slot qris slot gacor terbaru slot gacor terbaik slot dana link slot gacor slot deposit qris slot pulsa slot gacor situs slot gacor slot deposit qris slot qris bokep indo xhamster/a> jalalive/a>
| uswah-academy
WhatsApp Book A Free Trial
القائمة

🕋 تفسير سورة الطور

(At-Tur) • المصدر: BN-TAFSIR-AHSANUL-BAYAAN

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالطُّورِ

📘 শপথ ত্বূর (পর্বতের), [১] [১] طُوْرٌ সেই পাহাড়, যেখানে মূসা (আঃ) মহান আল্লাহর সাথে বাক্যালাপ করেছিলেন। এই পাহাড়টিকে 'ত্বূরে সাইনা'ও বলা হয়। তার এই বিশেষ মর্যাদার কারণে মহান আল্লাহ তার কসম খেয়েছেন।

وَتَسِيرُ الْجِبَالُ سَيْرًا

📘 এবং পর্বতসমূহ দ্রুত চলতে থাকবে।

فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ

📘 দুর্ভোগ সেদিন মিথ্যাশ্রয়ীদের।

الَّذِينَ هُمْ فِي خَوْضٍ يَلْعَبُونَ

📘 যারা ক্রীড়াচ্ছলে অসার কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে। [১] [১] অর্থাৎ, যারা নিজেদের কুফরী ও বাতিল কর্মকান্ডেই মগ্ন এবং সত্যকে মিথ্যাজ্ঞান ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার কাজে ব্যস্ত।

يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَىٰ نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا

📘 সেদিন তাদেরকে ধাক্কা মারতে মারতে[১] নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের আগুনের দিকে। [১] الدَّعَّ এর অর্থ হল অত্যন্ত জোরে ধাক্কা দেওয়া।

هَٰذِهِ النَّارُ الَّتِي كُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُونَ

📘 এটাই সেই আগুন, যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে। [১] [১] এ কথা জাহান্নামে নিযুক্ত (যাবানিয়া) ফিরিশতা তাদেরকে বলবে।

أَفَسِحْرٌ هَٰذَا أَمْ أَنْتُمْ لَا تُبْصِرُونَ

📘 এটা কি যাদু? [১] নাকি তোমরা চোখে দেখছ না? [২] [১] যেভাবে, তোমরা দুনিয়াতে নবী ও রসূলদেরকে যাদুকর বলতে। এখন বল, এটাও কি কোন যাদুর কারসাজি? [২] নাকি পৃথিবীতে যেমন তোমরা সত্যদর্শনে অন্ধ ছিলে, তেমনি এই শাস্তিও তোমরা দেখতে পাও না? এটা কেবল তাদেরকে ভৎর্সনা ও ধমক স্বরূপ বলা হবে। অন্যথা প্রতিটি জিনিস তাদের চোখের সামনে এসে যাবে।

اصْلَوْهَا فَاصْبِرُوا أَوْ لَا تَصْبِرُوا سَوَاءٌ عَلَيْكُمْ ۖ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ

📘 তোমরা এতে প্রবেশ কর, অতঃপর তোমরা ধৈর্যধারণ কর অথবা না কর উভয়ই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে কেবল তারই প্রতিফল দেওয়া হবে।

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَنَعِيمٍ

📘 আল্লাহভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও ভোগ-বিলাসে। [১] [১] এখানে কাফের ও দুর্ভাগ্যবান লোকদের কথা আলোচনার পর ঈমানদার ও সৌভাগ্যবানদের আলোচনা করা হচ্ছে।

فَاكِهِينَ بِمَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَاهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ

📘 তাদের প্রতিপালক তাদেরকে যা দেবেন, তারা তা সানন্দে উপভোগ করবে[১] এবং তিনি তাদেরকে রক্ষা করবেন জাহান্নামের শাস্তি হতে। [১] অর্থাৎ, জান্নাতের প্রাসাদ, পোশাক-পরিচ্ছদ, পানাহার, বাহন, সুন্দরী রূপসী স্ত্রীগণ (হুরে ঈন) এবং অন্যান্য আরো অনেক নিয়ামত লাভ করে তারা বড়ই আনন্দিত হবে। কারণ, এ নিয়ামতগুলো দুনিয়ার নিয়ামতের তুলনায় বহুগুণ শ্রেয় হবে এবং তা হবে, مَا لَا عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَر) এর বাস্তব প্রমাণ। অর্থাৎ, তা হবে অতুলনীয়, বর্ণনাতীত ও কল্পনাতীত।

كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ

📘 তোমরা যা করতে তার প্রতিফল স্বরূপ তোমরা তৃপ্তির সাথে পানাহার করতে থাক। [১] [১] অন্যত্র বলেছেন, (كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ) অর্থাৎ, পানাহার কর তৃপ্তির সাথে, তোমরা অতীত দিনে যা (সৎকর্ম) করেছিলে তার বিনিময়ে। (সূরা হাক্কাহ ৬৯:২৪ আয়াত) এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহর অনুকম্পা লাভের জন্য ঈমানের সাথে সৎকর্মও অত্যাবশ্যক।

وَكِتَابٍ مَسْطُورٍ

📘 শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে, [১] [১] مَسْطُوْرٍ এর অর্থ হল লিপিবদ্ধ। লিখিত বস্তু। কিন্তু এখানে তা থেকে বিভিন্ন জিনিসকে বুঝানো হয়েছে। যেমন, কুরআন মাজীদ, লাওহে মাহফূয, সমস্ত অবতীর্ণ কিতাব অথবা মানুষের সেই আমলনামা, যা ফিরিশতাগণ লিখে থাকেন।

مُتَّكِئِينَ عَلَىٰ سُرُرٍ مَصْفُوفَةٍ ۖ وَزَوَّجْنَاهُمْ بِحُورٍ عِينٍ

📘 তারা বসবে সারিবদ্ধভাবে সজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে;[১] আমি তাদের বিবাহ দেব আয়তলোচনা হুরদের সঙ্গে। [১] مَصْفُوْفَةٍ একে অপরের সাথে মিলিত; যেন তা একটিই সারি। আবার কেউ কেউ এর অর্থ এই বর্ণনা করেছেন যে, তাদের মুখমন্ডল একে অপরের সম্মুখে হবে। যেমন, যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদল পরস্পরের মুখোমুখি হয়। এই অর্থকেই কুরআনের অন্যত্র এই ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। (عَلَى سُرُرٍ مُّتَقَابِلِين) অর্থাৎ, মুখোমুখি হয়ে তারা আসনে আসীন থাকবে। (সূরা সাফফাত ৩৭:৪৪ আয়াত)

وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُمْ بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُمْ مِنْ عَمَلِهِمْ مِنْ شَيْءٍ ۚ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ

📘 যারা বিশ্বাস করে আর তাদের সন্তুান-সন্ততি বিশ্বাসে তাদের অনুগামী হয়, তাদের সাথে মিলিত করব তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল আমি কিছুমাত্র হ্রাস করব না।[১] প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়বদ্ধ। [২] [১] অর্থাৎ, যাদের পিতারা নিজেদের আন্তরিকতা, আল্লাহভীরুতা, সৎকর্ম ও সচ্চরিত্রের ভিত্তিতে জান্নাতের সুউচ্চ মর্যাদা লাভে ধন্য হবে, মহান আল্লাহ তাদের ঈমানদার সন্তান-সন্ততিদের মর্যাদাও বাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে তাদের পিতাদের সাথে মিলিত করবেন। এ রকম করবেন না যে, তাদের পিতাদের মর্যাদা কম করে তাদেরকে তাদের সন্তানদের নিম্নমানের মর্যাদায় তাদেরকে নিয়ে আসবেন। অর্থাৎ, মু ' মিনদের প্রতি তিনি দ্বিগুণ অনুগ্রহ করবেন। প্রথমতঃ বাপ ও বেটাদেরকে পরস্পর মিলিত করবেন। যাতে তাদের চক্ষু শীতল হয়। তবে শর্ত হল যে, উভয়েই যেন ঈমানদার হয়। দ্বিতীয়তঃ এই যে, নিম্ন মর্যাদার অধিকারীদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন। তাছাড়া উভয়কে মিলিত করার পদ্ধতি এটাও হতে পারত যে, প্রথম শ্রেণীর লোকদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণী দেবেন। কিন্তু যেহেতু এটা তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ থেকে অনেক হীন ও নীচ ব্যাপার তাই তিনি এ রকম করবেন না। বরং তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীর অধিকারীদেরকে প্রথম শ্রেণী দান করবেন। এটা হল আল্লাহর সেই অনুগ্রহ, যা তিনি পিতাদের নেক আমলের বর্কতে সন্তানদের প্রতি করবেন। আর হাদীসে এসেছে যে, সন্তানদের দু'আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে পিতাদের মর্যাদা বর্ধিত হয়। জান্নাতে এক ব্যক্তির মর্যাদা উচ্চ করা হলে, সে আল্লাহকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে, মহান আল্লাহ বলবেন যে, তোমার সন্তানের তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৫০৯) এর সমর্থন ঐ হাদীস দ্বারাও হয়, যাতে এসেছে যে, "মানুষ মারা গেলে তার আমলের ধারাবাহিকতা ছিন্ন হয়ে যায়। তবে তিনটি জিনিসের সওয়াব মৃত্যুর পরও জারী থাকে। সাদকায়ে জারিয়াহ, এমন জ্ঞান যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হতে থাকে, আর এমন সুসন্তান, যে তার জন্য দু'আ করে।" (মুসলিম অসিয়ত অধ্যায়) [২] رَهِيْنٌ এর অর্থ, مَرْهُوْنٍ (বন্ধক রাখা বস্তু)। প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের দায়ে দায়বদ্ধ। আর এ কথাটি ব্যাপক; যাতে মু'মিন ও কাফের উভয়ই শামিল। অর্থ হল, যে ব্যক্তিই (ভাল-মন্দ) যেমন আমল করবে, সেই অনুযায়ী সে (ভাল-অথবা মন্দ) ফল পাবে। অথবা এ থেকে কাফেদেরকে বুঝানো হয়েছে। তারা নিজেদের কর্মের জন্য বন্দী থাকবে। যেমন অন্যত্র বলেন, {إِلَّكُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ، اأَصْحَابَ الْيَمِين}) অর্থাৎ, প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের জন্য দায়ী। তবে ডানহাত-ওয়ালারা নয়। (সূরা মুদ্দাসসির ৭৪:৩৮-৩৯ আয়াত)

وَأَمْدَدْنَاهُمْ بِفَاكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِمَّا يَشْتَهُونَ

📘 আমি তাদেরকে ঢের দেব ফল-মূল এবং গোশত, যা তারা পছন্দ করে। [১] [১] أَمْدَدْنَاهُم এর অর্থ زِدْنَاهُمْ অর্থাৎ, আমি তাদেরকে প্রচুর দেব।

يَتَنَازَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ

📘 সেখানে তারা একে অপরের নিকট হতে গ্রহণ করবে (মদ ভরা) পান-পাত্র,[১] যা হতে পান করলে কেউ অসার কথা বলবে না এবং পাপ কর্মেও লিপ্ত হবে না।[২] [১] يَتَنَازَعُوْنَ، يَتَعَاطَوْنَ وَيَتَنَاوَلُوْنَ একে অপর থেকে নিবে। كَأس মদ অথবা পানীয় বস্তুতে ভর্তি পান-পাত্রকে বলে। খালি পাত্রকে كَأس বলা হয় না। (ফাতহুল ক্বাদীর) [২] সেই মদে দুনিয়ার মদের কোন ক্রিয়া থাকবে না। এ মদ পান করে (নেশাগ্রস্ত হয়ে) না আবোল-তাবোল বকবে, না অশ্লীল কথা বলবে, আর না এমন মাতাল হবে যে, তার ফলে কোন পাপ-কাজ করে বসবে।

۞ وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَكْنُونٌ

📘 তাদের (সেবায়) তাদের কিশোরেরা তাদের আশেপাশে ঘোরাফেরা করবে; যেন তারা সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ। [১] [১] অর্থাৎ, জান্নাতীদের সেবার জন্যে তাদেরকে চিরকিশোর সেবকও দেওয়া হবে। যারা তাদের সেবা-শুশ্রূষার কাজে ঘুরে বেড়াবে। আর সৌন্দর্যে ও চমৎকারিত্বে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় তারা হবে সেই মুক্তাসদৃশ, যাকে সুরক্ষিত রাখা হয় এই আশঙ্কায় যে, যাতে হাত লেগে তার চমক ও ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে না যায়।

وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ

📘 তারা একে অপরের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করবে, [১] [১] আপোসে তারা একে অপরকে দুনিয়ার অবস্থার কথা জিজ্ঞাসা করবে যে, তারা কোন্ অবস্থার মধ্যে জীবন-যাপন করত এবং ঈমান ও আমলের দাবীসমূহ কিভাবে পূরণ করত?

قَالُوا إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِي أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ

📘 এবং বলবে, ‘নিশ্চয় আমরা পূর্বে পরিবার-পরিজনের মধ্যে শংকিত অবস্থায় ছিলাম। [১] [১] অর্থাৎ, আল্লাহর শাস্তি থেকে। এই জন্য আমরা সেই শাস্তি থেকে বাঁচার প্রতি যত্ন নিতাম। কারণ, যে যে জিনিসকে ভয় করে, সে তা থেকে বাঁচার প্রচেষ্টা চালায়।

فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَانَا عَذَابَ السَّمُومِ

📘 অতঃপর আমাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে উত্তপ্ত ঝড়ো হাওয়ার শাস্তি হতে রক্ষা করেছেন। [১] [১] سَمُوْمٌ লু-হাওয়া। ঝলসে দেয় এমন গরম হাওয়াকে বলে। আর এটা জাহান্নামের নামসমূহের একটি নামও বটে।

إِنَّا كُنَّا مِنْ قَبْلُ نَدْعُوهُ ۖ إِنَّهُ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِيمُ

📘 নিশ্চয় আমরা পূর্বেও আল্লাহকে আহবান করতাম।[১] নিশ্চয় তিনি কৃপাময়, পরম দয়ালু।’ [১] অর্থাৎ, আমরা একমাত্র তাঁরই উপাসনা করতাম। তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার স্থাপন করতাম না। কিংবা এর অর্থ এই যে, জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আমরা কেবল তাঁরই নিকট প্রার্থনা করতাম।

فَذَكِّرْ فَمَا أَنْتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ

📘 অতএব তুমি উপদেশ দান করতে থাক, তোমার প্রভুর অনুগ্রহে তুমি গণক নও, পাগলও নও।[১] [১] এতে নবী কারীম (সাঃ)-কে সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে যে, তুমি ওয়ায-নসীহত এবং দ্বীন প্রচারের কাজ করে যাও। এরা তোমার সম্পর্কে যা কিছু বলে, তার প্রতি কান দেবে না। কারণ, আল্লাহর মেহেরবানীতে তুমি কোন গণক নও, আর কোন পাগলও নও (যেমন এরা বলে)। বরং রীতিমত তোমার প্রতি আমার পক্ষ থেকে অহী অবতীর্ণ করা হয়, যা গণকের প্রতি করা হয় না। আর তুমি যে বাণী লোকদেরকে শোনাও, তা থেকে এমন জ্ঞান ও প্রজ্ঞা বিচ্ছুরিত হয় যে, কোন পাগলের দ্বারা এ ধরনের কথাবার্তা বলা সম্ভব নয়।

فِي رَقٍّ مَنْشُورٍ

📘 উন্মুক্ত পত্রে, [১] [১] এটির সম্পর্ক হল مَسْطُوْرٍ এর সাথে। رَقٍّ সেই পাতলা চামড়া, যার উপর লেখা হত। আর مَنْثوُرٍ অর্থ হল مَبْسُوْطٍ তথা উন্মুক্ত বা বিস্তৃত।

أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَتَرَبَّصُ بِهِ رَيْبَ الْمَنُونِ

📘 তারা কি বলতে চায় যে, ‘সে একজন কবি? আমরা তার জন্য কালের বিপর্যয়ের (মৃত্যুর) প্রতীক্ষা করছি।’ [১] [১] رَيْبٌ এর অর্থ, বিপর্যয়, দুর্ঘটনা। مَنُوْنٌ মৃত্যুর নামসমূহের একটি নাম। আয়াতের তাৎপর্য হল, মক্কার কুরাইশগণ এই অপেক্ষায় ছিল যে, হয়তো মুহাম্মাদ কালের কোন দুর্ঘটনায় মারা যাবে, আর আমরা স্বস্তি লাভ করব; যে স্বস্তি তার তাওহীদের দাওয়াত আমাদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে।

قُلْ تَرَبَّصُوا فَإِنِّي مَعَكُمْ مِنَ الْمُتَرَبِّصِينَ

📘 বল, ‘তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।’ [১] [১] অর্থাৎ, দেখ! মৃত্যু কার আগে আসে? এবং ধ্বংস কার ভাগ্যে এসে জুটে?

أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَامُهُمْ بِهَٰذَا ۚ أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ

📘 তবে কি তাদের বিবেক-বুদ্ধি তাদেরকে এ বিষয়ে আদেশ করে,[১] না তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়? [২] [১] অর্থাৎ, এরা যে তোমার সম্পর্কে আবোল-তাবোল এবং মিথ্যা ও অবাস্তব কথাবার্তা বলে বেড়ায়, তাদের বিবেক-বুদ্ধি কি তাদেরকে এরই উপর অনুপ্রাণিত করে? [২] না, বরং এরা হল অবাধ্য ও ভ্রষ্ট লোক। আর এই অবাধ্যতা ও ভ্রষ্টতাই তাদেরকে এ ধরনের কথাবার্তার উপর উস্কানি দেয়।

أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُ ۚ بَلْ لَا يُؤْمِنُونَ

📘 তারা কি বলে, ‘এ কুরআন নিজে রচনা করেছে?’ বরং তারা অবিশ্বাসী। [১] [১] অর্থাৎ, কুরআন রচনার অপবাদ আরোপের উপর তাদেরকে উদ্বুদ্ধকারী জিনিসও হল তাদের কুফরী।

فَلْيَأْتُوا بِحَدِيثٍ مِثْلِهِ إِنْ كَانُوا صَادِقِينَ

📘 তারা যদি সত্যবাদী হয়, তাহলে এর সদৃশ কোন রচনা উপস্থিত করুক না। [১] [১] অর্থাৎ, কুরআন মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর স্বরচিত হওয়ার ব্যাপারে তাদের যে দাবী, তাতে যদি তারা সত্যবাদী হয়, তবে তারাও এই ধরনেরই একটি গ্রন্থ রচনা করে পেশ করুক, যা শব্দ-ছন্দে, অলৌকিকতা, ভাষালঙ্কার, সুন্দর উপস্থাপনা, বিরল বাকপদ্ধতি, তথ্য পরিবেশন ও সমস্যা সমাধানের দিক দিয়ে তার প্রতিদ্বনিদ্বতা করতে পারে।

أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ

📘 তারা কি কোন কিছু ব্যতিরেকে আপনা-আপনিই সৃষ্ট হয়েছে,[১] না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? [২] [১] অর্থাৎ, প্রকৃতপ্রস্তাবে যদি এ রকমই হয়, তাহলে তাদেরকে কোন কিছুর আদেশ করার অথবা কোন কিছু থেকে নিষেধ করার অধিকার কারো থাকে না। কিন্তু বাস্তবে যখন ব্যাপার এ রকম নয়, বরং তাদেরকে কোন এক স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন, তখন এটা স্পষ্ট ব্যাপার যে, তাদেরকে তাঁর সৃষ্টি করার পিছনে কোন এক নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে। তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করে এমনিই (কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই) কেমন করে ছাড়তে পারেন? [২] অর্থাৎ, তারা নিজেরা নিজেদের স্রষ্টা নয়, বরং তারা আল্লাহর স্রষ্টা হওয়ার কথা স্বীকার করে।

أَمْ خَلَقُوا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۚ بَلْ لَا يُوقِنُونَ

📘 নাকি তারা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারা নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে না। [১] [১] বরং তারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও শাস্তির ব্যাপারে সন্দেহে পড়ে আছে।

أَمْ عِنْدَهُمْ خَزَائِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ الْمُصَيْطِرُونَ

📘 নাকি তোমার প্রতিপালকের ভান্ডারসমূহ তাদের নিকট রয়েছে,[১] না তারা এ সমুদয়ের নিয়ন্ত্রক?[২] [১] যে, তারা যাকে ইচ্ছা রুযী দেবে এবং যাকে ইচ্ছা দেবে না অথবা যাকে ইচ্ছা নবুঅত দানে ধন্য করবে। [২] مُصَيْطِرٌ বা مُسَيْطِر হল سَطْرٌ ধাতু থেকে গঠিত। অর্থ লেখক। যে ব্যক্তি তত্ত্বাবধায়ক ও নিয়ন্ত্রক হয়, সে যেহেতু সব কিছুই লিপিবদ্ধ করে, তাই এটা তত্ত্বাবধায়ক ও নিয়ন্ত্রকের অর্থেও ব্যবহার হয়। অর্থাৎ, আল্লাহর ধন-ভান্ডারসমূহ ও তাঁর রহমতের উপর তাদের কি কর্তৃত্ব আছে যে, যাকে ইচ্ছা দেবে, আর যাকে ইচ্ছা দেবে না?

أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِ ۖ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُمْ بِسُلْطَانٍ مُبِينٍ

📘 নাকি তাদের কোন সিঁড়ি আছে যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে?[১] থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক! [১] অর্থাৎ, তারা কি এই দাবী করে যে, সিড়ির মাধ্যমে আকাশে গিয়ে তারাও মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মত ফিরিশতাদের কথা বা তাদের প্রতি প্রত্যাদিষ্ট বাণী শুনে আসে?

أَمْ لَهُ الْبَنَاتُ وَلَكُمُ الْبَنُونَ

📘 নাকি কন্যা-সন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্র-সন্তান তোমাদের জন্য?

وَالْبَيْتِ الْمَعْمُورِ

📘 শপথ বায়তুল মা’মূরের, [১] [১] 'বায়তে মা'মূর' হল সপ্তম আকাশে অবস্থিত সেই ইবাদতখানা, যেখানে ফিরিশতাগণ ইবাদত করেন। এই ইবাদতখানা ফিরিশতাবর্গ দ্বারা এমনভাবে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে যে, প্রত্যহ এতে সত্তর হাজার করে ফিরিশতা ইবাদতের জন্য প্রবেশ করেন। যাঁদের কিয়ামত পর্যন্ত পুনরায় প্রবেশের পালা আসবে না। আর এ কথা মি'রাজের ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলোতে বলা হয়েছে। কেউ কেউ 'বায়তে মা'মূর' বলতে 'কা'বা-ঘর' বুঝিয়েছেন। যে ঘর ইবাদতের জন্য আগমনকারী মানুষ দ্বারা সর্বদা পরিপূর্ণ থাকে। 'মা'মূর' শব্দটির অর্থই হচ্ছে আবাদ ও পরিপূর্ণ।

أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُمْ مِنْ مَغْرَمٍ مُثْقَلُونَ

📘 নাকি তুমি তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছ যে, তারা একে একটি দুর্বহ দন্ড মনে করবে? [১] [১] অর্থাৎ, যা আদায় করা তাদের জন্য ভারী হয়ে যায়।

أَمْ عِنْدَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ

📘 নাকি তাদের অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে, তারা লিখে রাখে?[১] [১] যে, তাদের পূর্বে মুহাম্মাদ (সাঃ) অবশ্যই মারা যাবেন এবং তাদের মৃত্যু পরে আসবে।

أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًا ۖ فَالَّذِينَ كَفَرُوا هُمُ الْمَكِيدُونَ

📘 অথবা তারা কি কোন ষড়যন্ত্র করতে চায়? [১] পরিণামে অবিশ্বাসীরাই হবে ষড়্যন্ত্রের শিকার। [২] [১] অর্থাৎ, আমার নবীর সাথে, যাতে সে ধ্বংসের মুখে পতিত হয়ে পড়বে।[২] অর্থাৎ, চক্রান্ত তাদেরই উপর ফিরে আসবে এবং যাবতীয় ক্ষতির স্বীকার তারাই হবে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, {وَلَا يَحِيقُ الْمَكْرُ السَّيِّئُ إِلَّا بِأَهْلِهِ} (সূরা ফাত্বির ৩৫:৪৩) তাই তো বদরযুদ্ধে এই কাফেররাই নিহত হয় এবং আরো বহু স্থানে তারা অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হয়।

أَمْ لَهُمْ إِلَٰهٌ غَيْرُ اللَّهِ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ

📘 নাকি আল্লাহ ব্যতীত তাদের অন্য কোন উপাস্য আছে? তারা যাকে শরীক স্থির করে, আল্লাহ তা হতে পবিত্র।

وَإِنْ يَرَوْا كِسْفًا مِنَ السَّمَاءِ سَاقِطًا يَقُولُوا سَحَابٌ مَرْكُومٌ

📘 তারা আকাশের কোন খন্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলে বলবে, এটা তো এক পুঞ্জীভূত মেঘ।[১] [১] অর্থাৎ, তবুও তারা নিজেদের কুফরী ও শত্রুতা থেকে ফিরে আসবে না। বরং আরো ধৃষ্টতা প্রকাশ করে বলবে যে, এটা আযাব নয়, বরং পুঞ্জীভূত মেঘ উড়ে আসছে। যেমন কোন কোন সময় এ রকম হয়ে থাকে।

فَذَرْهُمْ حَتَّىٰ يُلَاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي فِيهِ يُصْعَقُونَ

📘 সুতরাং তাদেরকে উপেক্ষা করে চল সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তাদেরকে অজ্ঞান করে দেওয়া হবে।

يَوْمَ لَا يُغْنِي عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ

📘 সেদিন তাদের ষড়যন্ত্র কোন কাজে আসবে না এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না।

وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا عَذَابًا دُونَ ذَٰلِكَ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

📘 অবশ্যই এ ছাড়া আরো শাস্তি রয়েছে সীমালংঘনকারীদের জন্য।[১] কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।[২] [১] অর্থাৎ, পৃথিবীতে। যেমন অন্যত্র বলেছেন, {وَلَنُذِيقَنَّهُمْ مِنَ الْعَذَابِ الْأَدْنَى دُونَ الْعَذَابِ الْأَكْبَرِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ} (সূরা সাজদাহ ৩২:২১নং আয়াত) [২] এ কথা জানে না যে, পৃথিবীর এই শাস্তি ও বিপদাপদ কেবল এই জন্য যে, যাতে করে মানুষ আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। কিন্তু এই রহস্য বুঝতে না পারার কারণে তারা পাপসমূহ থেকে তাওবা করে না। বরং কখনো কখনো পূর্বের চাইতে আরো বেশী পাপে লিপ্ত হয়ে পড়ে।

وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا ۖ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ

📘 তুমি ধৈর্যধারণ কর তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের অপেক্ষায়; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। আর তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি দাঁড়াও।[১] [১] আয়াতে تَقُوم (দাঁড়ানো) বলতে কোন্ দাঁড়ানোকে বুঝানো হয়েছে? কেউ কেউ বলেছেন, নামাযের জন্য দাঁড়ানো। যেমন, নামাযের শুরুতে سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُك পড়া হয়। কেউ কেউ বলেছেন যে, নিদ্রা হতে জাগ্রত হয়ে দাঁড়ানো। এই সময়েও আল্লাহর তসবীহ ও প্রশংসা করা বিধেয় বা সুন্নত। আবার কেউ কেউ বলেছেন, কোন মজলিস থেকে উঠে দাঁড়ানো। যেমন হাদীসে এসেছে যে, যে ব্যক্তি কোন মজলিস থেকে উঠার সময় এই দু'আটি পাঠ করবে, তার জন্য তা ঐ মজলিসে কৃত পাপের কাফফারায় পরিণত হবে। দু'আটি হল। سبحانك اللهم وبحمدك، أشهد أن لا إله إلا أنت، أستغفرك وأتوب إليك । (তিরমিযীঃ দাওয়াত অধ্যায়)

وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَارَ النُّجُومِ

📘 এবং রাত্রিকালে[১] ও তারকারাজির অস্তগমনের পর[২] তার পবিত্রতা ঘোষণা কর। [১] এ থেকে 'কিয়ামুল লাইল' অর্থাৎ, তাহাজ্জুদের নামায বুঝানো হয়েছে। যে নামায নবী করীম (সাঃ) সারা জীবন পড়েছেন। [২] أيْ وَقْتَ إِدْبَارِهَا مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ (রাতের শেষ প্রহরে তারকারাজি অদৃশ্য হওয়ার সময়)। এ থেকে ফজরের দু' রাকআত সুন্নতকে বুঝানো হয়েছে। নফল নামাযের মধ্যে এই দু' রাকআত নামাযের প্রতি নবী করীম (সাঃ) সব চাইতে বেশী যত্ন নিতেন। আর একটি বর্ণনায় এসেছে যে, তিনি (সাঃ) বলেছেন, "ফজরের দু' রাকআত সুন্নত পৃথিবী ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও শ্রেয়।" (বুখারীঃ তাহাজ্জুদ অধ্যায়, মুসলিমঃ নামায অধ্যায়)

وَالسَّقْفِ الْمَرْفُوعِ

📘 শপথ সমুন্নত ছাদের, [১] [১] এ থেকে আকাশ বুঝানো হয়েছে যা পৃথিবীর জন্য ছাদস্বরূপ। কুরআনের অন্যত্র এটাকে 'সুরক্ষিত ছাদ' বলা হয়েছে। {وَجَعَلْنَا السَّمَآءَ سَقْفًا مَّحْفُوْظًا وَهُمْ عَنْ آيَتِهَا مُعْرِصُوْنَ} سورة الأنبياء ৩২ কেউ কেউ এ থেকে আরশ বুঝিয়েছেন। যা সমস্ত সৃষ্টিকুলের জন্য ছাদ।

وَالْبَحْرِ الْمَسْجُورِ

📘 শপথ উদ্বেলিত (প্রজ্বালিত) সমুদ্রের,[১] [১] مسجور এর অর্থ হল প্রজ্বালিত। কেউ কেউ বলেছেন, এ থেকে সেই পানি বুঝানো হয়েছে, যা আরশের নীচে অবস্থিত এবং যেখান থেকে কিয়ামতের দিন বৃষ্টিপাত হবে। আর এর দ্বারা মৃতদেহ সজীব হয়ে উঠবে। কেউ বলেছেন, এ থেকে সমুদ্র বুঝানো হয়েছে। এগুলোতে কিয়ামতের দিন অগ্নি প্রজ্বলিত হয়ে উঠবে। আল্লাহ বলেন, {وَإِذَا الْبِحَارُ سُجِّرَت} যখন সমুদ্রসমূহ প্রজ্বালিত হবে। ইমাম শাওকানী (রঃ) শেষোক্ত এই অর্থটিকেই সর্বাধিক সঠিক বলে গণ্য করেছেন। আবার কেউ কেউ مَسْجُوْرٌ এর অর্থ করেছেন, مَمْلُوْءٌ (পরিপূর্ণ)। অর্থাৎ, বর্তমানে সমুদ্রে আগুন নেই বটে, তবে তা পানিতে ভরে আছে। ইমাম ত্বাবারী (রঃ) এই অর্থকেই পছন্দ করেছেন। এর আরো কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। (দেখুন তাফসীর ইবনে কাসীর) (এ ছাড়া সমুদ্রের নিচে লাভা প্রজ্বালিত হয়ে থাকে। এই হিসাবেও সমুদ্র প্রজ্বালিত। -সম্পাদক )

إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَاقِعٌ

📘 তোমার প্রতিপালকের শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,

مَا لَهُ مِنْ دَافِعٍ

📘 এর নিবারণকারী কেউ নেই, [১] [১] এটা হল উল্লিখিত শপথসমূহের জওয়াব। অর্থাৎ, এই সমস্ত জিনিস যা মহান আল্লাহর বিশাল ক্ষমতার নিদর্শন, এ কথা প্রমাণ করে যে, আল্লাহর সেই আযাব অবশ্যই সংঘটিত হবে, যার তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তা কেউ রোধ করার কোন ক্ষমতা রাখে না।

يَوْمَ تَمُورُ السَّمَاءُ مَوْرًا

📘 যেদিন আকাশ আন্দোলিত হবে প্রবলভাবে। [১] [১] مور এর অর্থ হল আন্দোলন ও অস্থিরতা। অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন আকাশের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মধ্যে যে বিশৃঙ্খলতা এবং মহাশূন্যে ভ্রাম্যমান তারকারগুলোর ঝরে ও খসে পড়ার কারণে যে অস্থিরতার সৃষ্টি হবে, সেটাকেই বুঝানো হয়েছে এই শব্দগুলোর মাধ্যমে। আর (যেদিন) হল উল্লিখিত আযাবের 'যার্ফ' বা ঘটনকাল (ক্রিয়াবিশেষণ)। অর্থাৎ, এই শাস্তি সংঘটিত হবে সেই দিন, যেদিন আকাশ আন্দোলিত হবে এবং পর্বতমালা স্বীয় স্থান ছেড়ে ধূনিত তুলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের ন্যায় এবং ধূলিকণার ন্যায় উড়তে থাকবে।