slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris slot qris bokep indo xhamster/a> jalalive/a>
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير سورة المعارج

(Al-Maarij) • المصدر: BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ سَأَلَ سَائِلٌ بِعَذَابٍ وَاقِعٍ

📘 এক ব্যক্তি[১] চাইল, সংঘটিত হোক অবধারিত শাস্তি। [১] বলা হয় যে, এই ব্যক্তি ছিল নাযর বিন হারেস অথবা আবূ জাহল যে বলেছিল, {اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ هَذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِنَ السَّمَاءِ} অর্থাৎ, হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ থেকে (আগত) সত্য দ্বীন হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের উপর আকাশ থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদের উপর বেদনাদায়ক শাস্তি অবতীর্ণ কর।" (সূরা আনফাল ৮:৩২ আয়াত) সুতরাং এই লোকটি বদরের যুদ্ধে মারা পড়ল। কেউ কেউ বলেন, এ থেকে রসূল (সাঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। যিনি স্বীয় গোত্রের জন্য বদ্দুআ করেছিলেন। যার ফলে মক্কাবাসীর উপর দুর্ভিক্ষ এসেছিল।

وَلَا يَسْأَلُ حَمِيمٌ حَمِيمًا

📘 আর সুহৃদ সুহৃদের খবর নেবে না।

يُبَصَّرُونَهُمْ ۚ يَوَدُّ الْمُجْرِمُ لَوْ يَفْتَدِي مِنْ عَذَابِ يَوْمِئِذٍ بِبَنِيهِ

📘 (যদিও) তাদেরকে একে অপরের দৃষ্টির সামনে রাখা হবে।[১] অপরাধী সেই দিনে শাস্তির বদলে দিতে চাইবে নিজ সন্তান-সন্ততিকে। [১] কিন্তু সবাই নিজের নিজের চিন্তায় থাকবে। তাই চেনা-পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও একে অপরকে জিজ্ঞাসা করবে না।

وَصَاحِبَتِهِ وَأَخِيهِ

📘 তার স্ত্রী ও ভাইকে।

وَفَصِيلَتِهِ الَّتِي تُؤْوِيهِ

📘 তার জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত।

وَمَنْ فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ثُمَّ يُنْجِيهِ

📘 এবং পৃথিবীর সকলকে, যাতে এই মুক্তিপণ তাকে মুক্তি দেয়। [১] [১] অর্থাৎ, সন্তান-সন্ততি, স্ত্রী, ভাই ও বংশের লোক এ সকল মানুষের কাছে অতীব প্রিয়। কিন্তু কিয়ামতের দিন অপরাধী চাইবে যে, তার কাছ থেকে এই প্রিয় লোকদেরকে মুক্তিপণ বা বিনিময় স্বরূপ নিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হোক! فَصِيْلَةٌ গোষ্ঠীকে বলা হয়। কেননা, তা গোত্র হতে পৃথক হয়। (আর فَصِيْلَةٌ এর অর্থ পৃথক।)

كَلَّا ۖ إِنَّهَا لَظَىٰ

📘 না, কখনই নয়! এটা তো লেলিহান অগ্নি।[১] [১] অর্থাৎ, এটা হল জাহান্নাম। এখানে তার প্রখর উষ্ণতার কথা বর্ণিত হয়েছে।

نَزَّاعَةً لِلشَّوَىٰ

📘 যা দেহ হতে চামড়া খসিয়ে দেবে। [১] [১] অর্থাৎ, গোশত এবং চামড়াকে জ্বালিয়ে ছাই করে দিবে এবং মানুষ কেবল অস্থির কঙ্কালসার হয়ে অবশিষ্ট থাকবে।

تَدْعُو مَنْ أَدْبَرَ وَتَوَلَّىٰ

📘 জাহান্নাম ঐ ব্যক্তিকে ডাকবে, যে পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।

وَجَمَعَ فَأَوْعَىٰ

📘 সে সম্পদ পুঞ্জীভূত এবং সংরক্ষিত করে রেখেছিল। [১] [১] অর্থাৎ, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে সত্য থেকে পিঠ ফিরিয়ে ও মুখ ঘুরিয়ে নিত এবং মাল-ধন জমা করে ধনাগারে সুরক্ষিত করে রাখত, তা আল্লাহর পথে না ব্যয় করত এবং না তার যাকাত আদায় করত। আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে বাকশক্তি দান করবেন। ফলে জাহান্নাম খোদ নিজ জবান দ্বারা এমন লোকদেরকে আহবান করবে যাদের জন্য নিজেদের কৃতকর্মের ফলে জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গেছে। কেউ কেউ বলেন, আহবানকারী তো ফিরিশতাগণ হবেন, এটাকে জাহান্নামের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, কেউ-ই আহবান করবে না, বরং শুধুমাত্র উদাহরণস্বরূপ এইরূপ বলা হয়েছে। মোট কথা হল যে, উল্লিখিত লোকদের ঠিকানা জাহান্নাম হবে।

۞ إِنَّ الْإِنْسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا

📘 মানুষ তো সৃজিত হয়েছে অতিশয় অস্থিরচিত্তরূপে। [১] [১] অত্যধিক লোভী এবং বেশী হা-হুতাশকারীকে هَلُوعٌ বলা হয়। কেননা, এমন ব্যক্তিই কৃপণ ও লোভী হয় এবং খুব বেশী হা-হুতাশ করে। পরের আয়াতে তারই গুণ বর্ণিত হয়েছে।

لِلْكَافِرِينَ لَيْسَ لَهُ دَافِعٌ

📘 অবিশ্বাসীদের জন্য, এটা প্রতিরোধ করবার কেউ নেই।

إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا

📘 যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে, তখন সে হয় হা-হুতাশকারী।

وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا

📘 আর যখন তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে, তখন সে হয় অতি কৃপণ।

إِلَّا الْمُصَلِّينَ

📘 অবশ্য নামাযীগণ এর ব্যতিক্রম;

الَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ

📘 যারা তাদের নামাযে সদা নিষ্ঠাবান,[১] [১] এ থেকে পরিপূর্ণ মু'মিন ও তাওহীদবাদীকে বুঝানো হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লিখিত চারিত্রিক দুর্বলতা থাকে না। বরং এরা প্রশংসনীয় গুণে গুণান্বিত হয়। 'নামাযে সদা নিষ্ঠাবান' কথার মানে হল, তারা নামাযের ব্যাপারে অবহেলা করে না। প্রতিটি নামাযকে তার সঠিক সময়ে বড়ই যত্নের সাথে আদায় করে। কোন ব্যস্ততা তাদেরকে নামায থেকে বিরত রাখতে পারে না এবং দুনিয়ার কোন স্বার্থ তাদেরকে নামায হতে উদাসীন করতে পারে না।

وَالَّذِينَ فِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ مَعْلُومٌ

📘 আর যাদের সম্পদে নির্ধারিত হক রয়েছে-[১] [১] অর্থাৎ, ফরয যাকাত। অনেকের নিকট এ হক ব্যাপক। ওয়াজিব যাকাত ও নফল সাদাকা উভয়ই এর মধ্যে শামিল।

لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ

📘 ভিক্ষুক ও বঞ্চিতের। [১] [১] বঞ্চিতের মধ্যে সে ব্যক্তিও শামিল যে রুযী হতে বঞ্চিত। আর সে ব্যক্তিও শামিল, যে আসমান ও যমীন থেকে আগত কোন বিপদে আক্রান্ত হওয়ার ফলে পুঁজি হতে বঞ্চিত (পুঁজিহারা, দেউলিয়া) হয়ে গেছে এবং সে ব্যক্তিও এর মধ্যে শামিল, যে অভাবী হওয়া সত্ত্বেও ভিক্ষা, যাচ্ঞা বা হাত পাতার অভ্যাস না থাকার কারণে মানুষের দান-সাদাকা থেকে বঞ্চিত থাকে।

وَالَّذِينَ يُصَدِّقُونَ بِيَوْمِ الدِّينِ

📘 আর যারা কর্মফল দিবসকে সত্য বলে জানে। [১] [১] অর্থাৎ, সে এ দিনকে না অস্বীকার করে। আর না সে তার ব্যাপারে কোন সন্দেহ পোষণ করে।

وَالَّذِينَ هُمْ مِنْ عَذَابِ رَبِّهِمْ مُشْفِقُونَ

📘 আর যারা তাদের প্রতিপালকের শাস্তি সম্পর্কে ভীত-সন্ত্রস্ত।[১] [১] অর্থাৎ, আনুগত্য এবং সৎকর্ম সম্পাদন করা সত্ত্বেও আল্লাহর মাহাত্ম্য এবং তাঁর প্রতাপের কারণে তারা তাঁর পাকড়াও-এর ভয়ে কম্পিত থাকে এবং বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহর রহমত যদি আমাদের উপর না হয়, তাহলে আমাদের নেক আমলগুলো আমাদের মুক্তির জন্য যথেষ্ট হবে না। যেমন, এই অর্থের হাদীস পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।

إِنَّ عَذَابَ رَبِّهِمْ غَيْرُ مَأْمُونٍ

📘 নিশ্চয়ই তাদের প্রতিপালকের শাস্তি হতে নির্ভয় থাকা যায় না। [১] [১] এটা পূর্বোক্ত বিষয়েরই তাকীদ স্বরূপ। আল্লাহর আযাব থেকে কারো নির্ভয় হওয়া উচিত নয়, বরং সর্বদা সে আযাবকে ভয় করা এবং তা হতে মুক্তি লাভের সম্ভবপর উপায় ও পন্থা অবলম্বন করা উচিত।

وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ

📘 আর যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে।

مِنَ اللَّهِ ذِي الْمَعَارِجِ

📘 এটা আসবে আল্লাহর নিকট হতে যিনি সোপান-শ্রেণীর অধিকারী। [১] [১] (সোপান বা সিড়িসমূহ বলতে সাত আসমানকে বুঝানো হয়েছে।) অথবা আয়াতের অর্থঃ বহু মর্যাদা ও মহত্ত্বের অধিকারী, যাঁর দিকে ফিরিশতাগণ আরোহণ করেন।

إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ

📘 তাদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্র ব্যতীত; এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। [১] [১] অর্থাৎ, মানুষের যৌন-ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য দুটি বৈধ মাধ্যম রেখেছেন। একটি হল স্ত্রী। আর দ্বিতীয়টি হল অধিকারভুক্ত (যুদ্ধবন্দিনী অথবা ক্রীত)দাসী। বর্তমানে এই অধিকারভুক্ত দাসীর ব্যাপারটা ইসলামের নির্দেশিত কৌশল অনুসারে প্রায় শেষই হয়ে গেছে। তবে আইনগতভাবে এই প্রথাকে একেবারে এই জন্য উচ্ছেদ করা হয়নি যে, ভবিষ্যতে যদি এই ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে অধিকারভুক্ত দাসী দ্বারা উপকৃত হওয়া যেতে পারে। মোট কথা ঈমানদারদের এটাও একটি গুণ যে, তাঁরা যৌন-ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য (উক্ত দুই মাধ্যম ছাড়া) কোন অবৈধ মাধ্যম অবলম্বন করে না।

فَمَنِ ابْتَغَىٰ وَرَاءَ ذَٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْعَادُونَ

📘 তবে কেউ এ ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী।

وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ

📘 এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। [১] [১] অর্থাৎ, তাদের নিকট মানুষের যেসব আমানত থাকে, তাতে তারা খিয়ানত করে না। আর লোকদের সাথে যে অঙ্গীকার করে, তা ভঙ্গ করে না, বরং তা পালন ও পূরণ করে।

وَالَّذِينَ هُمْ بِشَهَادَاتِهِمْ قَائِمُونَ

📘 আর যারা তাদের সাক্ষ্য দানে অটল। [১] [১] অর্থাৎ, তারা সাক্ষ্য সঠিকভাবে প্রদান করে, যদিও এতে (সঠিক সাক্ষ্যদানে) তার কোন নিকটাত্মীয় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবুও। এ ছাড়া তারা (কোন স্বার্থে) সাক্ষ্য গোপনও করে না এবং তাতে কোন পরিবর্তনও করে না।

وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ

📘 এবং নিজেদের নামাযে যত্নবান--

أُولَٰئِكَ فِي جَنَّاتٍ مُكْرَمُونَ

📘 তারা সম্মানিত হবে জান্নাতে।

فَمَالِ الَّذِينَ كَفَرُوا قِبَلَكَ مُهْطِعِينَ

📘 অবিশ্বাসীদের কি হল যে, তারা তোমার দিকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে আসছে।

عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ عِزِينَ

📘 ডান ও বাম দিক হতে দলে দলে? [১] [১] এখানে নবী (সাঃ)-এর যুগের কাফেরদের কথা উল্লেখ হয়েছে। তারা রসূল (সাঃ)-এর মজলিসে দৌড়ে দৌড়ে আসত। কিন্তু তাঁর কথা শুনে আমল করার পরিবর্তে তাঁকে নিয়ে উপহাস করত এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে যেত। আর তারা দাবী করত যে, যদি মুসলিমরা জান্নাতে যায়, তাহলে আমরা তাদের পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করব। পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা কাফেরদের এই বাতিল ধারণার খন্ডন করেছেন।

أَيَطْمَعُ كُلُّ امْرِئٍ مِنْهُمْ أَنْ يُدْخَلَ جَنَّةَ نَعِيمٍ

📘 তাদের প্রত্যেক ব্যক্তিই কি এই আকাঙ্ক্ষা করে যে, তাকে প্রবেশ করানো হবে সুখময় জান্নাতে।

كَلَّا ۖ إِنَّا خَلَقْنَاهُمْ مِمَّا يَعْلَمُونَ

📘 না, তা হবে না।[১] নিশ্চয় আমি তাদেরকে এমন বস্তু হতে সৃষ্টি করেছি, যা তারা জানে। [২] [১] অর্থাৎ, এটা হতে পারে না যে, মু'মিন এবং কাফের উভয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবে। যাঁরা রসূল (সাঃ)-কে বিশ্বাস করেছে এবং যারা তাঁকে মিথ্যা ভেবেছে তারা উভয়েই আখেরাতের নিয়ামত লাভ করবে? এ রকম হতেই পারে না। [২] অর্থাৎ, مَاءٍ مَهِيْنٍ (তুচ্ছ বীর্যবিন্দু) হতে। এটাই যখন প্রকৃত ব্যাপার, তখন অহংকার করা কি মানুষের শোভা পায়? যে অহংকারের কারণেই সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে মিথ্যা ভাবে।

تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ

📘 ফিরিশতা এবং রূহ তাঁর দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়[১] এক দিনে যা (পার্থিব) পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। [২] [১] 'রূহ' বলতে জিবরীল (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। তাঁর মর্যাদা অতীব মহান বিধায় পৃথকভাবে বিশেষ করে তাঁর উল্লেখ করা হয়েছে। নচেৎ তিনিও ফিরিশতাদেরই অন্তর্ভুক্ত। অথবা 'রূহ' বলতে মানুষের আত্মাসমূহকে বুঝানো হয়েছে, যা মৃত্যুর পর আসমানের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, যেমন হাদীসের কোন কোন বর্ণনায় এসেছে। [২] এই দিনের সংখ্যা নির্দিষ্টীকরণের ব্যাপারে বহু মতভেদ রয়েছে; যেমন সূরা সিজদার শুরুতে আলোচনা করেছি। এখানে ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) চারটি উক্তি উল্লেখ করেছেন। প্রথম উক্তি হল, এ থেকে মহা আরশ থেকে সপ্ত যমীন (সর্বনিম্ন পাতাল) পর্যন্ত যে দূরত্ব ও ব্যবধান তার পরিমাপ বুঝানো হয়েছে। আর তা হল ৫০ হাজার বছরের পথ। দ্বিতীয় উক্তি হল, পৃথিবীর সর্বমোট বয়স। অর্থাৎ, পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে নিয়ে কিয়ামত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত মোট সময় হল ৫০ হাজার বছর। এর মধ্য হতে কতকাল অতিবাহিত হয়েছে এবং কতকাল অবশিষ্ট আছে, তা একমাত্র মহান আল্লাহই জানেন। তৃতীয় উক্তি হল, এটা হল দুনিয়া ও আখেরাতের মধ্যেকার পার্থক্যসূচক একটি দিনের পরিমাণ। চতুর্থ উক্তি হল, এটা হল কিয়ামতের দিনের পরিমাণ। অর্থাৎ, কাফেরদের উপর হিসাবের এই দিনটি ৫০ হাজার বছরের মত ভারী হবে। কিন্তু মু'মিনদের জন্য দুনিয়ায় এক ওয়াক্ত ফরয নামায আদায় করার থেকেও সংক্ষিপ্ত মনে হবে। (আহমদ ৩/৭৫, হাদীসটি সহীহ নয়। সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে, মুমিনদের জন্য কিয়ামতের দিন যোহর থেকে আসর পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময় পরিমাণ লম্বা হবে। দেখুনঃ সহীহুল জামে' ৮১৯৩নং -সম্পাদক) ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) এই উক্তিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কেননা, হাদীসসমূহ থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন একটি হাদীসে এসেছে যে, যারা যাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন তাদেরকে যে শাস্তি দেওয়া হবে, তার বিস্তারিত আলোচনা করে নবী (সাঃ) বলেছেন, "যে পর্যন্ত না আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মাঝে ফায়সালা করবেন এমন দিনে, যার পরিমাণ তোমাদের গণনানুযায়ী ৫০ হাজার বছরের হবে।" (মুসলিমঃ যাকাত অধ্যায়) এই ব্যাখ্যানুযায়ী في يومٍ 'ফী ইয়াওমিন' এর সম্পর্ক হবে عَذَاب এর সাথে। অর্থাৎ, সংঘটনশীল সেই আযাব কিয়ামতের দিন হবে, যা কাফেরদের উপর ৫০ হাজার বছরের মত ভারী হবে।

فَلَا أُقْسِمُ بِرَبِّ الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ إِنَّا لَقَادِرُونَ

📘 আমি শপথ করছি উদয়াচল ও অস্তাচল-সমূহের[১] অধিকর্তার! নিশ্চয়ই আমি সক্ষম-- [১] প্রতিদিন সূর্য পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে উদয় হয় এবং তা পশ্চিমে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অস্ত যায়। এই হিসাবে উদয়াচলও অনেক এবং অস্তাচলও। বিস্তারিত জানার জন্য সূরা 'সাফফাত ৩৭:৫ নং আয়াত দ্রষ্টব্য।

عَلَىٰ أَنْ نُبَدِّلَ خَيْرًا مِنْهُمْ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ

📘 তাদের অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর (সৃষ্টি)কে তাদের স্থলবর্তী করতে[১] এবং এতে আমি অক্ষম নই।[২] [১] অর্থাৎ, এদেরকে শেষ করে এক নতুন সৃষ্টি আবাদ করার সম্পূর্ণ শক্তি আমি রাখি। [২] এটাই যদি প্রকৃত ব্যাপার হয়, তবে কিয়ামতের দিন তাদেরকে পুনর্জীবিত করে উঠানোর শক্তি আমি কি রাখি না?

فَذَرْهُمْ يَخُوضُوا وَيَلْعَبُوا حَتَّىٰ يُلَاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي يُوعَدُونَ

📘 অতএব তাদেরকে বাক-বিতন্ডা ও ক্রীড়া-কৌতুকে মত্ত থাকতে দাও,[১] যে দিবস সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল, তার সম্মুখীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। [১] অর্থাৎ, বাজে ও অনর্থক আলোচনায় মগ্ন থাকতে এবং নিজেদের দুনিয়া নিয়ে মত্ত থাকতে দাও। তুমি তোমার প্রচার-প্রসারের কাজ অব্যাহত রাখ। তাদের আচরণ যেন তোমাকে তোমার দায়িত্ব পালনে উদাসীন অথবা মনঃক্ষুণ্ণ না করে।

يَوْمَ يَخْرُجُونَ مِنَ الْأَجْدَاثِ سِرَاعًا كَأَنَّهُمْ إِلَىٰ نُصُبٍ يُوفِضُونَ

📘 সে দিন তারা কবর হতে বের হবে দ্রুত বেগে; (মনে হবে) যেন তারা কোন একটি লক্ষ্যস্থলের দিকে ধাবিত হচ্ছে। [১] [১] اَجْدَاثٌ শব্দটি جَدَث বহুবচন। এর অর্থ হল, কবর। نُصُبٌ মানে হল, থান, বেদী; যেখানে মূর্তির নামে পশু জবাই করা হয়। আর মূর্তির অর্থেও তা ব্যবহার হয়। এখানে দ্বিতীয় অর্থে ব্যবহার হয়েছে। যখন সূর্য উদয় হয়, তখন মূর্তিপূজারীরা সর্ব প্রথম তাদেরকে চুমা দেওয়ার জন্য (প্রতিযোগিতামূলকভাবে) তাদের দিকে দ্রুত গতিতে দৌড় দিতে থাকে। কেউ কেউ এর অর্থ عَلَمٌ (পতাকা) নিয়েছেন। যেভাবে যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যরা নিজেদের পতাকার দিকে দৌড়ে যায়, অনুরূপ কিয়ামতের দিন কবর থেকে বড় দ্রুত গতিতে বের হয়ে হাশরের ময়দানের দিকে ধাবিত হবে। (এইজন্য অনুবাদে 'লক্ষ্যস্থল'-এর অর্থ করা হয়েছে।) يُوْفِضُوْنَ এখানে يُسرِعُوْنَ এর অর্থে ব্যবহার হয়েছে।

خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۚ ذَٰلِكَ الْيَوْمُ الَّذِي كَانُوا يُوعَدُونَ

📘 অবনত নেত্রে;[১] হীনতা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে।[২] এটাই সেই দিন, যার বিষয়ে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।[৩] [১] যেমনভাবে অপরাধীদের দৃষ্টি অবনত থাকে। কারণ, তারা তাদের অপরাধ সম্পর্কে অবগত থাকে। [২] অর্থাৎ, কঠিন লাঞ্ছনা তাদেরকে ঘিরে ধরবে এবং তাদের চেহারা ভয়ে কালো হয়ে যাবে। [৩] অর্থাৎ, রসূলগণের জবান এবং আসমানী কিতাবসমূহের মাধ্যমে।

فَاصْبِرْ صَبْرًا جَمِيلًا

📘 সুতরাং তুমি ধৈর্যধারণ কর পরম ধৈর্য।

إِنَّهُمْ يَرَوْنَهُ بَعِيدًا

📘 নিশ্চয় তারা এ (শাস্তি)কে সুদূর মনে করছে।

وَنَرَاهُ قَرِيبًا

📘 কিন্তু আমি এটাকে আসন্ন দেখছি।[১] [১] 'সুদূর' অর্থ, অসম্ভব। আর 'আসন্ন' বা 'নিকট' অর্থ, সুনিশ্চিত। অর্থাৎ, কাফেররা কিয়ামতকে অসম্ভব মনে করে থাকে। আর মুসলিমদের বিশ্বাস হল যে, তা অবশ্যই ঘটবে। যেহেতু, كُلُّ مَا هُوَ آتٍ فَهُوَ قَرِيْبٌ অর্থাৎ, প্রতিটি জিনিস যা আসবে তা অতি নিকটেই।

يَوْمَ تَكُونُ السَّمَاءُ كَالْمُهْلِ

📘 সেদিন আকাশ হবে গলিত ধাতুর মত।

وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ

📘 এবং পর্বতসমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত। [১] [১] অর্থাৎ, ধূনিত রঙিন তুলোর মত। যেমন, সূরা ক্বারিআহতে আছে। {كَالْعِهْنِ الْمَنْفُوْش}