slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris slot qris bokep indo
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير سورة النازعات

(An-Naziat) • المصدر: BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا

📘 শপথ তাদের (ফিরিশতাদের); যারা নির্মমভাবে (কাফেরদের প্রাণ) ছিনিয়ে নেয়। [১] [১] نزع শব্দের অর্থ হল বড় শক্তের সাথে টানা। غرقًا মানে ডুবে। এটি আত্মা হরণকারী ফিরিশতার গুণবিশেষ। ফিরিশতা কাফেরদের আত্মা খুবই কঠিনভাবে শরীরের ভিতর ডুবে বের করে থাকেন। (غرقًا -এর আর এক অর্থঃ নির্মমভাবে।)

يَقُولُونَ أَإِنَّا لَمَرْدُودُونَ فِي الْحَافِرَةِ

📘 তারা (কাফেররা) বলে, ‘আমরা কি পূর্বাবস্থায় প্রত্যাবর্তিত হবই? [১] [১] حافرة প্রথম অবস্থাকে বলা হয়। এটা কিয়ামতের দিনকে অস্বীকারকারীদের উক্তি যে, 'আমাদেরকে কি পুনরায় ঐরূপ জীবিত করা হবে, যেরূপ মৃত্যুর পূর্বে ছিলাম!?'

أَإِذَا كُنَّا عِظَامًا نَخِرَةً

📘 জীর্ণ অস্থিতে পরিণত হওয়ার পরও?’ [১] [১] এটি কিয়ামতকে অস্বীকার করার আরো অধিক তাকীদ যে, 'আমরা কেমন করে জীবিত হব? অথচ আমাদের হাড় পচে-গলে জীর্ণ হয়ে যাবে!'

قَالُوا تِلْكَ إِذًا كَرَّةٌ خَاسِرَةٌ

📘 তারা বলে, ‘তা-ই যদি হয়, তাহলে তো এটা ক্ষতিকর প্রত্যাবর্তন!’ [১] [১] অর্থাৎ, যদি সত্যিকারে ঐরূপই ঘটে যেমন নাকি মুহাম্মাদ বলে। তাহলে তো দ্বিতীয়বার জীবিত হওয়া আমাদের জন্য বড়ই ক্ষতিকর সাব্যস্ত হবে।

فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ

📘 এটা তো এক মহাগর্জন মাত্র।

فَإِذَا هُمْ بِالسَّاهِرَةِ

📘 ফলে তখনই ময়দানে তাদের আবির্ভাব হবে।[১] [১] ساهرة -এর (শাব্দিক অর্থ হলঃ জাগরণভূমি) এখানে এর উদ্দেশ্য হল যমীনের উপরিভাগ; অর্থাৎ, ময়দান। যমীনের উপরিভাগকে ساهرة এই জন্য বলা হয়েছে যে, সমস্ত প্রাণীর শয়ন ও জাগরণ এই যমীনের উপরই হয়ে থাকে। আবার কেউ কেউ বলেন, যেহেতু বৃক্ষহীন ময়দান এবং মরুভূমিতে নানা ভয়ের কারণে মানুষের নিদ্রা উড়ে যায় এবং তারা জেগে থাকে, সেহেতু অনুরূপ ময়দানকে ساهرة বলা হয়। (ফতহুল ক্বাদীর) মোট কথা, এ হল কিয়ামতের দৃশ্য-বিবরণ যে, একটি ফুৎকারের ফলেই সমস্ত মানুষ একটি ময়দানে জমায়েত হয়ে যাবে।

هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ مُوسَىٰ

📘 (হে মুহাম্মাদ!) তোমার নিকট মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি?

إِذْ نَادَاهُ رَبُّهُ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى

📘 যখন তার প্রতিপালক পবিত্র ত্বুয়া উপত্যকায় তাকে আহবান করে বলেছিলেন, [১] [১] এটি ঐ সময়কার ঘটনা, যখন মূসা (আঃ) মাদয়ান শহর থেকে ফিরার পথে আগুন খোঁজার জন্য ত্বূর পাহাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি গাছের অন্তরাল থেকে আল্লাহ তাআলা মূসা (আঃ)-এর সাথে কথোপকথন করেছিলেন। যেমন, তার বিস্তারিত বর্ণনা সূরা ত্বাহার শুরুতে রয়েছে। 'ত্বুয়া' ঐ জায়গাকেই বলা হয়। কথোপকথনের উদ্দেশ্য হল, রিসালাত ও নবুঅত দানের মাধ্যমে তাঁকে সম্মানিত করা। অর্থাৎ, মূসা (আঃ) আগুন আনার জন্য গেলেন তখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে রিসালাত দান করলেন।

اذْهَبْ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَىٰ

📘 ফিরআউনের নিকট যাও, সে তো সীমালংঘন করেছে। [১] [১] অর্থাৎ, কুফর, অবাধ্যতা ও অহংকারের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

فَقُلْ هَلْ لَكَ إِلَىٰ أَنْ تَزَكَّىٰ

📘 এবং (তাকে) বল, ‘তোমার কি আত্মশুদ্ধির কোন আগ্রহ আছে? [১] [১] অর্থাৎ, এমন পথ ও তরীকা তুমি কি পছন্দ কর, যাতে তোমার আত্মশুদ্ধি হতে পারে? আর সেটা হল, তুমি মুসলিম এবং (আল্লাহর) অনুগত হয়ে যাও।

وَأَهْدِيَكَ إِلَىٰ رَبِّكَ فَتَخْشَىٰ

📘 আর আমি কি তোমাকে তোমার প্রতিপালকের পথ দেখাব, ফলে তুমি তাঁকে ভয় করবে?’ [১] [১] অর্থাৎ, তাঁর একত্ব এবং ইবাদতের পথ; যার ফলে তুমি তাঁর শাস্তিকে ভয় করবে। এই জন্য যে, আল্লাহর ভয় তারই অন্তরে সৃষ্টি হয়ে থাকে, যে হিদায়াতের পথ অবলম্বন করে চলে।

وَالنَّاشِطَاتِ نَشْطًا

📘 শপথ তাদের; যারা মৃদুভাবে (মু’মিনদের প্রাণ) বের করে।[১] [১] نشط শব্দের অর্থ হল গিরা খুলে দেওয়া। অর্থাৎ, ফিরিশতা মু'মিনদের আত্মা খুব সহজ ও মৃদুভাবে বের করে থাকেন; যেমন কোন জিনিসের গিরা খুলে দেওয়া হয়।

فَأَرَاهُ الْآيَةَ الْكُبْرَىٰ

📘 অতঃপর সে তাকে মহা নিদর্শন দেখাল। [১] [১] অর্থাৎ, নিজের সত্যতার জন্য সেই সকল প্রমাণ পেশ করলেন, যা তিনি আল্লাহর তরফ হতে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেন, 'মহা নিদর্শন'-এর উদ্দেশ্য হল সেই মু'জিযা (অলৌকিক বস্তু)সমূহ যা মূসা (আঃ)-কে দান করা হয়েছিল। যেমন, হাতের শুভ্রতা এবং লাঠি। আবার কারো কারো মতে উদ্দেশ্য হল, তাঁকে দেওয়া নয়টি নিদর্শন।

فَكَذَّبَ وَعَصَىٰ

📘 কিন্তু সে মিথ্যাজ্ঞান করল এবং অবাধ্য হল। [১] [১] কিন্তু এ সমস্ত প্রমাণ এবং মু'জিযা তার মধ্যে কোন প্রভাব ফেলতে পারল না এবং মিথ্যাজ্ঞান ও অবাধ্যতায় সে অটল থাকল।

ثُمَّ أَدْبَرَ يَسْعَىٰ

📘 অতঃপর সে পিছন ফিরে প্রতিবিধানে সচেষ্ট হল। [১] [১] অর্থাৎ, সে ঈমান ও আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েই ক্ষান্ত হল না; বরং যমীনে ফাসাদ ছড়ানোতে এবং মূসা (আঃ)-এর মুকাবিলা করতে প্রচেষ্টা চালালো। সুতরাং সে যাদুকরদেরকে উপস্থিত করে মূসা (আঃ) এর মুকাবেলা করালো; যাতে মূসা (আঃ)-কে মিথ্যা সাব্যস্ত করা যায়।

فَحَشَرَ فَنَادَىٰ

📘 সে সকলকে সমবেত করল এবং উচ্চ স্বরে ঘোষণা করল।[১] [১] নিজের সম্প্রদায়কে অথবা যুদ্ধ ও লড়াই করার জন্য নিজের সৈন্য-সামন্তকে কিংবা যাদুকরদেরকে মুকাবেলা করার জন্য সমবেত করল এবং হঠকারিতা প্রদর্শন করে নিজেকেই সর্বশ্রেষ্ঠ রব (প্রভু ও প্রতিপালক) হওয়ার দাবী ঘোষণা করল।

فَقَالَ أَنَا رَبُّكُمُ الْأَعْلَىٰ

📘 আর বলল, ‘আমিই তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিপালক।’

فَأَخَذَهُ اللَّهُ نَكَالَ الْآخِرَةِ وَالْأُولَىٰ

📘 ফলে আল্লাহ তাকে পরকালের ও ইহকালের শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলেন। [১] [১] অর্থাৎ, আল্লাহ তাকে এমনভাবে পাকড়াও করলেন যে, আগামীতে দুনিয়ায় আগমনকারী আল্লাহদ্রোহীদের জন্য শিক্ষণীয় ও উপদেশস্বরূপ হয়ে রইল। আর কিয়ামতের আযাব তো তার জন্য আছেই, যা সে সেখানে ভোগ করবে।

إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِمَنْ يَخْشَىٰ

📘 যে (আল্লাহকে) ভয় করে, তার জন্য অবশ্যই এতে শিক্ষা রয়েছে। [১] [১] এতে নবী (সাঃ)-এর জন্য সান্ত্বনা এবং মক্কার কাফেরদের জন্য হুমকি রয়েছে যে, যদি তারা পূর্বেকার লোকদের ঘটনাসমূহ থেকে উপদেশ গ্রহণ না করে, তাহলে তাদের পরিণামও ফিরআউনের মত হতে পারে।

أَأَنْتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاءُ ۚ بَنَاهَا

📘 তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আকাশ? [১] যা তিনি নির্মাণ করেছেন। [১] এই আয়াতে মক্কার কাফেরদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হল এই ধমক দেওয়া যে, যে আল্লাহ এত বড় আসমান এবং তার আশ্চর্যজনক বস্তুকে সৃষ্টি করতে পেরেছেন, তাঁর জন্য কি পুনর্বার মানুষকে জীবিত করা অসম্ভব কাজ?

رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا

📘 তিনি তার ছাদকে সুউচ্চ ও সুবিন্যস্ত করেছেন।[১] [১] কোন কোন আলেম سمك -এর অর্থ ছাদ বলেছেন। সুবিন্যস্ত করার অর্থ হল, তাকে এমন আকৃতি ও গঠন দান করা, যাতে তাতে কোন প্রকার খুঁত, ত্রুটি, বঙ্কিমতা ও ফাটল না থাকে।

وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا

📘 এবং তিনি এর রজনীকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন এবং (দিবসে) এর সূর্যালোক প্রকাশ করেছেন।[১] [১] أغطش মানে أظلم অর্থাৎ অাঁধার করা এবং أخرج মানে أبرز অর্থাৎ প্রকাশ করেছেন। আর نهارها -এর স্থানে ضحاها শব্দ এই জন্য বলা হয়েছে যে, চাশতের সময়টা হল খুবই উত্তম ও উৎকৃষ্ট সময়। এর ভাবার্থ হল, দিনকে সূর্য দ্বারা উজ্জ্বলময় করেছেন।

وَالسَّابِحَاتِ سَبْحًا

📘 শপথ তাদের; যারা তীব্র গতিতে সন্তরণ করে। [১] [১] سبح শব্দের অর্থ হল সাঁতার কাটা। ফিরিশতা আত্মা বের করার সময় মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এমনভাবে সাঁতার কাটেন যেমন, ডুবুরীরা মণিমুক্তা খোঁজার উদ্দেশ্যে সমুদ্রের গভীরে সাঁতার কেটে থাকে। অথবা অর্থ এটাও হতে পারে যে, আল্লাহর হুকুম নিয়ে ফিরিশতারা খুব শীঘ্রতার সাথে আসমান থেকে যমীনে সাঁতার কেটে অবতরণ করেন। কেননা, দ্রুতগামী ঘোড়াকেও سابح বলা হয়।

وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَٰلِكَ دَحَاهَا

📘 এবং তারপর তিনি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন।[১] [১] পূর্বে হা-মীম সিজদার ৯ আয়াতে উল্লেখ হয়েছে যে, خلق (সৃষ্টি করা) এক জিনিস এবং دحى (সমতল, বিস্তৃত ও বাসোপযোগী করা) করা অন্য এক জিনিস। পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে আকাশের পূর্বে। কিন্তু তাকে বিস্তৃত করা হয়েছে আকাশ সৃষ্টির পর। এখানে সেই তত্ত্বই বর্ণিত হয়েছে। সমতল ও বিস্তৃত করার মানে হল, পৃথিবীকে সৃষ্টির বাসোপযোগী করার জন্য যে সমস্ত জিনিসের প্রয়োজন আল্লাহ তাআলা তার প্রতি গুরুত্ব দিলেন। যেমন, যমীন থেকে পানি নির্গত করলেন অতঃপর তা হতে নানা খাদ্যসামগ্রী উৎপন্ন করলেন। পাহাড়সমূহকে পেরেকস্বরূপ মজবুতভাবে যমীনে গেড়ে দিলেন যাতে যমীনটা না হিলে। যেমন, আগামী আয়াতসমূহে এর বর্ণনা রয়েছে।

أَخْرَجَ مِنْهَا مَاءَهَا وَمَرْعَاهَا

📘 তিনি তা থেকে বহির্গত করেছেন তার পানি ও চারণভূমি।

وَالْجِبَالَ أَرْسَاهَا

📘 আর পর্বতসমূহকে তিনি দৃঢ়ভাবে গ্রথিত করেছেন।

مَتَاعًا لَكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ

📘 এসব তোমাদের ও তোমাদের পশুদের ভোগের সামগ্রী।

فَإِذَا جَاءَتِ الطَّامَّةُ الْكُبْرَىٰ

📘 অতঃপর যখন মহাসংকট (কিয়ামত) সমাগত হবে,

يَوْمَ يَتَذَكَّرُ الْإِنْسَانُ مَا سَعَىٰ

📘 সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, যা সে করে এসেছে।

وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِمَنْ يَرَىٰ

📘 এবং প্রকাশ করা হবে জাহীম (জাহান্নাম)কে দর্শকদের জন্য। [১] [১] অর্থাৎ, প্রত্যেক কাফেরদের সম্মুখে তা উপস্থিত করে দেওয়া হবে। যাতে তারা দেখতে পায় বা বুঝে নেয় যে, তাদের এখন থেকে চিরকালের জন্য ঠিকানা হবে জাহান্নাম। কোন কোন আলেম বলেন যে, মু'মিন এবং কাফের উভয়ই জাহান্নামকে দেখবে। মু'মিনগণ তা দেখে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে যে, তিনি আমাদেরকে ঈমান ও নেক আমলের বদৌলতে এ থেকে পরিত্রাণ দিয়েছেন। আর কাফেররা প্রথম থেকেই ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হবে এবং তা দেখে তাদের দুঃখ ও আফসোস আরো বৃদ্ধি পাবে।

فَأَمَّا مَنْ طَغَىٰ

📘 সুতরাং যে সীমালংঘন করেছে, [১] [১] অর্থাৎ, কুফরী এবং অবাধ্যতায় সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

وَآثَرَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا

📘 এবং পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়েছে, [১] [১] অর্থাৎ, দুনিয়াকে সে সব কিছু ভেবেছে এবং আখেরাতের জন্য কোন প্রস্তুতি নেয়নি।

فَإِنَّ الْجَحِيمَ هِيَ الْمَأْوَىٰ

📘 জাহীম (জাহান্নাম)ই হবে তার আশ্রয়স্থল। [১] [১] এ ছাড়া তার কোন অন্য ঠিকানা হবে না যাতে সে তা হতে আশ্রয় নিতে পারবে।

فَالسَّابِقَاتِ سَبْقًا

📘 অতঃপর (শপথ তাদের;) যারা দ্রুতবেগে অগ্রসর হয়। [১] [১] এই ফিরিশতাগণ আল্লাহর প্রত্যাদেশ নিয়ে আম্বিয়াগণ পর্যন্ত দ্রুতগতিতে পৌঁছিয়ে থাকেন। যাতে শয়তানরা তার পাত্তা না পায়। কিংবা মু'মিনদের আত্মা জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অতিশয় দ্রুততা অবলম্বন করেন।

وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَىٰ

📘 পক্ষান্তরে যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রেখেছে[১] এবং কুপ্রবৃত্তি হতে নিজেকে বিরত রেখেছে, [২] [১] এই ভয় যে, যদি আমি পাপ এবং আল্লাহর নাফরমানী করি তাহলে আমাকে আল্লাহ হতে কেউ বাঁচাতে পারবে না। এ জন্যই সে পাপাচার থেকে দূরে থেকেছে। [২] অর্থাৎ, নিজেকে সেই সব পাপাচার এবং হারামকৃত জিনিসে লিপ্ত হওয়া থেকে বাঁচাত, যে দিকে তার মন আকৃষ্ট হত।

فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَىٰ

📘 জান্নাতই হবে তার আশ্রয়স্থল। [১] [১] যেখানে সে বসবাস করবে; বরং আল্লাহর মেহমান হবে।

يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا

📘 তারা তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তা কখন সংঘটিত হবে? [১] [১] مرساها অর্থাৎ তার নঙ্গর ফেলার সময়। তার মানে কিয়ামত কখন বা কবে ঘটবে? যেমন, নৌকা নিজের শেষ গন্তব্যস্থলে পৌঁছে নঙ্গর ফেলে; সেইরূপ কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সঠিক সময় কি?

فِيمَ أَنْتَ مِنْ ذِكْرَاهَا

📘 এ ব্যাপারে তোমার কি বলার আছে? [১] [১] অর্থাৎ, এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত ইলম (জ্ঞান) তোমার নেই। সুতরাং তোমার এ ব্যাপারে বয়ান করার কি আছে? এর সুনিশ্চিত জ্ঞান তো কেবলমাত্র আল্লাহর নিকটই আছে।

إِلَىٰ رَبِّكَ مُنْتَهَاهَا

📘 এর চূড়ান্ত জ্ঞান আছে তোমার প্রতিপালকের নিকটেই।

إِنَّمَا أَنْتَ مُنْذِرُ مَنْ يَخْشَاهَا

📘 যে ওর ভয় রাখে তুমি কেবল তারই সতর্ককারী। [১] [১] অর্থাৎ, তোমার কর্ম শুধুমাত্র ভীতি প্রদর্শন করা; গায়বের খবর দেওয়া নয়। আর কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার জ্ঞানও গায়বী খবরের অন্তর্ভুক্ত; যা আল্লাহ কাউকেও অবগত করান নি। من يخشاها (যে ওর ভয় রাখে) বাক্য এই জন্য ব্যবহার হয়েছে যে, ভীতি প্রদর্শন ও তাবলীগ থেকে উপকৃত কেবল সেই ব্যক্তি হতে পারে, যার অন্তরে আল্লাহর ভয় বিদ্যমান থাকে। নচেৎ ভীতিপ্রদর্শন এবং তাবলীগ তো সকলকেই করা হয়েছে।

كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَاهَا

📘 যেদিন তারা তা প্রত্যক্ষ করবে সেদিন তাদের মনে হবে, যেন তারা পৃথিবীতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক প্রভাতকাল অবস্থান করেছে। [১] [১] عشية যোহর থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এবং ضحى সূর্যোদয় থেকে নিয়ে দুপুর পর্যন্ত সময়কে বলা হয়। অর্থাৎ, যখন কাফেররা জাহান্নামের আযাব প্রত্যক্ষ করবে তখন দুনিয়ার আরাম-বিলাসিতা এবং তার মজা সব কিছু ভুলে যাবে। আর তাদের এমন মনে হবে যে, তারা দুনিয়াতে পুরো একটি দিনও অবস্থান করেনি; বরং দিনের প্রথম ভাগ অথবা শেষ ভাগ কেবলমাত্র অবস্থান করেছিল। অর্থাৎ, পার্থিব জীবনটা তাদের কাছে খুবই স্বল্পক্ষণের মনে হবে।

فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا

📘 অতঃপর (শপথ তাদের;) যারা সকল কর্ম নির্বাহ করে। [১] [১] অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা যে সব কর্ম তাদেরকে অর্পণ করেন তা তাঁরা নির্বাহ করেন। পক্ষান্তরে আসল কর্মনির্বাহী হলেন আল্লাহ তাআলা। কিন্তু যেহেতু আল্লাহ তাআলা নিজের হিকমত অনুযায়ী ফিরিশতা দ্বারা কাজ নেন, সেহেতু তাঁদেরকেও কর্মনির্বাহী বলা হয়েছে। এই অনুপাতে উপরোক্ত পাঁচটি গুণই হল ফিরিশতাদের। আর ঐ ফিরিশতাদের আল্লাহ কসম খেয়েছেন। আর কসমের জওয়াব এখানে উহ্য আছে; অর্থাৎ, "নিশ্চয় তোমরা পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদেরকে অবহিত করা হবে, যা তোমরা করতে।" কুরআনে এই পুনরুত্থান ও প্রতিদান দিবসের সত্যতা প্রমাণের জন্য কয়েক জায়গায় কসম ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, সূরা তাগাবুন ৬৪:৭ নং আয়াতেও আল্লাহ তাআলা উল্লিখিত বাক্যের মাধ্যমে কসম খেয়ে এই প্রকৃতত্বকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এই পুনরুত্থান ও প্রতিদান দিবস কখন হবে? তার বর্ণনা আগামী আয়াতসমূহে দেওয়া হয়েছে।

يَوْمَ تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ

📘 সেদিন প্রকম্পিত করবে (মহাপ্রলয়ের) প্রথম শিংগাধ্বনি। [১] [১] এটা হল শিংগায় প্রথম ফুৎকার যাকে ধ্বংসের ফুৎকার বলা হয়। যার ফলে সারা বিশ্ব-জাহান প্রকম্পিত হবে এবং প্রতিটি জিনিস ধ্বংস হয়ে যাবে।

تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ

📘 তার অনুগামী হবে পরবর্তী (পুনরুত্থানের) শিংগাধ্বনি। [১] [১] এটা হবে শিংগায় দ্বিতীয় ফুৎকার। যার ফলে সমস্ত লোক জীবিত হয়ে কবর থেকে বের হবে। এই দ্বিতীয় ফুৎকারটি প্রথম ফুৎকারের চল্লিশ বছর পর ঘটবে। তাকে رادفة বা পরবর্তী শিংগাধ্বনি এই জন্য বলা হয়েছে যে, এটা প্রথম ফুৎকারের পরে ঘটবে তাই। অর্থাৎ, দ্বিতীয় ফুৎকারটি হল প্রথম ফুৎকারের অনুগামী।

قُلُوبٌ يَوْمَئِذٍ وَاجِفَةٌ

📘 কত হৃদয় সেদিন ভীত-সন্ত্রস্ত হবে। [১] [১] কিয়ামতের ভয়াবহতা এবং কঠিনতার কারণে।

أَبْصَارُهَا خَاشِعَةٌ

📘 তাদের দৃষ্টিসমূহ অবনমিত হবে। [১] [১] অর্থাৎ, ঐ হৃদয়বিশিষ্ট লোকদের দৃষ্টিসমূহ। এমন ভীত-সন্ত্রস্ত লোকদের দৃষ্টিও সেদিন (অপরাধীদের মত) নিচের দিকে ঝুঁকে থাকবে।