slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris slot qris bokep indo
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير سورة الطلاق

(At-Talaq) • المصدر: BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاءَ فَطَلِّقُوهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَأَحْصُوا الْعِدَّةَ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ رَبَّكُمْ ۖ لَا تُخْرِجُوهُنَّ مِنْ بُيُوتِهِنَّ وَلَا يَخْرُجْنَ إِلَّا أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ ۚ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ ۚ وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ ۚ لَا تَدْرِي لَعَلَّ اللَّهَ يُحْدِثُ بَعْدَ ذَٰلِكَ أَمْرًا

📘 হে নবী! (তোমার উম্মতকে বল,) তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর[১] তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে,[২] ইদ্দতের হিসাব রেখো[৩] এবং তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করো; তোমরা তাদেরকে তাদের বাসগৃহ হতে বহিষ্কার করো না[৪] এবং তারা নিজেও যেন বের না হয়; [৫] যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়।[৬] এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা। আর যে আল্লাহর সীমা লংঘন করে, সে নিজের উপরই অত্যাচার করে।[৭] তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এর পর কোন উপায় করে দেবেন।[৮] [১] নবী করীম (সাঃ)-কে সম্বোধন করা হয়েছে তাঁর সম্মান ও মর্যাদার কারণে। নচেৎ এই নির্দেশ উম্মতকে দেওয়া হচ্ছে। অথবা সম্বোধন তাঁকেই করা হয়েছে এবং বহুবচন ক্রিয়া তাঁর সম্মানার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আর উম্মতের জন্য তো তাঁর আদর্শই যথেষ্ট। طَلَّقْتُمْ এর অর্থ হল, যখন তালাক দেওয়ার পাকা ইচ্ছা করে নিবে। (ইদ্দত মানে গণনা। অর্থাৎ, তালাকের নির্ধারিত দিন গণনা করা।)[২] এতে তালাক দেওয়ার তরীকা ও তার সময় উল্লেখ করা হয়েছে। لِعِدَّتِهِنَّ তে 'লাম' অক্ষরটি 'তাওক্বীত' (সময় নির্ণয়) এর জন্য ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, لأَوَّلِ অথবা لاسْتِقْبَالِ عِدَّتِهِنَّ (ইদ্দতের শুরুতে) তালাক দাও। অর্থাৎ, যখন মহিলা ঋতু (মাসিক) থেকে পবিত্র হয়ে যাবে, তখন তার সাথে আর সহবাস না করেই তালাক দাও। পবিত্র অবস্থা হল তার ইদ্দতের শুরু। এর অর্থ হল, মাসিক অবস্থায় অথবা পবিত্র অবস্থায় সহবাস করার পর তালাক দেওয়া ভুল তরীকা। এটাকেই ফিকাহ শাস্ত্রের পন্ডিতগণ 'বিদয়ী তালাক' এবং পূর্বের (সঠিক) তরীকাকে 'সুন্নী তালাক' বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর সমর্থন হাদীসেও পাওয়া যায়; ইবনে উমার (রাঃ) মাসিক অবস্থায় তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেন। এতে রসূল (সাঃ) রাগান্বিত হন এবং তাঁকে তালাক প্রত্যাহার করে নিতে বলার সাথে সাথে পবিত্র অবস্থায় তালাক দেওয়ার নির্দেশ দেন। আর এর সমর্থনে তিনি এই আয়াতকেই দলীল হিসাবে গ্রহণ করেন। (বুখারীঃ তালাক অধ্যায়) তবে মাসিক অবস্থায় দেওয়া তালাকও বিদআত হওয়া সত্ত্বেও তা তালাক বলে গণ্য হবে। মুহাদ্দিসগণের এবং অধিকাংশ আলেমগণের এটাই উক্তি। অবশ্য ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রঃ) এবং ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম (রঃ) বিদয়ী তালাককে তালাক গণ্য করেননি। (বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ নাইলুল আওতার, তালাক অধ্যায়, পরিচ্ছেদ, মাসিক ও পবিত্র অবস্থায় তালাক দেওয়া নিষেধ। এ ছাড়া অন্যান্য হাদীসের ব্যাখ্যাগ্রন্থও দেখুন।) [৩] অর্থাৎ, এর প্রথম ও শেষটার খেয়াল রাখ, যাতে স্ত্রী এর পর দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারে। অথবা তোমরাই যদি রুজু' (প্রত্যাহার) করতে (স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে) চাও, তবে (প্রথম এবং দ্বিতীয় তালাকের পর) ইদ্দতের ভিতরেই যেন রুজু' করতে পার[৪] অর্থাৎ, তালাক দেওয়ার সাথে সাথেই স্ত্রীকে নিজ ঘর থেকে বের করে দিও না, বরং ইদ্দত পর্যন্ত তাকে তোমাদেরই ঘরে থাকতে দাও। ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত তার বাসস্থান ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তোমাদের উপরেই থাকবে।[৫] অর্থাৎ, ইদ্দতের দিনগুলোতে স্ত্রীও যেন ঘর হতে বের হওয়া থেকে বিরত থাকে। তবে যদি একান্ত কোন জরুরী কাজে বের হতে হয় তবে সে কথা ভিন্ন।[৬] অর্থাৎ, ব্যভিচার, মুখ-খিস্তি, গালাগালি, ঝগড়া বা চরম অভদ্রতা প্রদর্শন করলে, যা থেকে ঘরের লোকদের কষ্ট হয়। এই অবস্থায় তাকে (বাড়ি থেকে) বের করা জায়েয হবে।[৭] অর্থাৎ, উল্লিখিত সমূহ বিধান হল আল্লাহর কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা। যা অতিক্রম করা নিজের উপর যুলুম করার নামান্তর। কেননা, এই সীমালঙ্ঘনের যাবতীয় ক্ষতি ভোগ করতে হবে সীমালঙ্ঘনকারী নিজেকেই।[৮] অর্থাৎ, পুরুষের অন্তরে তালাকপ্রাপ্তা মহিলার প্রতি চাহিদা ও আকর্ষণ সৃষ্টি করে দেবেন ফলে সে রুজু করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে যাবে। কেননা, প্রথম ও দ্বিতীয় তালাকের পর স্বামী ইদ্দতের ভিতরেই ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার রাখে। এই জন্য কোন কোন মুফাসসিরদের মত হল, এই আয়াতে আল্লাহ কেবল এক তালাক দেওয়ার আদেশ করেছেন এবং এক সাথে তিন তালাক দিতে নিষেধ করেছেন। কেননা, সে যেদি একই সময়ে তিন তালাক দিয়ে দেয় (আর শরীয়ত যদি তার এই তালাককে বৈধ গণ্য করে কার্যকরী করে দেয়), তবে এ কথা বলার কি কোন অর্থ হবে যে, 'হয়তো আল্লাহ কোন নতুন উপায় বের করে দেবেন।' (ফাতহুল ক্বাদীর) এটাকেই দলীল বানিয়ে ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য উলামাগণ বলেছেন যে, বাসস্থান ও ভরণ-পোষণের উপর যে তাকীদ করা হয়েছে, তা কেবল সেই মহিলাদের জন্য, যাদেরকে তাদের স্বামীরা প্রথম অথবা দ্বিতীয় তালাক দিয়েছে। কেননা, এতে স্বামীর ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার অবশিষ্ট থাকে। আর যে মহিলাকে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে দুই তালাক দেওয়া হয়ে গেছে, তৃতীয় তালাক তার জন্য তালাকে 'বাত্তাহ' অথবা 'বায়েনাহ' (কুবরা; যার পর আর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার থাকে না) গণ্য হবে। তার বাসস্থান এবং ভরণ-পোষণ স্বামীর দায়িত্বে থাকে না। তাকে সত্বর স্বামীর ঘর থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হবে। কেননা, স্বামী আর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে তার সাথে সংসার করতে পারে না। ﴿حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ﴾ "যে পর্যন্ত না স্ত্রী কোন অন্য পুরুষকে বিবাহ করেছে।" (অতঃপর সে স্বামী তালাক দিয়েছে বা মারা গেছে তারপর তাকে পুনর্বিবাহ করেছে।) এই জন্য এই স্ত্রীর আর তার স্বামীর কাছে থাকার এবং তার কাছ থেকে খোরপোশ আদায় করার অধিকার থাকে না। এর সমর্থন ফাতিমা বিনতে ক্বাইস (রাঃ) র ঘটনা থেকেও হয় যে, যখন তাঁর স্বামী তাঁকে তৃতীয় তালাকও দিয়ে দিলেন এবং তাঁকে স্বামীর ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য বলা হলে তিনি বের হতে চাইলেন না। পরিশেষে বিষয়টা রসূল (সাঃ)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি ফায়সালা করলেন যে, তাঁর বাসস্থান ও ভরণ-পোষণ নেই। তাকে সত্বর কোন অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়া উচিত। এমন কি কোন কোন বর্ণনায় পরিষ্কারভাবে এসেছে যে, (إِنَّمَا النَّفَقَةُ وَالسُّكْنَى لِلْمَرْأَةِ عَلَى زَوْجِهَا مَا كَانَتْ لَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ) অর্থাৎ, ভরণ-পোষণ ও বাসস্থান কেবল সেই মহিলার জন্য আছে, যাকে ফিরিয়ে নেওয়া তার স্বামীর অধিকারে আছে। (আহমাদ, নাসাঈ) অবশ্য কোন কোন বর্ণনায় গর্ভবতী মহিলার জন্যেও বাসস্থান ও খোরপোশের কথার উল্লেখ রয়েছে। (বিস্তারিত জানার জন্য নাইলুল আওতার দ্রষ্টব্যঃ) কেউ কেউ এই বর্ণনাগুলোকে কুরআনের উল্লিখিত ﴿لاَ تُخْرِجُوْهُنَّ مِنْ بُيُوْتِهِنَّ﴾ (তোমরা তাদেরকে তাদের ঘর হতে বের করে দিও না) এই নির্দেশের পরিপন্থী মনে করে তা প্রত্যাখ্যান করেন, যা সঠিক নয়। কেননা, কুরআনের আয়াত তার পূর্বাপর প্রাসঙ্গিক আলোচনার ভিত্তিতে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত নির্দেশ রজয়ী তালাক (যে তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার থাকে) প্রাপ্তা মহিলার ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে। আর যদি এটাকে ব্যাপক ধরে নেওয়াও যায়, তবে হাদীসের এই বর্ণনাগুলো তার নির্দিষ্টকারী হবে। অর্থাৎ, কুরআনের সাধারণ নির্দেশকে হাদীসের এই বর্ণনাগুলো রজয়ী তালাকপ্রাপ্তা মহিলার জন্য নির্দিষ্ট করে দিল এবং 'বায়েনাহ' তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে উক্ত সাধারণ হুকুমের আওতা থেকে বের করে নিল।

أَعَدَّ اللَّهُ لَهُمْ عَذَابًا شَدِيدًا ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ الَّذِينَ آمَنُوا ۚ قَدْ أَنْزَلَ اللَّهُ إِلَيْكُمْ ذِكْرًا

📘 আল্লাহ তাদের জন্য কঠিন শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, হে বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ, যারা ঈমান এনেছ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন উপদেশ।

رَسُولًا يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِ اللَّهِ مُبَيِّنَاتٍ لِيُخْرِجَ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ ۚ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۖ قَدْ أَحْسَنَ اللَّهُ لَهُ رِزْقًا

📘 (প্রেরণ করেছেন) এমন এক রসূল,[১] যে তোমাদের নিকট আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করে, যাতে যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোকে বের করে আনে।[২] যে কেউ আল্লাহকে বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে,[৩] তিনি তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ তাকে উত্তম রুযী দান করবেন। [১] رَسُول শব্দটি ذِكْر শব্দের বদল বা তার পরিবর্ত স্বরূপ ব্যবহার হয়েছে। 'মুবালাগা' তথা আধিক্য বুঝানোর জন্য রসূলকে যিকর (উপদেশ) বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন عَدل মানে ন্যায়পরায়ণতার মূর্তপ্রতীক (তেমনি ذِكر মানে উপদেশের মূর্তপ্রতীক)। অথবা ذِكْر অর্থ কুরআন এবং رسولًا এর পূর্বে أَرسَلْنَا ক্রিয়াপদ ঊহ্য মেনে নিতে হবে। অর্থ দাঁড়াবে, অবতীর্ণ করেছেন উপদেশ (কুরআন) এবং প্রেরণ করেছেন এক রসূল। [২] এখানে রসূলের মর্যাদা ও তাঁর দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে বলা হচ্ছে যে, তিনি কুরআনের মাধ্যমে নৈতিকতার অধঃপতন এবং শিরক ও ভ্রষ্টতার অন্ধকার থেকে বের করে ঈমান ও নেক আমলের জ্যোতির দিকে নিয়ে এসেছেন। আর রসূল বলতে এখানে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। [৩] নেক আমলের মধ্যে দু'টি জিনিস শামিল থাকে। যথা, আদেশাবলী ও যাবতীয় ফরয কাজগুলো আদায় করা এবং সকল প্রকার অবাধ্যতা ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ, জান্নাতে কেবল সেই ঈমানদাররাই প্রবেশ করবেন, যাঁরা শুধুমাত্র মৌখিকভাবেই ঈমানের দাবী করেননি, বরং তাঁরা ঈমানের দাবীসমূহ অনুযায়ী ফরয কাজগুলো আদায় করেছেন এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থেকেছেন।

اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَمِنَ الْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ الْأَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا

📘 আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও অনুরূপ,[১] ওগুলোর মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ,[২] যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, অবশ্যই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। [৩] [১] أَيْ: خَلَقَ مِنَ الأَرْضِ مِثْلَهُنَّ সাত আসমানের ন্যায় সাত যমীনও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, সাতটি প্রদেশ। তবে এ কথা ঠিক নয়। বরং যেভাবে উপর্যুপরি সাতটি আসমান রয়েছে, অনুরূপ সাতটি যমীনও রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দূরত্ব ও ব্যবধানও আছে এবং প্রত্যেক যমীনে আল্লাহর সৃষ্টি আবাদ রয়েছে। (ক্বুরত্ববী) বহু হাদীস দ্বারা এ কথার সমর্থনও হয়। যেমন, নবী (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি যুলুম করে বিঘত পরিমাণ যমীন আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।" (মুসলিম, বাণিজ্য অধ্যায়, যুলুম করা হারাম পরিচ্ছেদ) সহীহ বুখারীর শব্দাবলী হল, (خُسِفَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرَضِينَ) "কিয়ামতের দিন তাকে সপ্ত যমীনের নীচ পর্যন্ত ধসিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারী, মাযালিম অধ্যায়, যমীন আত্মসাৎ করার পাপ পরিচ্ছেদ) কেউ কেউ এটাও বলেন যে, প্রত্যেক যমীনে ঐ রকমই পয়গম্বর রয়েছেন, যে রকম পয়গম্বর তোমাদের যমীনে এসেছেন। যেমন, আদমের মত আদম, নূহের মত নূহ। ইবরাহীমের মত ইবরাহীম। ঈসার মত ঈসা (আলাইহিমুস সালাম)। কিন্তু এ কথা কোন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। [২] যেভাবে, প্রত্যেক আসমানে আল্লাহর বিধান কার্যকরী ও বলবৎ আছে, অনুরূপ প্রত্যেক যমীনে তাঁর নির্দেশ চলে। সপ্ত আকাশের মত সপ্ত পৃথিবীর পরিচালনাও তিনিই করেন। [৩] অতএব কোন জিনিস তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়, চাহে তা যেমনই হোক না কেন।

فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ فَارِقُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَأَشْهِدُوا ذَوَيْ عَدْلٍ مِنْكُمْ وَأَقِيمُوا الشَّهَادَةَ لِلَّهِ ۚ ذَٰلِكُمْ يُوعَظُ بِهِ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ۚ وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا

📘 তাদের ইদ্দত পূরণের কাল আসন্ন হলে তোমরা হয় যথাবিধি তাদেরকে রেখে নাও, না হয় তোমরা তাদেরকে যথাবিধি পরিত্যাগ কর[১] এবং তোমাদের মধ্য হতে দুই জন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখ;[২] তোমরা আল্লাহর জন্য সঠিক সাক্ষ্য দাও।[৩] এটা দ্বারা তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে, তাকে উপদেশ দেওয়া হচ্ছে। আর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। [৪] [১] স্বামীর সম্পর্ক কায়েম হয়েছে (যার সাথে সহবাস করা হয়েছে) এমন তালাকপ্রাপ্তা মহিলার ইদ্দত হল তিন মাসিক পর্যন্ত। যদি ফিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা হয়, তবে ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বেই ফিরিয়ে নাও, অন্যথা যথানিয়মে তাকে নিজের কাছ থেকে বিদায় করে দাও। [২] রুজু, প্রত্যাহার বা ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে এবং কোন কোন উলামার নিকট তালাকের ব্যাপারে সাক্ষী রেখে নাও। তবে এই আদেশ ওয়াজেবের জন্য নয়, বরং 'ইস্তিহবাব' এর জন্য। অর্থাৎ, সাক্ষী রেখে নেওয়া ভাল, কিন্তু জরুরী নয়। [৩] এই তাকীদ সাক্ষীদের প্রতি। তারা যেন কারো কোন পরোয়া না করে ও কোন লোভে না পড়ে সঠিক সঠিক সাক্ষ্য দেয়। [৪] অর্থাৎ, যাবতীয় কঠিন সমস্যা ও পরীক্ষা থেকে নিষ্কৃতি লাভের উপায় বের করে দেবেন।

وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ ۚ وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ ۚ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا

📘 এবং তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে রুযী দান করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই।[১] আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। [২] [১] অর্থাৎ, তিনি যা করতে চান, তা থেকে তাঁকে কেউ বাধা দিতে পারে না। [২] কষ্টসাধ্য ও সহজসাধ্য সকল কর্মের জন্যই। নির্ধারিত সময়েই উভয় (সহজ ও কঠিন) জিনিসেরই পরিসমাপ্তি ঘটে। কেউ কেউ এর অর্থ নিয়েছেন, মাসিক ও ইদ্দত।

وَاللَّائِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِنْ نِسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ وَاللَّائِي لَمْ يَحِضْنَ ۚ وَأُولَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ ۚ وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا

📘 তোমাদের যেসব স্ত্রীদের মাসিক হবার আশা নেই, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যাদের এখনো মাসিক হয়নি তাদেরও।[১] আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।[২] আল্লাহকে যে ভয় করবে, তিনি তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন। [১] এ হল সেই মহিলাদের ইদ্দত, যাদের বার্ধক্যের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে অথবা যাদের এখনোও মাসিক আরম্ভ হয়নি। জ্ঞাতব্য যে, বিরল হলেও এমনও হয় যে, মেয়ে সাবালিকা হয়ে যায়, অথচ তার মাসিক আসে না।[২] তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যদি গর্ভবতী হয়, তবে তার ইদ্দত হল সন্তান প্রসব করা সময় পর্যন্ত, যদিও সে তালাকের দ্বিতীয় দিনে প্রসব করে তবুও। এ ছাড়া আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, প্রত্যেক গর্ভবতীর ইদ্দত এটাই; তাতে সে তালাকপ্রাপ্তা হোক অথবা তার স্বামীর মৃত্যু হয়ে থাকুক। বহু হাদীস থেকেও এর সমর্থন হয়। (আরো জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ বুখারী ও মুসলিম সহ অন্যান্য সুনান গ্রন্থসমূহের তালাক অধ্যায়) গর্ভবতী ছাড়া অন্যান্য যে মহিলাদের স্বামী মৃত্যু বরণ করবে, তাদের ইদ্দত হল ৪ মাস ১০ দিন। (সূরা বাক্বারাহ ২:২৩৪ নং আয়াত)

ذَٰلِكَ أَمْرُ اللَّهِ أَنْزَلَهُ إِلَيْكُمْ ۚ وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُعْظِمْ لَهُ أَجْرًا

📘 এটা আল্লাহর বিধান, যা তিনি তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। আর আল্লাহকে যে ভয় করবে, তিনি তার পাপরাশি মোচন করবেন এবং তাকে দেবেন মহাপুরস্কার।

أَسْكِنُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ سَكَنْتُمْ مِنْ وُجْدِكُمْ وَلَا تُضَارُّوهُنَّ لِتُضَيِّقُوا عَلَيْهِنَّ ۚ وَإِنْ كُنَّ أُولَاتِ حَمْلٍ فَأَنْفِقُوا عَلَيْهِنَّ حَتَّىٰ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ ۚ فَإِنْ أَرْضَعْنَ لَكُمْ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ ۖ وَأْتَمِرُوا بَيْنَكُمْ بِمَعْرُوفٍ ۖ وَإِنْ تَعَاسَرْتُمْ فَسَتُرْضِعُ لَهُ أُخْرَىٰ

📘 তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকেও সে স্থানে বাস করতে দাও।[১] সংকটে ফেলার উদ্দেশ্যে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করো না।[২] তারা গর্ভবতী থাকলে সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত তাদের জন্য ব্যয় কর।[৩] অতঃপর যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে স্তন্যদান করে, তাহলে তাদেরকে তাদের পারিশ্রমিক প্রদান কর।[৪] (সন্তানের কল্যাণ সম্পর্কে) তোমরা সঙ্গতভাবে নিজেদের মধ্যে পরামর্শ কর।[৫] তোমরা যদি নিজ নিজ দাবীতে অনমনীয় হও, তাহলে অন্য নারী তার পক্ষে স্তন্য দান করবে। [৬] [১] অর্থাৎ, রজয়ী তালাকপ্রাপ্তা মহিলাদেরকে (যাদেরকে তালাক দেওয়ার পর ফিরিয়ে নেওয়ার অবকাশ থাকে)। কারণ, 'বায়েনাহ তালাকপ্রাপ্তা' (যাদেরকে তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে না সেই মহিলা)-দের জন্য বাসস্থান এবং ভরণপোষণ জরুরী নয়। এ কথা পূর্বে আলোচিত হয়েছে। 'সামর্থ্য অনুযায়ী --- বাস করতে দাও' এর অর্থ হল, যদি বাড়ী এমন প্রশস্ত হয় যাতে কয়েকটি কামরা আছে, তাহলে একটি কামরা নির্দিষ্ট করে দাও। অন্যথা নিজের কামরা তার জন্য খালি করে দাও। এতে যে যৌক্তিকতা ও কৌশলগত দিক রয়েছে তা হল এই যে, যখন সে কাছে থেকে ইদ্দত পালন করবে, তখন হতে পারে স্বামীর অন্তরে দয়া (প্রেম বা যৌনকামনা) সৃষ্টি হবে এবং 'রুজু' করার (ফিরিয়ে নেওয়ার) উৎসাহ তার অন্তরে সৃষ্টি হয়ে যাবে। বিশেষ করে যদি সন্তানাদি থাকে, তবে ফিরিয়ে নেওয়ার উৎসাহ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা অতি প্রবল থাকে। কিন্তু অনুতাপের বিষয় যে, বহু মুসলিম এই নির্দেশ অনুযায়ী আমল করে না। যার কারণে এই নির্দেশের উপকারিতা থেকে এবং তার কৌশলগত সুফল হতে সে বঞ্চিত হয়। আমাদের সমাজে তালাক দেওয়ার সাথে সাথেই মহিলাকে অচ্ছুত (অস্পৃশ্য) বানিয়ে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় (অথবা মহিলা নিজেই দুঃখে অথবা ক্ষোভে গৃহত্যাগ করে) অথবা কখনো মেয়ের পক্ষের কেউ এসে তাকে তাদের ঘরে নিয়ে যায়। বলাই বাহুল্য যে, এই প্রচলন কুরআন কারীমের স্পষ্ট শিক্ষার পরিপন্থী। [২] অর্থাৎ, খোরপোশ অথবা বাসস্থানের ব্যাপারে তাদের উপর সংকীর্ণতা সৃষ্টি করা এবং তাদের মানহানি করা, যাতে তারা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়। ইদ্দতের মধ্যে এ রকম আচরণ যেন না করা হয়। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি পর্যায়ে তোমরা আবার 'রুজু' করে (ফিরিয়ে) নাও এবং বারংবার এ রকম কর। যেমন, জাহেলিয়াতের যুগে ছিল। সুতরাং সে পথ বন্ধ করার জন্য শরীয়ত তালাক দেওয়ার পর ফিরিয়ে নেওয়ার সময় নির্দিষ্ট করে দিল। যাতে আগামীতে কেউ এইভাবে মহিলার উপর সংকীর্ণতার সৃষ্টি না করে। এখন একজন কেবল দু'বার এ রকম করতে পারে। অর্থাৎ, তালাক দিয়ে ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বেই ফিরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু তৃতীয়বার আবার তালাক দিলে, তার ফিরিয়ে নেওয়ার মোটেই অধিকার থাকবে না। [৩] অর্থাৎ, তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যদি গর্ভবতী হয়, তবে তার ভরণ-পোষণ ও বাসস্থান দেওয়া জরুরী, যদিও এ তালাক 'বায়েনাহ' (যে তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার থাকে না তা) হয়। এ কথা পূর্বেও উল্লিখিত হয়েছে। [৪] অর্থাৎ, তালাক দেওয়ার পর তারা যদি তোমাদের শিশুদেরকে দুধ পান করায়, তাহলে তার পারিশ্রমিক তোমাদেরকেই দিতে হবে। (তখন 'সম্পর্ক নেই বলে কোন অর্থ ব্যয় করব না' বলা চলবে না।) [৫] অর্থাৎ, আপোসে পরামর্শ করে পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সমস্ত বিষয় ঠিক করে নেবে। যেমন, শিশুর বাপ প্রচলিত নিয়মে পারিশ্রমিক দেবে এবং বাপের সামর্থ্য অনুযায়ী মা তার পারিশ্রমিক চাইবে ইত্যাদি। [৬] অর্থাৎ, পারিশ্রমিক ইত্যাদির ব্যাপারে যদি তাদের আপোসে মতের মিল না হয়, তবে অন্য কোন দুধ দানকারিণী মহিলার সাথে চুক্তি করে নেবে। সে তার শিশুকে দুধ পান করাবে।

لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ ۖ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ ۚ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا ۚ سَيَجْعَلُ اللَّهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُسْرًا

📘 সামর্থ্যবান নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে[১] এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত,[২] সে আল্লাহ তাকে যা দান করেছেন, তা হতে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন, তার চেয়ে গুরুতর বোঝা তিনি তার উপর চাপান না।[৩] আল্লাহ কষ্টের পর স্বস্তি দান করবেন। [৪] [১] অর্থাৎ, দুগ্ধদাত্রী মহিলাদেরকে পারিশ্রমিক নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দিতে হবে। আল্লাহ যদি মাল-ধনে প্রাচুর্য দিয়ে থাকেন, তবে এই প্রাচুর্য অনুযায়ী দুগ্ধদাত্রীকে প্রচুর পারিতোষিক দেওয়া কর্তব্য। [২] অর্থাৎ, আর্থিক দিক দিয়ে যে দুর্বল। [৩] এই জন্য তিনি দরিদ্র ও দুর্বলকে এই নির্দেশ দেন না যে, তারা দুধ দানকারিণীকে বেশী বেশী পারিশ্রমিক দিক। এই নির্দেশাবলীর উদ্দেশ্য হল, শিশুর পিতা-মাতার উচিত এমন পন্থা অবলম্বন করা, যা উভয়ের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর তারা যেন একে অপরকে কোন প্রকার কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা না করে এবং তার ফলে শিশুর দুধ পানের ব্যাপারটা যেন জটিল হয়ে না দাঁড়ায়। এই জন্য মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন,﴿لا تُضَارَّ وَالِدَةٌ بِوَلَدِهَا وَلا مَوْلُودٌ لَهُ بِوَلَدِهِ﴾ "মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না এবং তাকেও না যার সন্তান।" (সূরা বাক্বারাহ ২:২৩৩ আয়াত) [৪] সুতরাং যারা আল্লাহর উপর আস্থা ও ভরসা রাখে, মহান আল্লাহ তাদেরকে স্বস্তি ও প্রশস্ততা দানে ধন্য করেন।

وَكَأَيِّنْ مِنْ قَرْيَةٍ عَتَتْ عَنْ أَمْرِ رَبِّهَا وَرُسُلِهِ فَحَاسَبْنَاهَا حِسَابًا شَدِيدًا وَعَذَّبْنَاهَا عَذَابًا نُكْرًا

📘 কত জনপদ দম্ভভরে তাদের প্রতিপালকের ও তাঁর রসূলদের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল,[১] ফলে আমি তাদের নিকট হতে কঠোর হিসাব নিয়েছিলাম এবং তাদেরকে দিয়েছিলাম কঠিন শাস্তি।[২] [১] عَتَت অর্থাৎ, বিদ্রোহ, বিরুদ্ধাচরণ, ঔদ্ধত্য ও অবাধ্যতা প্রদর্শন করেছিল। [২] نُكْرًا، مُنْكَرًا فَظِيْعًا অর্থাৎ, কঠিন ও ভীষণ। হিসাব ও আযাব বলতে পার্থিব পাকড়াও ও শাস্তি। অথবা কারো কারো কথা অনুযায়ী বাক্যকে আগে-পিছে করা হয়েছে। عَذَابًا نُكْرًا সেই আযাব, যা দুনিয়াতে অনাবৃষ্টি, ভূমিধস ও আকৃতি-বিকৃতি ইত্যাদির আকারে তাদের উপর এসেছে। আর حِسَابًا شَدِيْدًا যেটা আখেরাতে হবে। (ফাতহুল ক্বাদীর)

فَذَاقَتْ وَبَالَ أَمْرِهَا وَكَانَ عَاقِبَةُ أَمْرِهَا خُسْرًا

📘 অতঃপর তারা তাদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করল, আর ক্ষতিই ছিল তাদের কর্মের পরিণাম।