাহালার বর্ণনা রয়েছেঃ“তোমার নিকট জ্ঞান আসার পর যে কেউ এ বিষয়ে তোমার সাথে তর্ক করে তাকে বলঃ এসো, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদেরকে ও তোমাদের পুত্রদেরকে, আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে, আমাদের নিজেদেরকে ও তোমাদের নিজেদেরকে; অতঃপর আমরা বিনীত আবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের উপর দিই আল্লাহর লানত।” আর মুশরিকদের সাথে মুবাহালার বর্ণনা রয়েছে সূরায়ে মারইয়ামের নিম্নের আয়াতে “বলঃ যারা বিভ্রান্তিতে রয়েছে, দয়াময় তাদেরকে প্রচুর ঢিল দিবেন।” হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, আবু জেহেল (আল্লাহ তা'আলা তার প্রতি লা'নত বর্ষণ করুন!) বলেঃ “আমি যদি মুহাম্মাদ (সঃ)-কে কা’বার নিকট দেখতে পাই তবে অবশ্যই তার গর্দান পরিমাপ করবে।” রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট এ খবর পৌঁছলে তিনি বলেনঃ “যদি সে এরূপ করতো তবে অবশ্যই ফেরেশতাগণ জনগণের চোখের সামনে তাকে পাকড়াও করতেন। আর যদি ইয়াহূদীরা মৃত্যু কামনা করতো তবে অবশ্যই তারা মরে যেতো এবং জাহান্নামে তাদের জায়গা দেখে নিতো। আর আল্লাহর সাথে যারা মুবাহালা করতে চেয়েছিল তারা যদি মুবাহালার জন্যে বের হতো তবে অবশ্যই তারা এমন অবস্থায় ফিরে আসতো যে, তাদের পরিবারবর্গ এবং মাল-ধন তারা। পেতো না।” (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম বুখারী (রঃ), ইমাম তিরমিযী (রঃ) এবং ইমাম নাসাঈও (রঃ) বর্ণনা করেছেন)আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলার উক্তিঃ বলঃ (হে মুহাম্মাদ সঃ)! তোমরা যে মৃত্যু হতে পলায়ন কর সেই মৃত্যুর সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হবেই। অতঃপর তোমরা প্রত্যানীত হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহর নিকট এবং তোমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে যা তোমরা করতে। যেমন সূরায়ে নিসার মধ্যে আল্লাহ তা'আলার উক্তি রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা যেখানেই থাকো না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, সুউচ্চ ও সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।”তিবরানী (রঃ)-এর মু’জাম গ্রন্থে হযরত সমরা' (রাঃ) হতে একটি মারফ হাদীস বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি মৃত্যু হতে পলায়ন করে তার দৃষ্টান্ত হলো ঐ খেকশিয়াল যার কাছে ভূমি তার প্রদত্ত ঋণ চায়। তখন সে দ্রুত বেগে পালাতে শুরু করে। শেষে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তার গর্তে ঢুকে পড়ে। তখন ভূমি তাকে বলেঃ “হে খেকশিয়াল! আমাকে আমার ঋণ দিয়ে দাও।” একথা শুনে সে পুনরায় লেজগুটিয়ে ভীষণ বেগে দৌড়াতে শুরু করে। অবশেষে তার গর্দান ভেঙ্গে যায় এবং সে মৃত্যুমুখে পতিত হয়।”

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ

📘 Please check ayah 62:10 for complete tafsir.