slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير سورة النبأ

(An-Naba) • المصدر: BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ عَمَّ يَتَسَاءَلُونَ

📘 তারা আপোসে কোন্ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?[১] [১] রসূল (সাঃ) যখন নবুঅতপ্রাপ্ত হলেন, তখন তিনি তাওহীদ, কিয়ামত ইত্যাদির কথা বয়ান করতে লাগলেন এবং কুরআন মাজীদ তিলাঅত করে শুনালেন, সেই সময় কাফের ও মুশরিকরা আপোসে জিজ্ঞাসা করতে লাগল যে, কিয়ামত কি সত্যিকারে ঘটবে -- যেমন এই লোকটি দাবী করছে? অথবা এই কুরআন কি সত্যিকারে আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে -- যেমন মুহাম্মাদ বলছে? প্রশ্নবাচক শব্দ দ্বারা আল্লাহ প্রথমে সেই সমস্ত জিনিসের সেই মহত্ত্ব প্রকাশ করেছেন, যা তার আছে। অতঃপর তিনি নিজেই এর উত্তর দিয়েছেন যে,-------।

وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ لِبَاسًا

📘 রাত্রিকে করেছি আবরণ স্বরূপ। [১] [১] অর্থাৎ, রাতের অন্ধকার এবং কালো বর্ণ প্রতিটি জিনিসকে নিজের আঁচলে আবৃত ও গোপন করে নেয়। যেমনভাবে, আবরণ বা পোষাক-পরিচ্ছদ মানুষের দেহকে আবৃত ও গোপন করে নেয়।

وَجَعَلْنَا النَّهَارَ مَعَاشًا

📘 এবং দিবসকে করেছি জীবিকা অন্বেষণের উপযোগী। [১] [১] উদ্দেশ্য হল যে, তিনি দিনকে উজ্জ্বলময় বানিয়েছেন; যাতে লোকেরা জীবিকা ও রুযী অন্বেষণের জন্য চেষ্টা ও পরিশ্রম করতে পারে।

وَبَنَيْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعًا شِدَادًا

📘 আর নির্মাণ করেছি তোমাদের ঊর্ধ্বদেশে সুদৃঢ় সপ্ত আকাশ।[১] [১] এদের প্রতিটির মাঝে পাঁচ শত বছরের পথের দূরত্ব আছে। যা এসবের মজবুতি প্রমাণ করে।

وَجَعَلْنَا سِرَاجًا وَهَّاجًا

📘 এবং সৃষ্টি করেছি একটি প্রদীপ্ত প্রদীপ (সূর্য)। [১] [১] প্রদীপ্ত প্রদীপ বলে উদ্দেশ্য হল সূর্য। এখানে جعل অর্থ হল خلق। অর্থাৎ, তিনি সৃষ্টি করেছেন।

وَأَنْزَلْنَا مِنَ الْمُعْصِرَاتِ مَاءً ثَجَّاجًا

📘 আর বর্ষণ করেছি পানিপূর্ণ মেঘমালা হতে প্রচুর পানি। [১] [১] معصرات সেই মেঘসমূহ যা পানি দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে, কিন্তু যা এখনো বর্ষণ করেনি। যেমন, المرأة المعتصرة সেই নারীকে বলা হয়, যার মাসিক (ঋতুর) সময় ঘনিয়ে এসেছে। ثجاجًا অর্থ হল অতিরিক্তভাবে প্রবাহিত হয়ে যায় এমন পানি।

لِنُخْرِجَ بِهِ حَبًّا وَنَبَاتًا

📘 যাতে তা দিয়ে আমি উদ্‌গত করি শস্য ও উদ্ভিদ। [১] [১] حب (শস্য) হল সেই সকল ফসল, যা খোরাকের জন্য গুদামজাত করে রাখা যায়; যেমন, গম, ধান, যব, ভুট্টা ইত্যাদি। আর نبات বা উদ্ভিদ হল শাক-সবজি এবং ঘাস-পাতা ইত্যাদি যা পশুতে ভক্ষণ করে থাকে।

وَجَنَّاتٍ أَلْفَافًا

📘 এবং ঘন সন্নিবিষ্ট উদ্যানসমূহ। [১] [১] ألفافًا অধিক ডাল-পালার কারণে এক অপরের সাথে মিলে যাওয়া গাছ-পালা অর্থাৎ, সঘন বাগান।

إِنَّ يَوْمَ الْفَصْلِ كَانَ مِيقَاتًا

📘 নিশ্চয়ই নির্ধারিত আছে ফায়সালার দিবস; [১] [১] অর্থাৎ, পূর্বেকার এবং শেষকার সবারই জমা হবার এবং ওয়াদার দিন। তাকে 'ফায়সালার দিবস' এই জন্য বলা হয়েছে যে, সেই দিনে জমা হওয়ার উদ্দেশ্যই হল সমস্ত মানুষের আমলানুযায়ী ফায়সালা করা হবে।

يَوْمَ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ فَتَأْتُونَ أَفْوَاجًا

📘 সে দিন শিংগায় ফুৎকার দেওয়া হবে অতঃপর তোমরা দলে দলে সমাগত হবে। [১] [১] কেউ কেউ এর ভাবার্থ এটাও বলেছেন যে, প্রত্যেক উম্মত নিজের রসূলের সাথে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। এটা হবে দ্বিতীয় ফুৎকারের সময়, যখন সমস্ত মানুষ কবর থেকে জীবিত হয়ে বের হয়ে আসবে। আল্লাহ তাআলা আসমান হতে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। যাতে মানুষ উদ্ভিদের ন্যায় উদগত হবে। মানুষের মেরুদন্ডের (নিম্নভাগে) শেষাংশের হাড় ব্যতীত দেহের সব কিছু মাটিতে বিনষ্ট হয়ে যাবে। ঐ হাড় দ্বারা কিয়ামতের দিন সমস্ত সৃষ্টিকে পুনর্বার গঠন করা হবে। (সহীহ বুখারী সূরা নাবার ব্যাখ্যা পরিচ্ছেদ)

وَفُتِحَتِ السَّمَاءُ فَكَانَتْ أَبْوَابًا

📘 আকাশকে উন্মুক্ত করা হবে, ফলে তা হবে বহু দ্বার বিশিষ্ট।[১] [১] অর্থাৎ, ফিরিশতাগণের জন্য অবতরণের পথ হয়ে যাবে। এবং তাঁরা পৃথিবীতে অবতরণ করবেন।

عَنِ النَّبَإِ الْعَظِيمِ

📘 সেই মহা সংবাদ বিষয়ে।

وَسُيِّرَتِ الْجِبَالُ فَكَانَتْ سَرَابًا

📘 এবং চালিত করা হবে পর্বতসমূহকে, ফলে তা মরীচিকায় পরিণত হবে। [১] [১] سراب (মরীচিকা) সেই বালিরাশিকে বলা হয়, যা (রোদের তাপে) দূর হতে পানি মনে হয়। পাহাড়ও মরীচিকার মত কেবল দূর হতে দৃশ্যমান বস্তুতে পরিণত হয়ে যাবে। আর তারপরই তা একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তার কোন চিহ্ন পর্যন্ত বাকী থাকবে না। কেউ কেউ বলেছেন যে, কুরআনে (কিয়ামতের দিন) পাহাড়ের নানান ধরণের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে, যাদের মাঝে সমন্বয়ের পথ হল এই যে, (১) প্রথমে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া হবে। فدكتا دكة واحدة (সূরা হাক্ক্বাহ ৬৯:১৪ আয়াত) (২) তারপর তা ধূনিত রঙ্গীন পশমের মত হয়ে যাবে। كالعهن المنفوش (সূরা ক্বারিআহ ১০১:৫ আয়াত) (৩) তারপর তা হবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণার মত। فكانت هباء منبثا (ওয়াক্বিআহ ৫৬:৬ আয়াত) (৪) তারপর তা উড়িয়ে দেওয়া হবে। ينسفها ربي نسفًا (সূরা ত্বাহা ২০:১০৫ আয়াত) আর পঞ্চম অবস্থায় তা سراب মরীচিকার মত অস্তিত্বহীন হয়ে যাবে; যেমন এখানে বলা হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর)

إِنَّ جَهَنَّمَ كَانَتْ مِرْصَادًا

📘 নিশ্চয়ই জাহান্নাম ওঁৎ পেতে রয়েছে -[১] [১]ওঁৎ পাতার ঘাঁটি এমন জায়গাকে বলা হয়, যেখানে আত্মগোপন করে শত্রুর অপেক্ষা করা হয়। যাতে সেখান হতে তার অতিক্রম করার সময় তড়িঘড়ি হামলা করা সম্ভব হয়। জাহান্নামের দারোগারাও জাহান্নামীদের অপেক্ষায় ঐরূপ বসে আছেন। অথবা জাহান্নাম নিজেই আল্লাহর আদেশে কাফেরদের জন্য ওঁৎ পেতে অপেক্ষা করছে।

لِلطَّاغِينَ مَآبًا

📘 সীমালংঘনকারীদের প্রত্যাবর্তনস্থল রূপে।

لَابِثِينَ فِيهَا أَحْقَابًا

📘 সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে অবস্থান করবে। [১] [১] أحقاب শব্দটি حقب-এর বহুবচন। এর অর্থ হল যুগ বা যামানা। উদ্দেশ্য হল যুগযুগ ধরে চিরকালের জন্য তারা জাহান্নামে থাকবে। এই শাস্তি কাফের এবং মুশরিকদের জন্য হবে।

لَا يَذُوقُونَ فِيهَا بَرْدًا وَلَا شَرَابًا

📘 সেখানে তারা কোন ঠান্ডা (বস্তুর) স্বাদ গ্রহণ করতে পাবে না, আর কোন পানীয়ও (পাবে না);

إِلَّا حَمِيمًا وَغَسَّاقًا

📘 ফুটন্ত পানি ও (প্রবাহিত) পূঁজ ব্যতীত। [১] [১] যা জাহান্নামীদের দেহ হতে নির্গত হবে।

جَزَاءً وِفَاقًا

📘 এটাই (তাদের) উপযুক্ত প্রতিফল। [১] [১] অর্থাৎ, এই শাস্তি তাদের সেই কুকর্মের অনুরূপ হবে, যা তারা পার্থিব জীবনে করত।

إِنَّهُمْ كَانُوا لَا يَرْجُونَ حِسَابًا

📘 তারা (পরকালে) হিসাবের আশঙ্কা করত না। [১] [১] এ কথা প্রথমোক্ত বাক্যের কারণ দর্শিয়ে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, সে উল্লিখিত আযাবের উপযুক্ত। কেননা, সে মৃত্যুর পর পুনর্জীবনের প্রতি বিশ্বাসীই ছিল না, যাতে তারা হিসাব-নিকাশের আশঙ্কা করত।

وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا كِذَّابًا

📘 এবং তারা আমার আয়াতসমূহকে চরমভাবে মিথ্যাজ্ঞান করত।

وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنَاهُ كِتَابًا

📘 সব কিছুই আমি সংরক্ষণ করে রেখেছি লিখিতভাবে। [১] [১] অর্থাৎ, লাওহে মাহ্ফুযে। অথবা সেই রেকর্ড (কর্ম-বিবরণী) উদ্দেশ্য, যা (কিরামান কাতিবীন) ফিরিশতাগণ লিখে থাকেন। কিন্তু প্রথম অর্থটি অধিকতর সঠিক। যেমন দ্বিতীয় স্থানে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,"আমি প্রত্যেক জিনিস স্পষ্ট গ্রন্থে সংরক্ষিত রেখেছি।" (সূরা ইয়াসীন ৩৬:১২ আয়াত)

الَّذِي هُمْ فِيهِ مُخْتَلِفُونَ

📘 যে বিষয়ে তারা মতবিরোধী![১] [১] অর্থাৎ, যে 'মহা সংবাদ' নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে সেই বিষয়েই ঐ জিজ্ঞাসাবাদ। কারো কারো মতে এই 'মহা সংবাদ'-এর উদ্দেশ্য হল, পবিত্র কুরআন। কেননা, কাফেররা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মন্তব্য করত। কেউ তাকে যাদু, কেউ জ্যোতিষীর কথা, কেউ কবিদের কাব্য, কেউ বা আবার পূর্বযুগের উপাখ্যান বলে অভিহিত করত। অনেকের মতে এর উদ্দেশ্য হল, কিয়ামত সংঘটিত হওয়া এবং পুনর্বার জীবিত হওয়ার সংবাদ। কেননা, এ ব্যাপারেও তাদের মাঝে কিছু মতভেদ ছিল। কেউ তো একেবারেই তা অস্বীকার করত। আবার কেউ তাতে সন্দেহ পোষণ করত। কোন কোন আলেম বলেন, জিজ্ঞাসাকারী মু'মিন-কাফের উভয়ই ছিল। মু'মিনদের জিজ্ঞাসা তাদের ঈমান এবং অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ছিল। আর কাফেরদের জিজ্ঞাসা ছিল ঠাট্টা-ব্যঙ্গ ও উপহাসস্বরূপ।

فَذُوقُوا فَلَنْ نَزِيدَكُمْ إِلَّا عَذَابًا

📘 সুতরাং তোমরা আস্বাদন কর, এখন তো আমি শুধু তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করতে থাকব। [১] [১] আযাব বৃদ্ধি করার অর্থ হল যে, এখন থেকে এই আযাব চিরস্থায়ী। যখনই তাদের চামড়া গলে যাবে, তখনই ওর স্থলে নুতন চামড়া সৃষ্টি করা হবে। (সূরা নিসা ৪:৫৬ আয়াত) যখনই আগুন নিভে যাবে, তখনই পুনরায় তা প্রজ্বলিত করা হবে। (সূরা বানী ইস্রাঈল ১৭:৯৭ আয়াত)

إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ مَفَازًا

📘 নিশ্চয়ই আল্লাহভীরুদের জন্যই রয়েছে সফলতা;[১] [১] দুর্ভাগ্যবানদের কথা আলোচনা করার পর এখন সৌভাগ্যবানদের আলোচনা এবং তাদের সেই নিয়ামতের বর্ণনা; যা তারা আখেরাতে উপভোগ করবে। আর এই সাফল্য ও নিয়ামত তাকওয়া (আল্লাহভীরুতা)র ফলে লাভ হবে। তাকওয়া হল ঈমান ও আনুগত্যের চাহিদার পরিপূর্ণতার নাম। সৌভাগ্যবান লোক তো তারাই, যারা ঈমান আনার পর তাকওয়া এবং নেক আমলে যত্নবান হয়। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত করুন। আমীন।

حَدَائِقَ وَأَعْنَابًا

📘 উদ্যানসমূহ ও নানাবিধ আঙ্গুর। [১] [১] এই বাক্য مفازًا-এর বদল। অর্থাৎ, সফলতার বিবরণ।

وَكَوَاعِبَ أَتْرَابًا

📘 এবং উদ্ভিন্ন-যৌবনা সমবয়স্কা তরুণীগণ। [১] [১] كواعب শব্দটি كاعب-এর বহুবচন। যার অর্থ হল পায়ের গাঁট। যেমন গাঁট উঁচু হয়ে থাকে, ঠিক তেমনি তাদের স্তনগুলিও অনুরূপ উঁচু উঁচু হবে; যা তাদের রূপ-সৌন্দর্যের একটি সুদৃশ্য। (অর্থাৎ তারা সদ্য উদ্ভিন্ন স্তনের ষোড়শী তরুণী হবে।) أتراب শব্দের অর্থ হল সমবয়স্ক।

وَكَأْسًا دِهَاقًا

📘 এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র। [১] [১] دهاقًا -এর অর্থঃ পরিপূর্ণ কিংবা একের পর এক নিরবচ্ছিন্ন অথবা তা স্বচ্ছ ও নির্মল হবে। كأس এমন পানপাত্রকে বলা হয়, যা পূর্ণরূপে ভর্তি থাকে।

لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا كِذَّابًا

📘 সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার ও মিথ্যা কথা। [১] [১] অর্থাৎ, কোন অসার, ফালতু বা অশ্লীল কথাবার্তা সেখানে হবে না। আর না এক অপরকে মিথ্যা বলবে।

جَزَاءً مِنْ رَبِّكَ عَطَاءً حِسَابًا

📘 (এ হবে তাদের জন্য) তোমার প্রতিপালকের তরফ থেকে প্রতিদান, যথেষ্ট অনুদান। [১] [১] عطاء -এর সাথে حساب শব্দটি অতিশয়োক্তি স্বরূপ ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ, সেখানে আল্লাহর দান, প্রতিদান ও অনুদানের পর্যাপ্তি ও প্রাচুর্য থাকবে।

رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الرَّحْمَٰنِ ۖ لَا يَمْلِكُونَ مِنْهُ خِطَابًا

📘 যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং উভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছুর প্রতিপালক; যিনি পরম করুণাময়। তাঁর নিকট কিছু বলার অধিকার তাদের থাকবে না। [১] [১] অর্থাৎ, তাঁর মহত্ত্ব, ভাবগম্ভীরতা ও মহিমার অবস্থা এমন হবে যে, আগেভাগে তাঁর সাথে কথা বলার হিম্মত কারো হবে না। এই জন্য কেউ তাঁর অনুমতি ছাড়া কোন প্রকার সুপারিশের জন্য মুখ খুলতে পারবে না।

يَوْمَ يَقُومُ الرُّوحُ وَالْمَلَائِكَةُ صَفًّا ۖ لَا يَتَكَلَّمُونَ إِلَّا مَنْ أَذِنَ لَهُ الرَّحْمَٰنُ وَقَالَ صَوَابًا

📘 সেদিন রূহ (জিবরীল) ও ফিরিশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে,[১] পরম করুণাময় যাকে অনুমতি দিবেন সে ছাড়া অন্যেরা কথা বলতে পারবে না এবং সে সঠিক কথা বলবে। [২] [১] এখানে জিবরীল (আঃ) সহ রূহের কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। ইমাম ইবনে কাসীর আদম-সন্তান (মানুষ)-এর অর্থকেই সঠিকতার অধিক কাছাকাছি বলে মন্তব্য করেছেন। [২] এই অনুমতি আল্লাহ তাআলা ফিরিশতাগণকে এবং স্বীয় পয়গম্বরগণকে দান করবেন এবং তাঁরা যা কিছু কথা বলবেন তা হক, সত্য ও সঠিক বলবেন। অথবা এর ভাবার্থ হল যে, অনুমতি কেবলমাত্র তার জন্য দেওয়া হবে, যে সঠিক কথা বলেছে; অর্থাৎ, কলেমা তাওহীদের স্বীকৃতি প্রদান করেছে।

ذَٰلِكَ الْيَوْمُ الْحَقُّ ۖ فَمَنْ شَاءَ اتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِ مَآبًا

📘 ঐ দিন সুনিশ্চিত,[১] অতএব যার ইচ্ছা সে তার প্রতিপালকের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করুক। [২] [১] অর্থাৎ, ঐ দিন অবশ্যম্ভাবী। [২] অর্থাৎ, আগামী ঐ দিনকে স্মরণে রেখে ঈমান ও তাকওয়ার জীবনকে বেছে নিক। যাতে সেখানে তার উত্তম ঠিকানা লাভ হয়।

كَلَّا سَيَعْلَمُونَ

📘 কখনই না, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।

إِنَّا أَنْذَرْنَاكُمْ عَذَابًا قَرِيبًا يَوْمَ يَنْظُرُ الْمَرْءُ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ وَيَقُولُ الْكَافِرُ يَا لَيْتَنِي كُنْتُ تُرَابًا

📘 নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম;[১] সেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম প্রত্যক্ষ করবে [২] এবং অবিশ্বাসী বলবে, হায় আফসোস! যদি আমি মাটি হয়ে যেতাম।[৩] [১] অর্থাৎ, কিয়ামতের দিবসের আযাব সম্পর্কে যা অতি নিকটেই। কেননা, তার আগমন সুনিশ্চিত সত্য। আর প্রতিটি জিনিস যা আসবে তা অতি নিকটেই। যেহেতু যে কোন প্রকারে তা আসবেই আসবে।[২] অর্থাৎ, ভাল ও মন্দ যে আমলই সে পার্থিব জীবনে করেছে তা আল্লাহর নিকট পৌঁছে গেছে। কিয়ামতের দিন তা তার সামনে এসে যাবে এবং সে তা স্বচক্ষে দেখতে পাবে। "তারা তাদের কৃতকর্ম সম্মুখে উপস্থিত পাবে।" (সূরা কাহ্ফ ১৮:৪৯ আয়াত) "সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে যে, সে কী অগ্রে পাঠিয়েছে ও কী পশ্চাতে রেখে গেছে।" (সূরা ক্বিয়ামাহ ৭৫:১৩ আয়াত) [৩] অর্থাৎ, যখন সে নিজের ভয়ঙ্কর আযাব দেখে নেবে, তখন সে এই আকাঙ্ক্ষা করবে। কোন কোন আলেম বলেন, আল্লাহ তাআলা পশুদের মাঝেও ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচারের সাথে ফায়সালা করবেন। এমনকি যদি কোন শিংবিশিষ্ট পশু কোন শিংবিহীন পশুর প্রতি অত্যাচার করে থাকে তাহলে তারও বদলা দেওয়া হবে। তারপর আল্লাহ পশুদেরকে বলবেন, তোমরা মাটিতে পরিণত হও। তখন তারা মাটি হয়ে যাবে। আর সেই সময় কাফেররাও বাসনা করবে যে, তারাও যদি পশু হতো এবং তাদের মত আজ মাটি হয়ে যেতে পারত! (তাফসীর ইবনে কাসীর)

ثُمَّ كَلَّا سَيَعْلَمُونَ

📘 আবার বলি, কখনই না, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।[১] [১] এটা হল ধমক ও তিরস্কার যে, অতি সত্বর সব কিছু জানতে পারবে। আগামীতে আল্লাহ তাআলা স্বীয় কর্মকুশলতা এবং মহা কুদরতের কথা উল্লেখ করছেন; যাতে তাওহীদের প্রকৃতত্ব তাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং আল্লাহর রসূল (সাঃ) তাদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছিলেন তার প্রতি ঈমান আনা সহজ হয়ে যায়।

أَلَمْ نَجْعَلِ الْأَرْضَ مِهَادًا

📘 আমি কি পৃথিবীকে শয্যা (স্বরূপ) সৃষ্টি করিনি? [১] [১] অর্থাৎ, বিছানার মত তোমরা ভূপৃষ্ঠের উপর চলা-ফেরা কর, উঠা-বসা কর, শয়ন কর এবং সমস্ত কাজ-কর্ম করে থাক। পৃথিবীকে তিনি বিক্ষিপ্তভাবে হেলা-দোলা থেকে রক্ষা করেছেন।

وَالْجِبَالَ أَوْتَادًا

📘 এবং পর্বতসমূহকে পেরেক (স্বরূপ সৃষ্টি করিনি?)[১] [১] أوتاد শব্দটি وتد-এর বহুবচন; আর তার অর্থ পেরেক। অর্থাৎ, পর্বতসমূহকে পৃথিবীর জন্য পেরেকস্বরূপ সৃষ্টি করেছেন; যাতে পৃথিবী স্থির থাকে এবং হেলা-দোলা না করে। কেননা, হেলা-দোলা ও বিক্ষিপ্ত অস্থিরতার অবস্থায় পৃথিবী বাসযোগ্য হতো না। (প্রকাশ থাকে যে, ভূগর্ভে কীলক বা পেরেকের মতই পর্বতমালার মূল বা শিকড় গাড়া আছে; যা ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশী দীর্ঘ! -সম্পাদক)

وَخَلَقْنَاكُمْ أَزْوَاجًا

📘 আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায়।[১] [১] অর্থাৎ,পুরুষ ও স্ত্রী, নর ও নারী। অথবা أزواج -এর অর্থ হল নানা ধরন ও রঙ। অর্থাৎ, তিনি বিচিত্র ধরনের আকার-আকৃতি ও রঙে-বর্ণে সৃষ্টি করেছেন। সুশ্রী-কুশ্রী, লম্বা-বেঁটে, গৌরবর্ণ-কৃষ্ণবর্ণ ইত্যাদি বিভিন্ন বৈচিত্রে সৃষ্টি করেছেন।

وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتًا

📘 তোমাদের নিদ্রাকে করে দিয়েছি বিশ্রাম স্বরূপ। [১] [১] سبات -এর অর্থ হল ছিন্ন করা বা কাটা। রাত্রি মানুষ ও পশু-পক্ষীর যাবতীয় বিচরণকে কেটে ক্ষান্ত করে দেয়। যাতে শান্তি ফিরে আসে এবং লোকে আরামের সাথে ঘুমাতে পারে। কিংবা এর ভাবার্থ হল এই যে, রাত্রি তোমাদের কাজকর্মকে কেটে ফেলে। অর্থাৎ, কাজের ধারাবাহিকতাকে ছিন্ন করে দেয়। আর কাজ শেষ হওয়া মানেই হল আরাম ও বিশ্রাম।