🕋 تفسير سورة الفجر
(Al-Fajr) • المصدر: BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالْفَجْرِ
📘 শপথ ফজরের। [১]
[১] এর দ্বারা সাধারণ ফজর বোঝান হয়েছে। কোন নির্দিষ্ট দিনের ফজর উদ্দেশ্য নয়।
وَفِرْعَوْنَ ذِي الْأَوْتَادِ
📘 এবং বহু সৈন্য শিবিরের অধিপতি ফিরাউনের সাথে? [১]
[১] ذي الأوتاد এর আসল অর্থঃ গোঁজ বা কীলক-ওয়ালা। এর মর্মার্থ এই যে, ফিরআউন বিশাল সংখ্যক সেনাবাহিনীর অধিপতি ছিল। যার ছিল অনেক অনেক শিবির বা তাঁবু; যা মাটিতে কীলক গেড়ে টাঙ্গানো হত। অথবা এর দ্বারা তার অত্যাচার ও যুলুমবাজির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। যেহেতু সে কীলক বা পেরেক দ্বারা মানুষকে শাস্তি দিত।
(ফাতহুল কাদীর)
الَّذِينَ طَغَوْا فِي الْبِلَادِ
📘 যারা দেশের মধ্যে উদ্ধত আচরণ করেছিল।
فَأَكْثَرُوا فِيهَا الْفَسَادَ
📘 অনন্তর সেখানে তারা বিপর্যয় বৃদ্ধি করেছিল।
فَصَبَّ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ سَوْطَ عَذَابٍ
📘 ফলে তোমার প্রতিপালক তাদের উপর শাস্তির চাবুক হানলেন।[১]
[১] অর্থাৎ, তাদের উপর আকাশ হতে তাঁর আযাব অবতীর্ণ করে তাদেরকে ধ্বংস করলেন অথবা তাদেরকে উপদেশমূলক পরিণাম প্রদর্শন করলেন।
إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ
📘 নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সময়ের প্রতীক্ষায় থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। [১]
[১] অর্থাৎ, সমস্ত সৃষ্টির কর্মাকর্ম তিনি পরিদর্শন করছেন এবং সেই অনুযায়ী তিনি ইহ-পরকালে প্রতিফল দেবেন।
فَأَمَّا الْإِنْسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ
📘 মানুষ তো এরূপ যে, তার প্রতিপালক যখন তাকে পরীক্ষা করেন, পরে তাকে সম্মানিত করেন এবং সুখ ও সম্পদ দান করেন, তখন সে বলে, ‘আমার প্রতিপালক আমাকে সম্মানিত করেছেন।’[১]
[১] অর্থাৎ, যখন আল্লাহ কাউকে রুযী ও ধন-দৌলতের প্রাচুর্য দান করেন, তখন সে নিজের ব্যাপারে ভুল ধারণার স্বীকার হয়ে মনে করে যে, আল্লাহ তার প্রতি বড় অনুগ্রহশীল। অথচ এ প্রাচুর্য তাকে পরীক্ষাস্বরূপ দান করা হয়।
وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ
📘 এবং আবার যখন তাকে পরীক্ষা করেন, তারপর তার রুযী সংকুচিত করেন, তখন সে বলে, ‘আমার প্রতিপালক আমাকে অপমানিত করেছেন।’[১]
[১] অর্থাৎ, যখন আল্লাহ তাকে (রুযী-রোযগারের) সংকীর্ণতায় ফেলে পরীক্ষা করেন, তখন সে তাঁর ব্যাপারে কুধারণা প্রকাশ করে থাকে।
كَلَّا ۖ بَلْ لَا تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ
📘 না, কখনই নয়। [১] বস্তুতঃ তোমরা পিতৃহীনকে সমাদর কর না। [২]
[১] অর্থাৎ, ব্যাপার এমন নয়, যেমন লোকেরা ধারণা করে থাকে। আল্লাহ তাআলা মাল-ধন নিজ প্রিয় বান্দাদেরকে দান করে থাকেন এবং অপ্রিয় বান্দাদেরকেও। আবার তাদের উভয়কে সংকীর্ণতাতেও ফেলে থাকেন। উভয় অবস্থাতেই আল্লাহর আনুগত্য জরুরী। অতএব বান্দার উচিত, তিনি মাল-ধন দান করলে তাঁর কৃতজ্ঞতা করা এবং সংকীর্ণতা দিলে ধৈর্য ধারণ করা।
[২] অর্থাৎ, তাদের সাথে সেই সুন্দর আচরণ করা হয় না, যা তাদের প্রাপ্য। নবী (সাঃ) বলেছেন, "সেই গৃহ সব থেকে উত্তম যে গৃহে অনাথের সাথে ভাল ব্যবহার করা হয়। আর সব থেকে খারাপ গৃহ সেটা, যে গৃহে অনাথের সাথে মন্দ ব্যববহার করা হয়।" অতঃপর তিনি (সাঃ) নিজ (তর্জনী ও মধ্যমা) আঙ্গুল দ্বারা ইঙ্গিত করে বললেন, "আমি এবং অনাথের তত্ত্বাবধানকারী জান্নাতে এইভাবে পাশাপাশি অবস্থান করব; যেমন এই দুটি আঙ্গুল মিলিত আছে।"
(আবু দাউদ আদব অধ্যায়, অনা
থকে শামিল করার পরিচ্ছেদ) (প্রকাশ থাকে যে, এ হাদীসের প্রথমাংশ আবূ দাঊদে নেই এবং সেটা যয়ীফও। অবশ্য শেষাংটি আবূ দাঊদ তথা বুখারী শরীফেও আছে। -সম্পাদক)
وَلَا تَحَاضُّونَ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ
📘 এবং অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।
وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلًا لَمًّا
📘 এবং উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পূর্ণরূপে আত্মসাৎ করে থাক। [১]
[১] অর্থাৎ, যে কোন উপায়েই লাভ হোক; চাহে হালাল উপায়ে অথবা হারাম উপায়ে। لَمًّا শব্দের অর্থ হল جَمعًا অর্থাৎ, সম্পূর্ণরূপে।
وَلَيَالٍ عَشْرٍ
📘 শপথ দশ রাত্রির। [১]
[১] অধিকাংশ মুফাসসিরগণ বলেন, 'দশ রাত্রি' বলতে যুলহজ্জ মাসের প্রথম দশ রাত্রিকে বোঝানো হয়েছে। যার গুরুত্ব হাদীসসমূহে বর্ণিত হয়েছে। নবী (সাঃ) বলেছেন, "যুলহজ্জের প্রথম দশ দিনের কৃত আমলের চেয়ে আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় আর কোন আমল নেই। (সাহাবাগণ বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদও নয় কি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে এমন ব্যক্তির (আমল) যে নিজের জান-মালসহ বের হয় এবং তারপর কিছুও সাথে নিয়ে সে ফিরে আসে না।
(বুখারী আইয়্যামে তাশরীক দিনের আমলের ফযীলত পরিচ্ছেদ,আবু দাউদ)
وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا
📘 এবং তোমরা ধন-সম্পদকে অত্যধিক ভালোবেসে থাক। [১]
[১] جَمّا অর্থ হল كَثِيرًا অর্থাৎ, অত্যধিক।
كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا
📘 না এটা সঙ্গত নয়! [১] যখন পৃথিবীকে ভেঙ্গে পূর্ণ-বিচূর্ণ করা হবে।
[১] অথবা তোমাদের আমল এমন হওয়া উচিত নয় যেমন উল্লেখ হয়েছে। কেননা, এক সময় আসবে "যখন ------।"
وَجَاءَ رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا
📘 এবং যখন তোমার প্রতিপালক আগমন করবেন আর সারিবদ্ধভাবে ফিরিশতাগণও (সমুপস্থিত হবে)। [১]
[১] বলা হয় যে, কিয়ামতের দিন যখন ফিরিশতাগণ আসমান হতে নিচে অবতরণ করবেন, তখন প্রত্যেক আসমানের ফিরিশতাদের আলাদা আলাদা কাতার বা সারি হবে। এইরূপ সাতটি কাতার হবে যাঁরা সারা পৃথিবীকে বেষ্টন করে নেবে।
وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ ۚ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنْسَانُ وَأَنَّىٰ لَهُ الذِّكْرَىٰ
📘 সেদিন জাহান্নামকে আনয়ন করা হবে[১] এবং সেদিন মানুষ উপলব্ধি করতে পারবে; কিন্তু তার উপলব্ধি কি কোন কাজে আসবে? [২]
[১] ৭০ হাজার লাগামে জাহান্নাম বাঁধা থাকবে। আর প্রতিটি লাগামে ৭০ হাজার করে ফিরিশতা নিযুক্ত থাকবেন এবং সেদিন তাঁরা তা টেনে আনয়ন করবেন।
(সহীহ মুসলিম জান্নাতের বিবরণ অধ্যায়, জাহান্নামে অগ্নির উষ্ণতা ও গভীরতার পরিচ্ছেদ)
জাহান্নামকে আরশের বাম দিকে উপস্থিত করা হবে। তা দেখে সকল নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা ও আম্বিয়া ('আলাইহিমুস সালাম)-গণ হাঁটু গেড়ে লুটিয়ে পড়বেন। আর 'ইয়া রাব্ব! নাফসী নাফসী' বলতে থাকবেন।
(ফাতহুল ক্বাদীর)
[২] অর্থাৎ, এই ভয়ংকর দৃশ্য দেখে মানুষের চোখ খুলে যাবে এবং নিজ কুফর ও কৃতপাপের জন্য লজ্জিত হবে। কিন্তু সেদিন লজ্জিত হয়ে, উপলব্ধি করে উপদেশ গ্রহণ করলেও কোন উপকার হবে না।
يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي
📘 সে বলবে, ‘হায়! আমার এ জীবনের জন্য আমি যদি কিছু অগ্রিম পাঠাতাম!’ [১]
[১] এই বলে আফসোস ও আক্ষেপ উক্ত লজ্জা ও লাঞ্ছনারই অংশবিশেষ। কিন্তু সেদিন তা কোন উপকারে আসবে না।
فَيَوْمَئِذٍ لَا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ
📘 সেদিন তাঁর (আল্লাহর) শাস্তির মত শাস্তি অন্য কেউ দিতে পারবে না।
وَلَا يُوثِقُ وَثَاقَهُ أَحَدٌ
📘 এবং তাঁর বন্ধনের মত বন্ধন কেউ বাঁধতে পারবে না। [১]
[১] এই জন্য যে, সেদিন সমস্ত প্রকার ইচ্ছা ও এখতিয়ার কেবলমাত্র আল্লাহরই হাতে হবে। অন্য কারো তাঁর সামনে কিছু করবার ক্ষমতা থাকবে না। তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ কারো সুপারিশ পর্যন্তও করতে পারবে না। এই অবস্থায় কাফেরদের যে আযাব হবে এবং যেভাবে তারা আল্লাহর বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে, তার কল্পনাও করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়; তা অনুমান করা তো দূরের কথা। এ অবস্থা তো যালেম ও অপরাধীদের হবে। পক্ষান্তরে ঈমানদার এবং আল্লাহর অনুগত বান্দাগণের অবস্থা হবে এর সম্পূর্ণ বিপরীত; যেমন পরবর্তী আয়াতসমূহে বর্ণিত হয়েছে।
يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ
📘 হে উদ্বেগশূন্য চিত্ত!
ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَرْضِيَّةً
📘 তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট[১] ফিরে এস সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে।
[১] অর্থাৎ, তাঁর প্রতিদান, পুরস্কার ও ঐ সুখ-সামগ্রীর নিকট ফিরে এস; যা তিনি নিজ (নেক) বান্দার জন্য জান্নাতে প্রস্ত্তত রেখেছেন। কেউ কেউ বলেন, কিয়ামতের দিন এ কথা বলা হবে। আবার কেউ বলেন যে, মৃত্যুর সময় ফিরিশতাগণ বান্দাকে এ কথা বলে সুসংবাদ দেন। এই প্রকার কিয়ামতের দিনেও তাদেরকে বলা হবে, যা আয়াতে উল্লেখ হয়েছে। হাফেয ইবনে কাসীর (রঃ) ইবনে আসাকেরের হাওয়ালায় বলেন যে, নবী (সাঃ) এক ব্যক্তিকে এই দু'আটি পড়ার আদেশ দিয়েছেনঃ 'আল্লাহুম্মা ইন্নী আস্আলুকা নাফসান বিকা মুত্বমাইন্নাহ, তু'মিনু বিলিকায়িকা অতারযা বিক্বায্বা-য়িকা অতাক্বনাউ বিআত্বা-য়িক।'
(ইবনে কাসীর) (এটি সহীহ নয়। দেখুনঃ সিলসিলাহ যয়ীফাহ ৪০৬০নং -সম্পাদক)
فَادْخُلِي فِي عِبَادِي
📘 সুতরাং তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও।
وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ
📘 শপথ জোড় ও বেজোড়ের। [১]
[১] এর দ্বারা জোড় এবং বিজোড় সংখ্যা অথবা জোড় এবং বিজোড় সংখ্যক বস্তুকে বুঝানো হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, আসলে এটা সৃষ্টির কসম। এই জন্য যে, সৃষ্টি জোড় অথবা বিজোড় হয়; অন্য কিছু নয়।
(আয়সারুত তাফাসীর)
وَادْخُلِي جَنَّتِي
📘 এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।
وَاللَّيْلِ إِذَا يَسْرِ
📘 এবং শপথ রাত্রির, যখন তা গত হতে থাকে। [১]
[১] অর্থাৎ, রাত যখন আগত হয় এবং যখন বিদায় নেয়। কেননা, سَير (চলা) শব্দটি আসা যাওয়া উভয় অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে।
هَلْ فِي ذَٰلِكَ قَسَمٌ لِذِي حِجْرٍ
📘 নিশ্চয়ই এর মধ্যে শপথ রয়েছে জ্ঞানবান ব্যক্তির জন্যে। [১]
[১] ذلك (এর) বলে উল্লিখিত যে সকল বস্তুর কসম খাওয়া হয়েছে তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই সমস্ত বস্তুর কসম বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীদের জন্য যথেষ্ট নয় কি? حِجر শব্দের অর্থ হল বাধা দেওয়া, মানা করা। যেহেতু মানুষের জ্ঞান মানুষকে অশ্লীল কর্ম থেকে বাধা প্রদান করে। এই জন্য আকল (জ্ঞান)-কেও হিজর বলা হয়। যেমন একই অর্থের দিকে খেয়াল রেখে জ্ঞানকে نُهية ও বলা হয়। কসমের জওয়াব অথবা যার উপর কসম খাওয়া হয়েছে তার জওয়াব হল لَتُبعَثُن (অর্থাৎ, অবশ্যই তোমরা পুনরুত্থিত হবে)। কেননা, মক্কী সূরাসমূহে আকীদা সংশুদ্ধির প্রতি অধিকাধিক জোর দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, কসমের জওয়াব হল কয়েক আয়াতের পর এই বাক্য; "নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সময়ের প্রতীক্ষায় থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।" আগে প্রমাণস্বরূপ কিছু সংখ্যক জাতির কথা উল্লেখ করলেন; যারা মিথ্যারোপ ও ঔদ্ধত্য করার কারণে ধ্বংস হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য হল মক্কাবাসীকে সতর্ক করা যে, যদি তোমরাও রসূল (সাঃ) এর প্রতি মিথ্যা আরোপ করা থেকে ফিরে না এস, তাহলে তোমাদের পরিণামও ঐরূপ হবে; যেমন পূর্বেকার লোকেদের হয়েছিল।
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ
📘 তুমি কি দেখনি, তোমার প্রতিপালক আ’দ জাতির সাথে কিরূপ আচরণ করেছিলেন; [১]
[১] তাদের প্রতি হূদ (আঃ)-কে নবী বানিয়ে প্রেরণ করা হয়েছিল। তারা তাঁকে মিথ্যা ভাবল, অবশেষে প্রচন্ড ঝড়ো-হাওয়ার কঠিন আযাব তাদেরকে বেষ্টন করে ফেলল। নিরবচ্ছিন্নভাবে সাত রাত এবং আট দিন পর্যন্ত এই আযাব তাদের উপর অটল ছিল।
(সূরা হাক্কবাহ ৬৯:৬-৮ আয়াত)
যা তাদেরকে তছনছ করে ফেলেছিল।
إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ
📘 সুদীর্ঘ দেহের অধিকারী ইরাম গোত্রের সাথে? [১]
[১] إِرَم শব্দটি عاد শব্দের (আরবী ব্যাকরণে বিবরণব্যঞ্জক) আত্ফে বায়ান অথবা বদল। ইরাম আদ জাতির পিতামহের (দাদার) নাম ছিল। তাদের বংশতালিকা এইরূপ ছিল 'আদ বিন আউস বিন ইরাম বিন সাম বিন নূহ।
(ফাতহুল ক্বাদীর)
এর উদ্দেশ্য এ কথা স্পষ্ট করা যে, এ ছিল প্রথম আদ (হূদ জাতি)। ذات العماد (স্তম্ভ-ওয়ালা) বলে তাদের ক্ষমতা, শক্তিমত্তা ও দৈহিক দীর্ঘতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও তারা অট্টালিকা নির্মাণ কর্মেও পটু ছিল। তারা মজবুত ভিত্তি করে বিশাল বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করত। ذات العماد এ উক্ত উভয় অর্থই শামিল হতে পারে।
الَّتِي لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِي الْبِلَادِ
📘 যার সমতুল্য জাতি অন্য কোন দেশে সৃষ্টি হয়নি। [১]
[১] অর্থাৎ, এমন সুদীর্ঘ দেহী, বলবান ও শক্তিশালী আর কোন জাতি সৃষ্টি হয়নি। এই জাতি গর্ব করে বলত যে, 'আমাদের থেকে অধিক শক্তিশালী আর কারা আছে।'
(সূরা হা -মীম সাজদাহ ৪১:১৫ আয়াত)
وَثَمُودَ الَّذِينَ جَابُوا الصَّخْرَ بِالْوَادِ
📘 এবং সামূদ জাতির সাথে? যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল? [১]
[১] এরা স্বালেহ (আঃ)-এর জাতি ছিল। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পাথর খোদাই কাজের বিশেষ দক্ষতা ও ক্ষমতা দান করেছিলেন। এমনকি তারা পাহাড়কে কেটে নিজেদের বাসস্থান নির্মাণ করত। যেমন কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে, "তোমরা তো নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করছ।"
(সূরা শুআরা ২৬:১৪৯ আয়াত)