🕋 تفسير سورة المرسلات
(Al-Mursalat) • المصدر: BN-TAFSEER-IBN-E-KASEER
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالْمُرْسَلَاتِ عُرْفًا
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
وَإِذَا الْجِبَالُ نُسِفَتْ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
وَإِذَا الرُّسُلُ أُقِّتَتْ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
لِأَيِّ يَوْمٍ أُجِّلَتْ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
لِيَوْمِ الْفَصْلِ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
وَمَا أَدْرَاكَ مَا يَوْمُ الْفَصْلِ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 সহীহ বুখারীতে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে মিনার গুহায় ছিলাম এমতাবস্থায় (আরবি) সূরাটি অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) সূরাটি তিলাওয়াত করছিলেন এবং আমি তা শুনে মুখস্থ করছিলাম। হঠাৎ একটি সর্প আমাদের উপর লাফিয়ে পড়ে। তখন নবী (সঃ) বলেনঃ “সাপটিকে মেরে ফেলো।” আমরা তাড়াতাড়ি করে সাপটিকে মারতে গেলাম, কিন্তু দেখি যে, সে পালিয়ে গেছে। তখন নবী (সঃ) বললেনঃ “সে তোমাদের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেয়েছে এবং তোমরাও তার অনিষ্ট হতে রক্ষা পেয়েছো।”মুসনাদে আহমাদে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁর মাতা (হযরত উম্মে ফযল রাঃ) নবী (সঃ)-কে (আরবি) সূরাটি মাগরিবের নামাযে পাঠ করতে শুনতে পান। অন্য হাদীসে আছে যে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে এ সূরাটি পড়তে শুনে হযরত উম্মে ফযল (রাঃ) বলেনঃ “হে আমার প্রিয় বৎস! তুমি এই সূরাটি পাঠ করে আমাকে এ কথাটি স্মরণ করিয়ে দিলে যে, আমি শেষ বার রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এ সূরাটি মাগরিবের নামাযে পাঠ করতে শুনেছি।” (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদ, সহীহ বুখারী এবং সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে)
১-১৫ নং আয়াতের তাফসীর
কতকগুলো বুযুর্গ সাহাবী, তাবেয়ী প্রমুখ হতে তো বর্ণিত আছে যে, উল্লিখিত শপথগুলো এসব গুণ বিশিষ্ট ফেরেশতাদের নামে করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন যে, প্রথম চারটি শপথ হলো বায়ুর এবং পঞ্চমটি হলো ফেরেশতাদের। (আরবি) দ্বারা ফেরেশতারা উদ্দেশ্য কি বায়ু উদ্দেশ্য এ ব্যাপারে কেউ কেউ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা মুলতবি রেখেছেন। আর (আরবি)-এর ব্যাপারে বলেন যে, এর দ্বারা বায়ু উদ্দেশ্য। কেউ (আরবি)-এর ব্যাপারে এটাই বলেছেন, কিন্তু (আরবি)-এর ব্যাপারে কোন ফায়সালা করেননি। এটাও বলা হয়েছে যে, (আরবি) দ্বারা বৃষ্টি উদ্দেশ্য। বাহ্যতঃ তো এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, (আরবি) দ্বারা বায়ু উদ্দেশ্য। যেমন অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি বায়ু প্রবাহিত করে থাকি যা মেঘকে (বৃষ্টিতে) ভারী করে থাকে।" (১৫:২২) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “আল্লাহ তিনিই যিনি তাঁর রহমত (বর্ষণের)-এর পূর্বে সুসংবাদদাতা হিসেবে ঠাণ্ডা বায়ু প্রবাহিত করে থাকেন।” (আরবি) দ্বারাও বায়ুকে বুঝানো হয়েছে। এটা হচ্ছে নরম, হালকা এবং মৃদু মন্দ বায়ু। এটা সামান্য জোরে প্রবহমান এবং অল্প শব্দকারী বায়ু। (আরবি) দ্বারাও উদ্দেশ্য হলো বায়ু, যা মেঘমালাকে আকাশের চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেয় এবং আল্লাহ পাক যেদিকে হুকুম করেন সেই দিকে নিয়ে যায়। (আরবি) এবং (আরবি) দ্বারা অবশ্যই ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা আল্লাহ তা’আলার নির্দেশক্রমে রাসূলদের কাছে ওহী নিয়ে আসেন। যার দ্বারা সত্য-মিথ্যা, হালাল-হারাম এবং গুমরাহী ও হিদায়াতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি হয়, যাতে লোকদের ওযরের কোন অবকাশ না থাকে এবং সত্য প্রত্যাখ্যানকারীরা সতর্ক হয়ে যায়।এই শপথগুলোর পর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যেই দিনের তোমাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে, যেই দিন তোমরা প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত সবাই নিজ নিজ কবর হতে পুনর্জীবিত হয়ে উথিত হবে ও নিজেদের কৃতকর্মের ফল পাবে, পূণ্যকর্মের পুরস্কার ও পাপকর্মের শাস্তি প্রাপ্ত হবে, শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে এবং এক সমতল ময়দানে তোমরা সবাই একত্রিত হবে, এই ওয়াদা নিশ্চিত রূপে সত্য, এটা অবশ্যই হবে। ঐদিন তারকারাজি কিরণহীন হয়ে যাবে এবং ওগুলোর ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যাবে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “যখন নক্ষত্ররাজি খসে পড়বে।” (৮১:২) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যখন নক্ষত্ররাজি বিক্ষিপ্তভাবে ঝরে পড়বে।” (৮২:২)। মহান আল্লাহ বলেনঃ যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এবং পবর্তমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে উড়ে যাবে। এমনকি ওর কোন নাম নিশানাও থাকবে না। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা তোমাকে পর্বতসমূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলে দাও- আমার প্রতিপালক ওগুলোকে সমূলে উৎপাটিত করে বিক্ষিপ্ত করে দিবেন।” (২০:১০৫)ইরশাদ হচ্ছেঃ রাসূলগণকে যখন নিরূপিত সময়ে উপস্থিত করা হবে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “যেই দিন আল্লাহ রাসূলদেরকে একত্রিত করবেন।” (৫:১০৯) যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “যমীন স্বীয় প্রতিপালকের নূরে চমকিত হয়ে উঠবে, আমলনামা আনয়ন করা হবে এবং নবীগণ ও সাক্ষীগণকে উপস্থিত করা হবে। ও ইনসাফের সাথে ফায়সালা করা হবে এবং তারা অত্যাচারিত হবে না।” (৩৯:৬৯) এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ এই সমুদয় স্থগিত রাখা হয়েছে কোন্ দিবসের জন্যে? বিচার দিবসের জন্যে। বিচার দিবস সম্বন্ধে তুমি কী জান? সেই দিন দুর্ভোগ মিথ্যা আরোপকারীদের জন্যে। ঐ রাসূলদেরকে থামিয়ে রাখা হয়েছিল এই জন্যে যে, কিয়ামতের দিন ফায়সালা করা হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “তুমি কখনো মনে করো না যে, আল্লাহ তাঁর রাসূলদের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী। আল্লাহ পরাক্রমশালী, দণ্ড বিধায়ক। যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমণ্ডলীও , আর মানুষ উপস্থিত হবে আল্লাহর সম্মুখে, যিনি এক, পরাক্রমশালী।” (১৪:৪৭-৪৮) ঐদিনকেই এখানে ফায়সালার দিন বলা হয়েছে। স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! আমার জানিয়ে দেয়া ছাড়া তুমিও ঐ দিনের হাকীকত সম্বন্ধে অবগত হতে পার না। ঐদিনকে অস্বীকারকারীর জন্যে বড় দুর্ভোগ! একটি হাদীসে এটাও গত হয়েছে যে, অয়েল’ জাহান্নামের একটি উপত্যকার নাম। কিন্তু হাদীসটি বিশুদ্ধ নয়।
أَلَمْ نُهْلِكِ الْأَوَّلِينَ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
ثُمَّ نُتْبِعُهُمُ الْآخِرِينَ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِالْمُجْرِمِينَ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
فَالْعَاصِفَاتِ عَصْفًا
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
أَلَمْ نَخْلُقْكُمْ مِنْ مَاءٍ مَهِينٍ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
فَجَعَلْنَاهُ فِي قَرَارٍ مَكِينٍ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
إِلَىٰ قَدَرٍ مَعْلُومٍ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
فَقَدَرْنَا فَنِعْمَ الْقَادِرُونَ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
أَلَمْ نَجْعَلِ الْأَرْضَ كِفَاتًا
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
أَحْيَاءً وَأَمْوَاتًا
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
وَجَعَلْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ شَامِخَاتٍ وَأَسْقَيْنَاكُمْ مَاءً فُرَاتًا
📘 Please check ayah 77:28 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 ১৬-২৮ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তা'আলা কাফিরদেরকে লক্ষ্য করে বলেনঃ তোমাদের পূর্বেও যারা আমার রাসূলদের রিসালাতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তাদেরকে আমি তচনচ করেছি। তাদের পরে অন্যেরা এসেছিল এবং তারাও অনুরূপ কাজ করেছিল, ফলে তাদেরকেও আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। আমি অপরাধীদের প্রতি এরূপই করে থাকি। কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসকারীদের কি দুর্গতিই না হবে!অতঃপর স্বীয় মাখলূককে মহান আল্লাহ নিজের অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন এবং কিয়ামত অস্বীকারকারীদের সামনে দলীল পেশ করছেন যে, তিনি তাদেরকে তুচ্ছ পানি (শুক্র) হতে সৃষ্টি করেছেন যা বিশ্ব সৃষ্টিকর্তার সামনে ছিল অতি নগণ্য জিনিস। যেমন সূরা ইয়াসীনের তাফসীরে হযরত বিশর ইবনে জাহহাশ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ “হে আদম সন্তান! তুমি আমাকে অপারগ করতে পারবে? অথচ আমি তোমাকে এরূপ (তুচ্ছ ও নগণ্য) জিনিস দিয়ে সৃষ্টি করেছি!”মহান আল্লাহ বলেনঃ অতঃপর আমি ওটাকে স্থাপন করেছি নিরাপদ আধারে। অর্থাৎ ঐ পানিকে আমি রেহেমে জমা করেছি যা ঐ পানির জমা হওয়ার জায়গা। ওটাকে আমি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছি ও নিরাপদে রেখেছি। অর্থাৎ ছয় মাস বা নয় মাস। আমি এটাকে গঠন করেছি পরিমিতভাবে, কত নিপুণ স্রষ্টা আমি! এরপরেও যদি ঐ দিনকে বিশ্বাস না কর তবে বিশ্বাস রেখো যে, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে বড়ই আফসোস ও দুঃখ করতে হবে।এরপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ আমি যমীনের উপর কি এই খিদমত অৰ্পণ করিনি যে, সে তোমাদের জীবিতাবস্থায় তোমাদেরকে স্বীয় পৃষ্ঠে বহন করছে এবং তোমাদের মৃত্যুর পরেও তোমাদেরকে নিজের পেটের মধ্যে লুকিয়ে রাখছে? তারপর যমীন যেন হেলা-দোলা করতে না পারে তজ্জন্যে আমি ওতে সুউচ্চ পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তোমাদেরকে দিয়েছি মেঘ হতে বর্ষিত পানি এবং ঝরণা হতে প্রবাহিত সুপেয় পানি। এসব নিয়ামত প্রাপ্তির পরেও যদি তোমরা আমার কথাকে অবিশ্বাস কর তবে জেনে রেখো যে, এমন এক সময় আসছে যখন তোমরা দুঃখ ও আফসোস করবে, কিন্তু তখন তা কোনই কাজে আসবে না!
انْطَلِقُوا إِلَىٰ مَا كُنْتُمْ بِهِ تُكَذِّبُونَ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
وَالنَّاشِرَاتِ نَشْرًا
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
انْطَلِقُوا إِلَىٰ ظِلٍّ ذِي ثَلَاثِ شُعَبٍ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
لَا ظَلِيلٍ وَلَا يُغْنِي مِنَ اللَّهَبِ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
إِنَّهَا تَرْمِي بِشَرَرٍ كَالْقَصْرِ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
كَأَنَّهُ جِمَالَتٌ صُفْرٌ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
هَٰذَا يَوْمُ لَا يَنْطِقُونَ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
وَلَا يُؤْذَنُ لَهُمْ فَيَعْتَذِرُونَ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
هَٰذَا يَوْمُ الْفَصْلِ ۖ جَمَعْنَاكُمْ وَالْأَوَّلِينَ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
فَإِنْ كَانَ لَكُمْ كَيْدٌ فَكِيدُونِ
📘 Please check ayah 77:40 for complete tafsir.
فَالْفَارِقَاتِ فَرْقًا
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 ২৯-৪০ নং আয়াতের তাফসীর
যে কাফিররা কিয়ামতের দিনকে, পুরস্কার ও শাস্তিকে এবং জান্নাত ও জাহান্নামকে অবিশ্বাস করতো, তাদেরকে কিয়ামতের দিন বলা হবেঃ তোমরা দুনিয়ায় যে শাস্তি ও জাহান্নামকে মানতে না তা আজ বিদ্যমান রয়েছে। তাতে প্রবেশ কর। ওর অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত রয়েছে এবং উঁচু হয়ে হয়ে তাতে তিনটি টুকরো হয়ে গেছে। সাথে সাথে ধুম্রও উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে, ফলে মনে হচ্ছে যেন নীচে ছায়া পড়ে গেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওটা ছায়াও নয় এবং এটা আগুনের তেজস্বিতা বা প্রখরতাকে কিছু কমিয়েও দিচ্ছে না। এই জাহান্নাম এতো তেজ, গরম এবং অধিক অগ্নি বিশিষ্ট যে, এর যে অগ্নি স্ফুলিঙ্গগুলো উড়ে যায় সেগুলো এক একটা দুর্গের মত এবং বড় বড় গাছের লম্বা চওড়া কাণ্ডের মত। দর্শকদের ওগুলোকে মনে হয় যেন কালো রঙের উট বা নৌকার রঞ্জু অথবা তামার টুকরো।হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “আমরা শীতকালে তিন হাত বা তার চেয়ে বেশী লম্বা কাষ্ঠ নিয়ে উঁচু করে ধরতাম এবং ওটাকে আমরা ‘কাসর’ বলতাম।" (এটা ইমাম বুখারী (রঃ) বর্ণনা করেছেন) নৌকার রশিগুলো একত্রিত করলে ওগুলো উঁচু দেহ বিশিষ্ট মানুষের সমান হয়ে যায়। এখানে এটাই উদ্দেশ্য। ঐদিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের জন্যে। আজকের দিনে অর্থাৎ কিয়ামত দিবসে তারা কিছু বলতেও পারবে না এবং তাদেরকে কোন ওযর পেশ করার অনুমিতও দেয়া হবে না। কেননা, তাদের যুক্তি-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েই গেছে এবং যালিমদের উপর আল্লাহর কথা সাব্যস্ত হয়ে গেছে। সুতরাং আর তাদের কোন কথা বলার অনুমতি নেই।কুরআন কারীমে কাফিরদের কথা বলা এবং ওযর পেশ করারও বর্ণনা রয়েছে। সুতরাং তখন ভাবার্থ হবে এই যে, হুজ্জত বা যুক্তি-প্রমাণ কায়েম হয়ে যাওয়ার পূর্বে তারা ওযর ইত্যাদি পেশ করবে। অতঃপর যখন সবকিছু ভেঙ্গে দেয়া হবে এবং যুক্তি-প্রমাণ পেশ হয়ে যাবে তখন কথা বলার এবং ওযর-আপত্তি পেশ করার আর কোন সুযোগ থাকবে না। মোটকথা, হাশরের ময়দানের বিভিন্ন পরিস্থিতি এবং জনগণের বিভিন্ন অবস্থা হবে। কোন সময় এটা হবে এবং কোন সময় ওটা হবে। এজন্যেই এখানে প্রত্যেক কথা বা বাক্যের শেষে অবিশ্বাসকারীদের দুর্ভোগের খবর দেয়া হয়েছে। এরপর ইরশাদ হচ্ছেঃ এটাই ফায়সালার দিন। এখানে আমি তোমাদেরকে এবং পূর্বদেরকে অর্থাৎ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলকেই একত্রিত করেছি। এখন আমার বিরুদ্ধে তোমাদের কোন অপকৌশল থাকলে তা প্রয়োগ কর। এটা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলার তাঁর বান্দাদের প্রতি কঠোর ধমক সূচক বাণী। তিনি কিয়ামতের দিন স্বয়ং কাফিরদেরকে বলবেনঃ তোমরা এখন নীরব রয়েছে কেন? আজ তোমাদের চালাকী-চতুরতার, সাহসিকতা এবং চক্রান্ত কোথায় গেল? দেখো, আজ আমি আমার ওয়াদা অনুযায়ী তোমাদের সকলকেই এক ময়দানে একত্রিত করেছি। যদি কোন কৌশল করে আমার হাত হতে ছুটে যাবার কোন পথ বের করতে পার তবে তাতে কোন ত্রুটি করো না। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “হে দানব ও মানব! আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করতে পার তবে অতিক্রম কর, কিন্তু তোমরা তা পারবে না শক্তি ব্যতিরেকে।” (৫৫:৩৩) অন্য এক জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তোমরা তাঁর (আল্লাহর) কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না।” হযরত আবূ আবদিল্লাহ জাদালী (রঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা আমি বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে দেখি যে, সেখানে হযরত উবাদাহ ইবনে সামিত (রাঃ), হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) এবং হযরত কা'ব আহবার (রাঃ) বসে রয়েছেন এবং পরস্পর আলাপ আলোচনা করছেন। আমিও তাদের পাশে বসে পড়লাম। হযরত উবাদাহ ইবনে সামিত (রাঃ) বললেন যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলকেই এক সমতল ও পরিষ্কার ময়দানে একত্রিত করবেন। একজন আহ্বানকারী এসে সকলকে সতর্ক করে দিবেন। অতঃপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলবেনঃ ‘এটাই ফায়সালার দিন, আমি তোমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের একত্রিত করেছি। তোমাদের আমার বিরুদ্ধে কোন অপকৌশল থাকলে তা প্রয়োগ কর। জেনে রেখো যে, আজ কোন অহংকারী, উদ্ধত, অস্বীকারকারী এবং মিথ্যা প্রতিপন্নকারী আমার পাকড়াও হতে বাঁচতে পারে না। আর পারে না কোন নাফরমান শয়তান আমার আযাব হতে বাচতে।' তখন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেনঃ আমিও আপনাদেরকে একটি হাদীস শুনাচ্ছি। সেই দিন জাহান্নাম স্বীয় গ্রীবা উঁচু করে লোকদের মাঝে তা পৌঁছিয়ে দিয়ে উচ্চস্বরে বলবেঃ হে লোক সকল! তিন শ্রেণীর লোককে এখনই পাকড়াও করার আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি তাদেরকে ভালরূপেই চিনি। কোন পিতা তার পুত্রকে এবং কোন ভাই তার ভাইকে ততটা চিনে না যতটা আমি তাদেরকে চিনি। আজ তারা না নিজেরা আমার হতে লুকাতে পারে, না অন্য কেউ তাদেরকে আমার হতে লুকিয়ে রাখতে পারে। একশ্রেণীর লোক হলো ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক বানিয়ে নিয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক হলো ঐ ব্যক্তি যে অবিশ্বাসকারী ও অহংকারী। আর তৃতীয় শ্রেণী হলো প্রত্যেক নাফরমান শয়তান। অতঃপর সে ঘুরে ঘুরে বেছে বেছে এই গুণাবলীর লোকদেরকে হাশরের ময়দান হতে বের করে নিবে এবং এক এক করে ধরে ধরে নিজের মধ্যে ফেলে দিবে। হিসাব গ্রহণের চল্লিশ বছর পূর্বেই তারা জাহান্নামের পেটে চলে যাবে।" (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবী হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي ظِلَالٍ وَعُيُونٍ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
وَفَوَاكِهَ مِمَّا يَشْتَهُونَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
كُلُوا وَتَمَتَّعُوا قَلِيلًا إِنَّكُمْ مُجْرِمُونَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ ارْكَعُوا لَا يَرْكَعُونَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
📘 Please check ayah 77:50 for complete tafsir.
فَالْمُلْقِيَاتِ ذِكْرًا
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
فَبِأَيِّ حَدِيثٍ بَعْدَهُ يُؤْمِنُونَ
📘 ৪১-৫০ নং আয়াতের তাফসীর
উপরে অসৎ লোকদের শাস্তির বর্ণনা দেয়া হয়েছে, এখন এখানে সৎকর্মশীলদের পুরস্কারের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। যারা মুত্তাকী ও পরহেযগার ছিল, আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীতে সদা লিপ্ত থাকতো, ফারায়েয ও ওয়াজেবাতের পাবন্দ থাকতো, আল্লাহর নাফরমানী ও হারাম কার্যাবলী হতে বেঁচে থাকতো, তারা কিয়ামতের দিন জান্নাতে থাকবে। এখানে নানা প্রকারের নহর জারী রয়েছে। পাপী ও অপরাধীরা কালো ও দুর্গন্ধময় ধূম্রের মধ্যে পরিবেষ্টিত থাকবে। আর পুণ্যবানরা জান্নাতের ঘন, ঠাণ্ডা ও পরিপূর্ণ ছায়ায় আরামে শুয়ে থাকবে। তাদের সামনে দিয়ে নির্মল প্রস্রবণ প্রবাহিত হবে। বিভিন্ন প্রকারের ফল-ফলাদি ও তরি-তরকারী বিদ্যমান থাকবে যেটা খাবার মন চাইবে খেতে পারবে। কোন বাধা প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। না কমে যাবার ভয় থাকবে, না ধ্বংস, না শেষ হয়ে যাবার আশংকা থাকবে। তারপর উৎসাহ বাড়াবার জন্যে ও মনের খুশী বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বার বার বলবেনঃ হে আমার প্রিয় বান্দারা! হে জান্নাত বাসীরা! তোমরা মনের আনন্দে তৃপ্তির সাথে পানাহার করতে থাকো। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। হ্যাঁ, তবে মিথ্যা আরোপকারীদের জন্যে আজ বড়ই দুর্ভোগ!এরপর অবিশ্বাসকারীদেরকে ধমকের সুরে বলা হচ্ছেঃ তোমরা পানাহার কর ও ভোগ করে নাও অল্প কিছু দিন, তোমরা তো অপরাধী। সুতরাং সত্বরই এসব নিয়ামত শেষ ও ধ্বংস হয়ে যাবে এবং তোমাদেরকে মৃত্যুর ঘাটে অবতরণ করতে হবে। অতঃপর পরিণামে তোমরা জাহান্নামেই যাবে। তোমাদের দুষ্কর্ম ও অন্যায় কার্যকলাপের শাস্তি আল্লাহ তা'আলার নিকট তৈরী রয়েছে। পাপীরা তাঁর দৃষ্টির অন্তরালে নেই। যারা কিয়ামতকে বিশ্বাস করে না, তাঁর নবী (সঃ)-কে মানে না এবং তাঁর ওহীকে অবিশ্বাস করে, তারা কিয়ামতের দিন কঠিন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জন্যে বড়ই দুর্ভোগ! যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ “অল্প কিছুদিন আমি তাদেরকে সুখ ভোগ করতে দিবো, অতঃপর তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তির দিকে আসতে বাধ্য করবো” (৩১:২৪) অন্য এক জায়গায় আল্লাহ্ পাক বলেনঃ (আরবী)অর্থাৎ “নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে তারা সফলকাম হয়। দুনিয়ায় তারা সামান্য কয়েক দিন সুখ ভোগ করবে মাত্র, অতঃপর আমার নিকটই তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল। তাদের কুফরীর কারণে আমি তাদেরকে কঠিন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাবো।” (১০:৬৯-৭০) এরপর মহা মহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এই অজ্ঞ অস্বীকারকারীদেরকে যখন বলা হয়ঃ তোমরা আল্লাহর সামনে নত হয়ে যাও, জামাআতের সাথে নামায আদায় কর, তখন তা হতেও তারা বিমুখ হয়ে যায় এবং ওটাকে ঘৃণার চক্ষে দেখে ও অহংকারের সাথে অস্বীকার করে বসে। এই মিথ্যা আরোপকারীদের জন্যে কিয়ামতের দিন বড়ই দুর্ভোগ ও বিপদ রয়েছে।এরপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ এ লোকগুলো যখন এই পাক কালামের উপর ঈমান আনয়ন করছে না তখন আর কোন্ কালামের উপর তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে! যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি)অর্থাৎ তারা আল্লাহর উপর ও তার আয়াতসমূহের উপর যখন ঈমান আনছে তখন আর কোন্ কালামের উপর তারা ঈমান আনয়ন করবে!” (৪৫:৬)মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি (আরবি) সূরাটি পাঠ করবে এবং (আরবি)-এ আয়াতটিও পড়বে তখন সে যেন বলেঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি আল্লাহর উপর এবং তিনি যা অবতীর্ণ করেছেন তার উপর ঈমান এনেছি”। এ হাদীসটি সূরা কিয়ামাহর তাফসীরে গত হয়েছে।
عُذْرًا أَوْ نُذْرًا
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَوَاقِعٌ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
فَإِذَا النُّجُومُ طُمِسَتْ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.
وَإِذَا السَّمَاءُ فُرِجَتْ
📘 Please check ayah 77:15 for complete tafsir.